বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: উচ্চ আশাবাদের ভর করে আগামী অর্থবছরের জন্য যে বিশাল বাজেট অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত দিয়েছেন, তা বাস্তবায়নে নিশ্চয়তার ঘাটতি দেখছে বিশ্ব ব্যাংক।
২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব ব্যাংক ঢাকা অফিসের প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন এই প্রতিক্রিয়া জানান।
এক কথায় বাজেট নিয়ে তার মূল্যায়ন: “লং অন হোপ, শর্ট অন অ্যাসিউর্যান্স (আশাবাদে উচ্চ, কিন্তু নিশ্চয়তায় খাটো)।”
বিশ্ব ব্যাংকের এই অর্থনীতিবিদ বলেন, “বাজেটে অনেক লক্ষ্যই বাস্তবতার নিরিখে নয়, আশার ওপর ভর করে ঠিক হয়েছে। আয়-ব্যয়ের হিসাব নিয়ে কোনো চমক নেই, গতানুগতিক। আর আয়ের লক্ষ্য বেশ চ্যালেঞ্জিং।”
আসছে অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ কোটি ২৬৬ কোটি টাকা আয়-ব্যয়ের ফর্দ ধরে তৈরি এই বাজেট ১ জুন জাতীয় সংসদে পেশ করেন অর্থমন্ত্রী।
ব্যবসায়ীদের আপত্তির মুখেও আইন অনুযায়ী অভিন্ন ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট আরোপের পরিকল্পনায় ভর দিয়ে রাজস্ব আয়ের বিশাল লক্ষ্য অর্জন নিয়ে এর মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে।
১ জুন সংসদে বাজেট উপস্থাপনের পর থেকে ১৫ শতাংশ ভ্যাটের অভিন্ন হারের বিরোধিতা করে সাংসদ ও মন্ত্রীরা বক্তব্য দিচ্ছেন। ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন মহল থেকেও ভ্যাটের আগের হার বহাল রাখার দাবি জানানো হচ্ছে।
এর মধ্যে মঙ্গলবার ভ্যাট নিয়ে সাংবাদিকরা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা জানতে চাইলে মুহিত বলেন, ২৮ জুন প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে কথা বলবেন। তার আগে কোনো কিছু জানানোর নেই।
তবে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর করা ছাড়া এই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয় সম্ভব নয় বলেই মনে করেন অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন।
“রাজস্ব আদায় বাড়ানোর জন্য নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বড় বাজেট, বড় আয়ের লক্ষ্য।”
নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের ফলে বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়বে কি না- এ প্রশ্নের উত্তরে জাহিদ হোসেন বলেন, “চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, ওষুধসহ বেশ কয়েকটি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবায় ভ্যাট নেই। ৩৬ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যবসার টার্নওভাবে ভ্যাট মূক্ত।
অর্থবছরে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যকে ‘স্বাস্থ্যকর’ বললেও তা অর্জন নিয়ে এই বিশ্বব্যাংক কর্মকর্তা সংশয় প্রকাশ করেন।
“প্রবৃদ্ধির বিমান অটো পাইলটিংয়ে চলবেনা। এই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য অবশ্যই বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। বর্তমানে যেভাবে চলছে সেভাবে হলে লক্ষ অর্জিত হবে না। সরকারি-বেসরকারি উভয় খাতেই বাড়াতে হবে।”
এজন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি অংশিদারিত্ব বিনিয়োগের (পিপিপি) দিকেও নজর দিতে পরামর্শ দেন এই অর্থনীতিবিদ।
চালের মূল্যবৃদ্ধির লাগাম টেনে ধরতে আমদানি বাড়ানোর মাধ্যমে সরবরাহ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, “চালের উচ্চমূল্যে সাধারণ মানুষের খুবই কষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে গরিব মানুষ বেশি বিপদে আছে। বাংলাদেশের বাস্তবতায় চালের দাম খুবই স্পর্শকাতর। এটাতে দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস