বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: বর্তমান সরকারকে রূপকথার রাক্ষসের সঙ্গে তুলনা করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। বলেছেন, ‘রাক্ষস যেমন মানুষ খায়, এই সরকার, এই সরকারের লোকজন তেমনি মানুষ খেয়ে ফেলছে। এই সমস্ত ঘটনার কোন রকম বিচার পাচ্ছে না।’
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে এক আলোচনায় বক্তব্য রাখছিলেন মান্না। ‘গুম হওয়ার পাঁচ বছর শেষ আর অপেক্ষা কতদিন’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘গুম হওয়া পরিবারদের’ সংগঠন ‘মায়ের ডাক’।
ঐক্যফ্রন্ট নেতা বলেন, ‘যতদিন পর্যন্ত এরা (সরকার) ক্ষমতায় আছে, ততদিন পর্যন্ত আপনারা কোনও বিচার পাবেন না। অতএব লড়াই একটাই, এদের কবল থেকে মুক্তি চাই। তাহলে পরে আমরা স্বজনদের ফিরে পাব, এদের কাছ থেকে পাবেন না।’
‘আপনারা দেখছেন নির্বাচনের নামে সরকার কী কী করছে। যারা এই নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছে তাদের গ্রেপ্তার করছে, তারা গুম হয়ে যাচ্ছে, মামলা দেওয়া হচ্ছে একটার পর একটা। এমনকি এরকম পর্যন্ত হয়েছ, যেখানে ঘটনা ঘটেছে সেখানে তার কোনও অস্তিত্ব নেই, তবুও মামলা হচ্ছে।’
কাউকে না কাঁদতে পরামর্শ দিয়ে মান্না বলেন, ‘কেঁদে কী হবে, এই কান্নায় কারও কোল ভিজবে না। যারা ক্ষমতায় আছেন, যারা কিছু করতে পারেন আপনাদের জন্য, যারা দায়িত্বে আছেন, তারা সবাই দায়িত্বজ্ঞানহীন। কোনও মানুষের জন্য তাদের কোনও দয়া নেই, দরদ নেই।’
‘এখন কাজ একটাই, এদের (সরকার) ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে হবে, ভোটের মাধ্যমে পরাজিত করতে হবে। আর সেটার জন্য আপনারা নিজ-নিজ এলাকায় যান, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়স্বজন যাকে পান, তাকেই বলেন সামনের নির্বাচনে এদেরকে জবাব দিতে চাই।’
‘যদি গুমের বিচার চান, তাহলে ভোটের লড়াই করতে হবে। আপনাদের চোখের পানিকে বারুদে পরিণত করেন। সামনে ভোটের মাধ্যমে লড়াই করে সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে।’
ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল গুমের বিষয়ে স্বজনদের বিচার চাইতে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেন। বলেন, ‘গুম হচ্ছে সবচেয়ে জঘন্য অপরাধ। এটা খুনের থেকেও জঘন্য। পৃথিবীর বিভিন্ন আইনে যে সংজ্ঞা দেয়া আছে, সেখানেও এটাকে চরম জঘন্য অপরাধ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা আছে।’
‘দেশে যতগুলো গুমের ঘটনা ঘটেছে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শিকার হয়েছেন সরকারবিরোধী রাজনীতি যারা করেন। কাজেই আমাদের ভাববার কারণ হচ্ছে, গুম হয়েছে পরিকল্পিতভাবে এবং সংখ্যার দিক থেকেও এটা ব্যাপক।’
আলোচনায় অংশ নেন বাসদের নেতা খালেকুজ্জামানও। বলেন, ‘তারা (সরকার) কী নির্বাচন করবে যারা মানুষদের গুম করে ফেলে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- চালায়? এসব দিয়ে কি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে? বেআইনি কাজ চালিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠান করা যায় না। ফলে এ নির্বাচনের মধ্যদিয়ে গণতন্ত্র বা মানুষের অধিকার ফিরে আসবে না।’
পাঁচ বছর আগে গুমের শিকার সুমনের মা হাজেরা বেগমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির নির্বাহী কমিটর সদস্য তাবিথ আওয়াল, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি প্রমুখ। সূত্র: ঢাকাটাইমস।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস