বাংলা৭১নিউজ, নাটোর প্রতিনিধি: মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান ওরফে দেলচান, ১৯৭৫ সালে বাড়ি থেকে বের হন আর ফিরে আসেননি। ১৯৭১ সালে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন দেলচান। ৭ নং সেক্টরে সহযোদ্ধা আনছার আলীসহ অন্যদের সাথে নওগাঁর রানীনগরসহ বিভিন্ন স্থানে অংশ নেন। নাজিরপুর ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধা সহকর্মীদের সাথে স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা এই পরিবার আজ অসহায়। তার স্ত্রী চিকিৎসার অভাবে ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন। সরকারী কোন সুযোগ সুবিধা তারা পায় না। স্বামী ১৯৭৫ সালে মারা গেলে ও দেলচানের স্ত্রী পায়নি বয়স্ক ভাতা কিংবা বিধবা ভাতা। নেই এক খন্ড জমি। আত্রাই নদীর পাউবো ৫ শতক জায়গায় কোন রকম মাথা গোজার ঠাই হয়েছে। সেখানে বসবাস করেন দেলচানের স্ত্রী, একমাত্র মেয়ে নাদিরা এবং তাঁর ছেলে, ছেলে বউ ও দু’নাতি। দেলচানের একমাত্র মেয়ে নাদিরা বেগম। বাবার মৃত্যুর পর তাঁর বিয়ে হয় মহিষমারি গ্রামে। স্বামী খলিল প্রাং, সেও দিনমজুর ছিলো। ৫ বছর আগে অসুস্থতায় মারা যায়। বাবা ও স্বামীর মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরার তাগিদে নাদিরা জীবিকার প্রয়োজনে দিনমজুরের কাজ করতে থাকেন। নাদিরার কপালেও জুটেনি সরকারী কোন ভাতা।
নাদিরার সংসারে ছিলো দু’ছেলে, একজন আলাদা। একমাত্র পরিবারের পুরুষ সদস্য নাদিরার ছেলে ইয়ারব, সে ভ্যান চালক। তাঁর উপার্জনে চলে পুরো সংসার। একদিকে বাবার অকালে চলে যাওয়া, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি না পাওয়া, অপরদিকে নিজের স্বামী মারা গিয়ে সর্বশান্ত এই পরিবার।
সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাচাইয়ে নাদিরার বাবা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান ওরফে দেলচানের নাম চূড়ান্ত তালিকায় রয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়নি। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল ওদুদু দুদু জানান, তারা খুব অসহায় পরিবার। এ পরিবার কোন ভাতা পায় না, খুব দুঃখজনক। তবে চূড়ান্ত তালিকায় আব্দুর রহমান ওরফে দেলচান নাম রয়েছে তারা ভাতাভোগী হলে অন্তত তাঁর স্ত্রীর চিকিৎসার খরচ চলবে। এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) বিপুল কুমার সরকার জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস