বাংলা৭১নিউজ, পটুয়াখালী প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর বাউফলে একটি ধর্ষণ মামলার ওয়ারেন্টকৃত আসামীকে পুলিশের গাড়ি থেকে থেকে ছিনিয়ে নিয়ে আনন্দ মিছিল করেন ইউপির চেয়ারম্যান শাহজাদা হাওলাদার ।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, নওমালা ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের মৃত কাদের হাওলাদারের ছেলে করিম হাওলাদারের বিরুদ্ধে পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাত বিশেষ ট্রাইব্যুনালে একটি ধর্ষণ মামলা বিচারাধিন রয়েছে। (মামলা নম্বর জিআর ১২৭/১৬ এবং সিআর মামলা নম্বর ৩১/১৭)।
এই মামলায় বিজ্ঞ আদালত গত ১৪ ফেব্রুয়ারি তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করেন। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বাউফল থানার এসআই মাইনুল মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) সন্ধ্যায় নওমালা গাজী বাড়ি সামনে থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ ভ্যানে করে থানায় নিয়ে আসার পথে মধ্য নওমালা সরকারী প্রাইমারী স্কুলের কাছে আসামীর কয়েক স্বজনরা পুলিশের ভ্যান ব্যারিকেট দিয়ে থামিয়ে গাড়ির চাবি নিয়ে যায়।
একপর্যায়ে তারা পুলিশের সাথে ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত হয়। খবর পেয়ে নওমালা ইউপির চেয়ারম্যান শাহজাদা হাওলাদার ঘটনাস্থলে এসে আসামী করিমকে ছিনিয়ে নেয়।
দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, এসময় ঘটনা স্থলের অদূরে একটি বিশেষ কাজে অবস্থান করছিলেন বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিজুস চন্দ্র দেয়। তিনি জটলা দেখে পুলিশের গাড়ির দিকে এগিয়ে যান। ততোক্ষনে ওই ইউপির চেয়ারম্যান ও স্বজনরা আসামী করিমকে নিয়ে নগরের হাটে চলে যান এবং সেখানে গিয়ে আনন্দ মিছিল করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েক ব্যাক্তি জানান, ঘটনার সময় পুলিশ কোন ধরণের প্রতিরোধ গড়ে তুলেনি। অভিযোগ রয়েছে, বাউফল থানার ওসি মোঃ মনিরুল ইসলামের সাথে ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাদা হাওলাদারের বিশেষ সখ্যতা থাকার কারণে পুলিশ বাধা দেয়নি এবং আইনগত কোন ব্যবস্থাও নেয়নি।
এ বাপারে বাউফল থানার ওসি মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, আমি বিষয়টি অবগত নই। তবে ওই আসামীর বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন তিনি।
বাউফল উপজেলা নির্বাহি অফিসার পিজুস চন্দ্র দে বলেন, নওমালা একটি ওয়ার্ডে (আজ বুধবার) ইউপি নির্বাচন থাকায়, তার আগের দিন কেন্দ্রে পাশে লোকজন জড়ো হতে দেখে আমি সে দিকে এগিয়ে যাই এবং পুলিশকে গিয়ে বলি দ্রুত ওই জমায়েত ভেঙ্গে দেয়ার জন্য । ওই জায়গায় কোনো আসামী ছিল কিনা আমার জানা নেই। নওমালা ইউনিয়নের চয়ারম্যান শাহজাদা হাওলাদার বলেন, ছয় মাস পূর্বে বাদী বিবাদী নিজেদের মধ্যে বিষয়টি আপোষ মিমাংসা করেছে। আদালত থেকে বাদি মামলা তুলে নিয়েছে এখানে পুলিশের কাছ থেকে আসামী ছাড়িয়ে নিয়ে উল্লাস করার বিষয়টি ভিত্তিহীন ।
মামলার বাদি ফরিদা বেগম বলেন, আমি ঢাকা আছি, চেয়ারম্যানের মাধ্যমে মামলাটি আপোষ মিমাংসা হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট নারী শিশু বিশেষ ট্রাইব্যুনালে খবর নিয়ে যানা গেছে, ধর্ষন মামলাটি বিচারাধিন রয়েছে। আসামী হাজির না হওয়ায় বিশেষ ট্রাইব্যুনাল থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি ওয়ারেন্ট জারি করা হয়েছে এবং আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর মামলার পরবতী হাজিরার দিন ধার্য্য রয়েছে। উল্লেখ এই মামলায় করিম হাওলাদার এছাড়াও মাসুম, জসিম ও মনির নামের আরও তিন আসামী রয়েছেন। তারা বর্তমানে পলাতক রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট রয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস