শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ১১:৩৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
টানা ৮ দফা কমার পর ফের বাড়লো সোনার দাম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সরকারের পাতানো ফাঁদ: আব্বাস আশুগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২ ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ এবি ব্যাংকের লভ্যাংশ ঘোষণা রূপালী ব্যাংকের ঢাকা উত্তর বিভাগীয় ব্যবসায়িক সম্মেলন অনুষ্ঠিত রোববার দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা স্বাধীন ফিলিস্তিন ইস্যুতে সমাবেশের ডাক ছাত্রলীগের ৮ মের উপজেলা নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে যে নির্দেশনা দিল ইসি ফের বাংলাদেশে আশ্রয় নিলো মিয়ানমারের ৪০ বিজিপি সদস্য ট্রেন সার্ভিসের মাধ্যমে রাজধানীর চাপ কমে আসবে: চিফ হুইপ মৌলভীবাজারে পুলিশের বাধায় ছাত্রদলের মিছিল পণ্ড প্রেমের ফাঁদে ফেলে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা আদায়, গ্রেফতার ৭ পদ্মা-মেঘনায় মিলছে না ইলিশ, হতাশ জেলেরা ‘উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব খাটালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’ উত্তরায় লেক থেকে দুই স্কুল শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার রাশিয়ার সাথে সম্ভাব্য সংঘাতের প্রস্তুতি নিচ্ছে ন্যাটো : মস্কো খিলগাঁওয়ে রিকশাচালকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার ১৪ দিন পর ডেঙ্গুতে শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যু হাসপাতালের ভবনের ফাঁক দিয়ে পড়ে রোগীর মৃত্যু রোববার থেকে আপিল বিভাগের দুটি বেঞ্চে চলবে বিচারকাজ

যেভাবে হত্যা করা হয় ওয়াসিমকে

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় সোমবার, ২৫ মার্চ, ২০১৯
  • ৬১ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: আউশকান্দির টোলপ্লাজা থেকে উদার পরিবহনের বাসে উঠেন নিহত ওয়াসিম আব্বাস ও তার ১০ সহপাঠী। তারা সবাই বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ করে সিলেটে ফিরছিলেন। বাসে ওঠার পর হেলপার মাসুক তাদের প্রত্যেকের কাছে ১০০ টাকা ভাড়া চায়। এতে আপত্তি তোলেন ওয়াসিম। ভাড়া তো এত নয়, বেশি চাচ্ছেন কেনো- এ প্রশ্ন করেন ওয়াসিম। এ নিয়ে বাসের হেলপারের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়। এরই মধ্যে উদার পরিবহনের ওই বাস শেরপুর পৌঁছে যায়। ভাড়া নিয়ে বিতর্ক শুরু হওয়ায় বাস থেকে নেমে যান ওয়াসিম ও তার সহপাঠীরা।

সবার শেষে নামেন ওয়াসিম ও তার বন্ধু রাকিব হাসান। এমন সময় হেলপার ওয়াসিম ও তার বন্ধুদের নিয়ে কটূক্তি করে। বলে- ‘বাসে ওঠার  যোগ্যতা নেই, কম ভাড়া দেয়।’ এ কথা শুনেই শেরপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে দাঁড়ানো বাসে উঠেন ওয়াসিম ও তার বন্ধু রাকিব। তারা উঠতেই চালক জুয়েল মিয়া বাসের স্পিড বাড়িয়ে দেয়। কটূক্তি কেনো করা হলো- এ নিয়ে ফের তর্ক বাধলে ওই সময় হেলপার মাসুক ধাক্কা দেয় ওয়াসিম ও তার বন্ধুকে। হেলপারের ধাক্কায় রাকিব ছিটকে রাস্তার উপর পড়ে। আর ওয়াসিম পড়ে যাওয়ার আগেই বাসের হাতল ধরে ফেলে। এ সময় হেলপার দরোজা বন্ধ করে দিলে অসহায় হয়ে পড়েন ওয়াসিম।

দ্রুতগতির বাসের ঝাঁকুনিতে এক সময় সে চাকার নিচে পিষ্ট হয়। এতেই গুরুতর আহত হয়ে পড়ে। তার দুই পায়ের উপর দিয়ে প্রথমে বাসের সামনের চাকা এবং পরে পেছনের চাকা উঠে যায়। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসার পথেই মৃত্যু হয় ওয়াসিমের। এমন ঘটনা এখনো ভুলতে পারছেন না ওয়াসিমের সঙ্গে থাকা সহপাঠীরা। চোখের সামনেই তারা ওয়াসিমের মৃত্যু দেখেছেন। আর এই মৃত্যু নিছক কোনো দুর্ঘটনা ছিল না বলে দাবি করেন তারা। ওয়াসিমের সঙ্গে আহত হওয়া রাকিব হাসান দুর্ঘটনার সময়ের কথা স্মরণ হলেই আঁতকে উঠেন। বলেন- হেলপার আমাকে ও ওয়াসিমকে ধাক্কা দেয়। আমি ছিটকে রাস্তায় পড়ে গেলেও ওয়াসিম হাতলে আটকে যায়। পরে সেখান থেকে চাকার নিচে পড়ে গুরুতর আহত হয়। রাকিব জানান, ‘আমরা মোট ১১ জন ছিলাম। সবাই বাস থেকে নেমে যাওয়ার পর ওয়াসিম নামে। পেছন থেকে কটূক্তি করে বাসের হেলপার ও সুপারভাইজার। এই কটূক্তি শুনেই আমরা বাসে উঠি।

এরপর বাসের স্পিড বাড়িয়ে দিলে এই দুর্ঘটনা ঘটে।’ রাকিব বলেন, ‘আমি ভাগ্যের  জোরে বেঁচে গেছি। আর ওয়াসিম নিহত হলো। আমি যখন পড়ে যাই এর একটু পরেই দেখি ওয়াসিম চাকার নিচে পিষ্ট হচ্ছে।’ ওয়াসিমের সঙ্গে থাকা আরেক প্রত্যক্ষদর্শী রঞ্জন ঘোষ জানিয়েছেন, প্রতিবাদ করতে বাসের গেটে ওঠার পরই চালক বলে ‘এদেরকে বাঁধ’। এ কথা বলার পর বাসের গতিও আস্তে আস্তে বাড়াতে থাকে। এরপর ভেতর থেকে আমাদের ধাক্কা দেয়া হয়। দু’জনকে আলাদাভাবে ধাক্কা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন- ‘পড়ে যাওয়ার পরও ওয়াসিম বাঁচতে চেষ্টা করে। কিন্তু বাস স্পিড বাড়িয়ে টার্ন নেয়ার কারণে বাসের  পেছনের চাকার নিচে পড়ে সে।

এদিকে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) ছাত্র ওয়াসিম আব্বাসকে বাসচাপায় হত্যার ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন উদার পরিবহনের চালক ও হেলপার। শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উদার পরিবহনের বাসচালক জুয়েল আহমদ ও রাত ২টার দিকে হেলপার মাসুককে পৃথক স্থান থেকে আটক করে  মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশ। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনা স্বীকার করেছেন।

মৌলভীবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ারুল হক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বিকালে নবীগঞ্জের  টোলপ্লাজা থেকে সিলেট যাওয়ার উদ্দেশে উদার পরিবহনের বাসে ওঠেন সিকৃবির কয়েকজন ছাত্র। এ সময় হেলপার মাসুক মিয়া তাদের কাছে ১০০ টাকা ভাড়া দাবি করে। এতে ওয়াসিম ও তার বন্ধুরা ছাত্র পরিচয় দিয়ে ভাড়া কম দেয়ার কথা জানান। এতে হেলপার ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান। এক পর্যায়ে তারা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শেরপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে নেমে যান। নামার সময় পেছন থেকে হেলপার তাদের গালি  দেন। এতে ওয়াসিম বাসের সিঁড়িতে উঠে হাতল ধরে কেন গালি দিলেন তা জিজ্ঞেস করতেই চালক গাড়ির গতি বাড়িয়ে দেয়। ঠিক তখনই হেলপার মাসুক মিয়া ওয়াসিমকে ধাক্কা দিয়ে নিচে  ফেলে দেয়। সঙ্গে সঙ্গে বাসের পেছনের চাকায় পিষ্ট হয়ে ওয়াসিম গুরুতর আহত হন।

বাংলা৭১নিউজ/এমআদ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com