বাংলা৭১নিউজ, পটুয়াখালী প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর বাউফলে বয়স্ক ও বিধবা ভাতা পেতে সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সুবিধাভোগীরা। ব্যাংকে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত একটানা বসে থেকেও মিলছে না ভাতার টাকা।
বর্তমানে বাউফল উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় মোট ৮৭৬১ জন বয়স্কভাতা এবং ৪২৬৩ জন নারী বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তা ভাতা পাচ্ছেন। উপজেলার সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে প্রত্যেককে ৩ মাস অন্তর ভাতা প্রদান করা হয়। বয়সের ভারে ন্যুব্জ মানুষগুলো কিভাবে ভাতার জন্য অপেক্ষা করছে।
রোববার বেলা ৩টায় কৃষি ব্যাংকের বাউফল শাখা পরিদর্শনকালে দেখা যায়, ক্লান্ত শরীরে সিঁড়ির ধাপে ভাতার অপেক্ষায় বসে আছেন দাসপাড়া ইউনিয়নের খেজুরবাড়িয়া গ্রামের মৃত্যু কালু গাজীর স্ত্রী ফুলবানু (৭০)। বয়সের ভারে ন্যুব্জ ফুল বানু বলেন, লাডি (লাঠি) ছাড়া চলতে পারি না, হেই ব্যানে (সকালে) পোলায় আমারে লইয়া আইছে। বেইল (বেলা) শেষ হইয়া যাইতে আছে, এ্যাহন তামাইত (পর্যন্ত) ভাতার টাহা (টাকা) পাই নাই। একই ইউনিয়নের চরআলগী গ্রামের বৃদ্ধ রোশনে আলী সরদার বলেন, প্রায় ১২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ব্যাংকে এসে দাঁড়িয়ে আছি।
অথচ এখন পর্যন্ত ভাতার টাকা পাইনি। ওই গ্রামের নুরু গাজীর বৃদ্ধ স্ত্রী আছিয়া বেগম বলেন, মাত্র ৫০০ টাকা ভাতার জন্য দল বেঁধে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত একটানা বসে থাকতে হচ্ছে। বৃদ্ধ মানুষের জন্য এটা খুবই কষ্টকর বিষয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সুবিধাভোগী বলেন, মাঝে মধ্যে দ্রুত ভাতার টাকা পেতে দালালের মাধ্যমে ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়।
হালিমা বেগম ও লাল বিবি জানান, সরকার প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মেসেজ পাঠিয়ে উপবৃত্তির টাকা দেয়। আমাদের ক্ষেত্রেও এই সুযোগ দিলে বৃদ্ধ মানুষগুলো কষ্ট থেকে রেহাই পেত। তবে কৃষি ব্যাংক বাউফল শাখার ব্যবস্থাপক এএইচএম আলতাফ হোসেন বলেন, ব্যাংকের সঙ্গে জড়িত কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে ঘুষ বা টাকা নেয় না।
এ প্রসঙ্গে বাউফলের উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, আমাদের অনলাইন ডাটাবেজ এর কাজ চলছে। কাজ শেষ হওয়ার পর থেকে সুবিধাভোগীরা মুঠোফোনে ভাতা পেয়ে যাবেন। এরপর তাদের আর কোন হয়রানী হবে না।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস