শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৫:২১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
দ্বাদশ সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী-মন্ত্রীদের জন্য ৯৪০ প্রশ্ন ভরিতে আরও ১৮৭৮ টাকা কমলো সোনার দাম সব প্রার্থী আমাদের কাছে সমান: ইসি আলমগীর টোল আদায়ে দুর্নীতি, দুদকের হস্তক্ষেপে ইজারা বাতিল রোহিঙ্গাদের ফেরাতে বাংলাদেশের পাশে আছে ইউরোপ : পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করেই আ.লীগ ক্ষমতায় এসেছে : কাদের এপ্রিলে নির্যাতনের শিকার ১৯৩ নারী-শিশুকন্যা ৯ মে পর্যন্ত চলবে সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ মৃত ব্যক্তিদের জাল সনদ: মিল্টন সমাদ্দারের ৩ দিনের রিমান্ড গণমাধ্যম শুধু মুক্ত নয়, উন্মুক্ত : তথ্য প্রতিমন্ত্রী যাত্রীবাহী বাস থেকে ৭টি স্বর্ণের বারসহ চোরকারবারি আটক আমন মৌসুম থেকেই চাল ছাঁটাই ও পলিশ বন্ধ করা হবে : খাদ্যমন্ত্রী টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ ১০ বাংলাদেশি জেলেকে অপহরণের অভিযোগ আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে শনিবার থেকে খোলা স্কুল-কলেজ: শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইসলামী ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রা জমা বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১২ কেজি এলপিজির দাম কমলো ৪৯ টাকা শেয়ার ছাড়বে রূপালী ব্যাংক নীলফামারীতে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু

শিবালয়ে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠনের শিক্ষকদের বেতন ভাতা বন্ধ, নেই ঈদের আনন্দ

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ২০ জুন, ২০১৭
  • ৮৭ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,জাহাঙ্গীর ভূইয়া, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জের শিবালয়ে দু’টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠনের শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বন্ধ, নেই ঈদের আনন্দ। পরিচালনা পরিষদ না থাকায়, আভ্যান্তরীণ কোন্দল ও শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে বেতন আদায় করতে না পারায় ‘শিবালয় সদর উদ্দিন ডিগ্রী কলেজ ও অক্সফোর্ড একাডেমী’র শিক্ষক-কর্মচারিরা দীর্ঘদিন ধরে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। ফলে পরিবারÑপরিজন নিয়ে অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে জীবন যাপন করছেন তারা। এ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃর্ষ্টি আকর্ষন করে, ঈদের পূর্বেই বেতন ভাতার দাবি জানিয়েছেন ওই দু’টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারিরা।
অভিযোগে প্রকাশ, জেলার শিবালয় উপজেলার ঐতিহ্যবাহী আরিচা ঘাট সংলগ্ন ‘শিবালয় সদর উদ্দিন ডিগ্রী কলেজ’ ও ‘অক্সফোর্ড একাডেমী’ উপজেলার মধ্যে সুনামধন্য দু’টি বিদ্যাপিট। এ দু’টি প্রতিষ্ঠানে ১শ’ ১৫জন শিক্ষকÑকর্মচারি এবং প্রায় ৩হাজার ৭শ ১৬জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষকরা জানান, ‘শিবালয় সদর উদ্দিন ডিগ্রী কলেজ’ শিক্ষকদের আপ্রান চেষ্টায় জেলার মধ্যে শ্রেষ্ট কলেজ হিসেবে সুনাম অর্জন করেছে। ভবনসহ অবকাঠামোরও বেশ উন্নয়ন হয়েছে। অধ্যক্ষসহ ৭৫জন শিক্ষক-কর্মচারি রয়েছেন। এর মধ্যে এমপিও ভুক্ত ১৪জন বাকী ৪৯জন ননএমপিওভুক্ত শিক্ষক। ১২ জন কর্মচারির মধ্যে এমপিওভুক্ত ৬জন। ননএপিভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারিরা কলেজের আয় থেকে বেতন-ভাতা পেয়ে থাকেন। এ কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি), বিএ(পাস কোর্স) ও অর্নাসে মোট ২হাজার ৩শ’ ৬৬জন শিক্ষার্থী রয়েছে।এদের সকলের নিকট থেকে একই হারে ভর্তি ফি বাবদ ৩হাজার ৫শ’ সেশন ফি ২হাজার এবং মাসিক বেতন ২শ’ ৫০টাকা হারে আদায় করা হয়ে থাকে।
এক হিসেবে দেখা গেছে এক বছরে প্রায় ১কোটি ৩৫লাখ ৩১হাজার টাকা আদায় হয়। এর মধ্যে অনেকে ঠিকমত টাকা দেয়না, হাফ ফি, ফুল ফি বাদে যদি ৫০% টাকাও আদায় করা হয়, তাহলে টাকার অংক দাড়ায় প্রায় ৭০লাখ। এছাড়া উপবৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি তো রয়েছেই। শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে ভর্তি, সেশন ফিসহ, মাসিক বেতন ও বিভিন্ন পরীক্ষার ফি বাবদ মোটা অংকের টাকা আদায় হলেও, ২০১৬ সালের নভেম্বর মাস থেকে গত ৭মাস ধরে কলেজ থেকে বেতন পাচ্ছেন না শিক্ষকরা। এমপিওভুক্ত শিক্ষকÑকর্মচারিরা শুধু সরকার থেকে দেয়া বেতন পেলেও, কালেজ থেকে কোন বেতন পাচ্ছেন না তারা। বিনা বেতনে মাসের পর মাস শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন ননএমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারিরা। তাদের প্রশ্ন কলেজের শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে আদায়কৃত টাকা যাচ্ছে কোথায়? উল্লেখ্য,পরিচালনা পরিষদ না থাকায় এডহক কমিটি দিয়ে চলছে কলেজটি। এছাড়া ১৯৯২ সালে কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত কলেজ পরিচালনা পরিষদ গঠনের জন্য কোন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। কলেজ অধ্যক্ষ নির্বাচনের আভাস পেলেই তা স্থগিত করে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এব্যাপারে কলেজ অধ্যক্ষ ড.বাসুদেব কুমার দে শিকদার শিক্ষকদেরকে বেতন না দেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আগামীতে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে ভর্তি ও সেশন ফি নিয়ে তাদের বেতনÑভাতা দেয়া হবে। কলেজ এডহক কমিটি’র সভাপতি শিবালয় উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী আকবর জানান, শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে মাসিক বেতনাদি নিয়মিত আদায় করতে না পারায় শিক্ষকদের বেতন দেয়া সম্ভব হয়নি।
এদিকে একই উপজেলায় সুনামধন্য অপর বিদ্যাপিট ‘অক্সফোড একাডেমী। এ বিদ্যালয়ে প্লেÑগ্রুপ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১৩শ’ শিক্ষার্থী’র জন্য রয়েছে ৩৫জন শিক্ষক ও ৫জন কর্মচারী। এর মধ্যে ৬জন শিক্ষক, ২জন কর্মচারি এমপিওভুক্ত। বাকী ২৯জন শিক্ষক, ৩জন কর্মচারি ননএমপিওভুক্ত। শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে মাসিক বেতন, পরীক্ষার ফিসহ আদায়কৃত টাকা নিয়মানুযায়ী ব্যাংকে জমা হচ্ছে। কিন্তুু বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদ না থাকায় এবং আভ্যান্তরিণ কোন্দলের কারণে এমপিও এবং ননএমপিওভুক্ত সকল শিক্ষক-কর্মচারিরা গত ৪মাস ধরে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। দ্রুত বিদ্যালয়ের অভ্যান্তরিন কোন্দল মিটিয়ে, ঈদের পূর্বেই বেতন-ভাতার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক-কর্মচারিরা। বেতন না পেলে বঞ্চিত হবেন ঈদের আনন্দ থেকে। এব্যাপারে তারা মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি লিখিত আবেদন করেছেন।
উল্লেক্ষ্য, ২০১৪ সালের ১০ মার্চ ম্যানেজিং কমিটি কর্তৃক একাডেমীর প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিন অর্থ আত্মসাৎ ও স্বেচ্ছাচারিতার দায়ে সাময়িকভাবে বরখাস্ত হন। ওই মাসের ১৪ তারিখে কমিটি’র মেয়াদ শেষ হওয়ায় কমিটি তাকে পুনর্বহাল বা স্থায়ী বরখাস্ত করতে পারেনি। এমতাবস্থায় কমিটি রেজুলেশনের মাধ্যমে আফজাল হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি’র যৌথ স্বাক্ষরে ব্যাংক হিসাব পরিচালিত হতে থাকে।
দীর্ঘ দিনেও এডহক কমিটি গঠণ করতে না পারায় ২০১৫ সালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ব্যাংকে আবেদন করে একাডেমীর ব্যাংক হিসাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারে নাম অন্তভুক্ত করেন। এরপর থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের যৌথ স্বাক্ষরে ব্যাংক হিসাব পরিচালিত হতে থাকে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামাল মোহাম্মদ রাশেদ আকস্মিকভাবে গত ১৯ জানুয়ারী সাময়িক বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল মতিন খানকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে পূনর্বহল করেন। তাদের দু’জনের স্বাক্ষরে জানুয়ারী মাসের বেতন-ভাতা উত্তোলন করলে তাহা সর্বশেষ ম্যানেজিং কমিটি’র সদস্যদের দৃষ্টিগোচর হয়।
এ পরিস্থিতিতে ম্যানেজিং কমিটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক সাময়িক বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষককে পদায়ন বিধি সন্মত হয়নি মর্মে ব্যাংক ম্যানেজারকে অবহিত করা হয়। এতে ম্যানেজার গত ফেব্রুয়ারী মাস থেকে তাদের স্বাক্ষরে শিক্ষকদের বেতনÑভাতা উত্তোলন বন্ধ করে দেন। অতিদ্রুত এ সমস্যার সমাধান করে ঈদের পূর্বেইবেতনÑভাতা প্রদানের জোর দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক-কর্মচারিরা। এব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন তারা।
শিবালয় উপজেলা শিক্ষক সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক ও অক্সফোর্ড একাডেমীর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসেন জানান, গত ফেব্রুয়ারী মাস থেকে বেতন-ভাত বন্ধ থাকায় একাডেমী’র শিক্ষক-কর্মচারীগণ মানবেতর জীবন-যাপন করছে। ঈদের পূর্বে শিক্ষকÑকর্মচারিদের বেতনÑভাতা প্রাপ্তির জন্য গত ১১ জুন জেলা প্রশাসক বরাবরে একাডেমীর সকল শিক্ষকÑকর্মচারিদের স্বাক্ষর সম্বলিত একটি আবেদন করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, গত ১৪ এপ্রিল ২০১৭ ইং তারিখে বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি গঠনের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকা বরাবরা আবেদন করা হয়। বোর্ড গত ৩০ এপ্রিল আমাকে এডহক কমিটি গঠনের অনুমতি দেন। সে মোতাবেক গত ২ মে অভিভাবক প্রতিনিধি মনোনয়নের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করা হয়। তিনি অদ্যাবধি অভিভাবক প্রতিনিধি মনোয়ন দেননি। ফলে কমিটি গঠণে বিলম্ব হচ্ছে। বেতনাদিও উত্তোলন করাও সম্ভব হচ্ছে না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামাল মোহাম্মদ রাশেদ জানান, একটি স্কুলে দু’জন প্রধান শিক্ষক থাকতে পারে না। আফজাল হোসেন এখন আর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নয়। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হচ্ছেন আব্দুল মতিন। তার সাথেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরের চিঠিপত্র আদান-প্রদান করে থাকে। যে কারণে আফজাল হোসেনের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রতিনিধি মনোয়ন দেয়া সম্ভব নয়।

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com