বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: রাজধনীর বনানীতে হোটেলে নিয়ে আবারও তরুণী ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এক তরুণী জানিয়েছেন, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে হোটেল সুইট ড্রিমে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করেছে সঙ্গীতশিল্পী আনুশেহ আনাদিলের ভাই কুশান ওমর সুফি। এ ঘটনায় ১৩ ডিসেম্বর কুশানের বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা করেছেন তিনি।
তরুণীর অভিযোগ, ‘২০ নভেম্বর এক রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়া শেষে কুশান আনুমানিক রাত ১২টা ২০ মিনিটে তাকে বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ’র হোটেল সুইট ড্রিমের ৮০৫ নম্বর কক্ষে নিয়ে যায়। প্রেমের সম্পর্ক থাকার কারণে কুশানের সঙ্গে যেতে তিনি আপত্তি করেননি। হোটেলে যাওয়ার পর বিয়ের কথা বলে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে চায়। বাধা দিলেও কুশান তাকে ধর্ষণ করে।’
তরুণী আরও জানান, ঘটনার পর বিয়ের বিষয়ে কথা বলতে কুশানের বাসায় গেলে তাকে মারধর করে কুশানের পরিবারের সদস্যরা। এ ঘটনায় থানায় জিডি করায় তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে। যে কোনো সময় কুশান দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা ওই তরুণীর।
এ বিষয়ে কুশান ওমর সুফির বাবা ব্যবসায়ী জামাল আহমেদ সুফি সোমবার রাতে বলেন, আমরা একটা চক্রান্তের শিকার হয়েছি। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে আমাদের দীর্ঘদিনের পারিবারিক সুনাম অনেকটাই ভূলুণ্ঠিত। আশা করছি, পুলিশ অচিরেই সত্য উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হবে। শিগগিরই আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে পুরো ঘটনা সংবাদমাদ্যমের সামনে তুলে ধরা হবে।
বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল মতিন বলেন, ‘ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য তরুণীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ পাসপাতালেও পাঠানো হয়। ওই রিপোর্ট এখনও হাতে পাইনি। মামলার আসামি এখন পলাতক। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’
মামলার এজাহারে তরুণী উল্লেখ করেন, ‘ঘটনার পরপরই বিষয়টি আমি পুলিশকে জানাই। তখন পুলিশ কুশানকে আটক করেছিল।
কিন্তু কুশানের পরিবারের লোকজন এসে বিষয়টি মীমাংসা করে। কুশান ওই সময় আমার কাছে ক্ষমা চায় এবং ২১ নভেম্বর বিয়ে করার আশ্বাস দেয়।
২১ নভেম্বর আমি কুশানের বাসায় গেলে তার বোন আনুশেহ আনাদিলসহ কয়েকজন আমাকে মারধর করে এবং হুমকি দিয়ে বাসা থেকে বের করে দেন। এসব ঘটনা জানিয়ে ২৩ নভেম্বর ক্যান্টনমেন্ট থানায় সাধারণ ডায়েরি করি (জিডি নং ৯৩৫)।’
সোমবার রাতে হোটেল সুইট ড্রিমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফয়সাল আল ইসলাম জানান, তাদের হোটেলে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ এসে সংশ্লিষ্ট ভিডিও ফুটেজ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
ওই ফুটেজ তিনি নিজেও দেখেছেন। এতে দেখা গেছে, ধর্ষণের অভিযোগকারী তরুণী হাস্যোজ্জ্বল ভঙ্গিতে তার ছেলে বন্ধুর সঙ্গে হোটেল কক্ষে ঢুকেছেন। সকালে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ও তারা উভয়ে হাস্যোজ্জ্বল ছিলেন।
উল্লেখ্য, এর আগে চলতি বছরের ২৮ মার্চ বনানীর ‘দ্য রেইন ট্রি’ হোটেলে জন্মদিনের পার্টিতে আমন্ত্রণ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ ও তার বন্ধু নাঈম আশরাফের বিরুদ্ধে।
ওই কাজে সহায়তা করেছিলেন আরও তিনজন। ৬ মে ভুক্তভোগী দুই তরুণী পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন।
বাংলা৭১নিউজ/সিএইস