বাংলা৭১নিউজ,মানিকগঞ্জ : যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীকে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার চালা গ্রামের নিজ বাড়িতে দাফন করা হয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে তিনটায় জানাজা শেষে মীর কাসেমকে দাফন করা হয়।এর আগে রাত পৌনে ৩টার দিকে তার লাশ কঠোর নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে। মীর কাসেমের ভাইয়ের মেয়ের জামাতা আবুল হাসান তার জানাজার ইমামতি করেন।
তার মরদেহ গ্রহণ করেন স্ত্রী খন্দকার আয়েশা খাতুন। এসময় তার দুই মেয়েসহ ৪০ জন স্বজন উপস্থিত ছিলেন। জানাজা শেষে মীর কাসেমের কেনা চালা গ্রামের ৫০ শতাংশ জমির ওপর নির্মিত মসজিদের উত্তর পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।
এদিকে ফজরের নামাজ শেষ হতে না হতেই জামায়াত ইসলামীর স্থানীয় নেতাকর্মীরা মীর কাসেম আলীর কবর জেয়ারত করতে আসেন। এ সময় কেউ কেউ কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এর আগে রাত সাড়ে ১২টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে কাশিমপুর কারাগার থেকে লাশ নিয়ে নিয়ে মানিকগঞ্জের পথে রওনা হয় আইনশৃঙ্কলা বাহিনী। গাড়ির বহরে প্রথমে চারটি পুলিশের গাড়ি, তারপর তিনটি অ্যাম্বুলেন্স এরপর দুটি র্যাবের গাড়ি, আবার তিনটি পুলিশের গাড়ি এবং শেষে ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়ি রয়েছে।
মীর কাসেম আলীর সঙ্গে শেষ সাক্ষাৎ করে কারাগার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় শনিবার সন্ধ্যায় তার স্ত্রী খন্দকার আয়েশা খাতুন সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন মীর কাসেমের দাফন মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে করা হবে।
জেলার হরিরামপুর উপজেলার চালা গ্রামে তার প্রতিষ্ঠিত মসজিদ প্রাঙ্গণে লেবু বাগানের পাশেই তাকে দাফন করতে কবর খুড়া হচ্ছে। এজন্য সন্ধ্যা থেকে ওই এলাকায় নিরাপত্তা জোর দার করা হয়।
একাত্তরে চট্টগ্রামে বাঙ্গালি খান হিসেবে পরিচিত মীর কাসেম আলীকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে রাত সাড়ে ১০টায় ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার সুতালরি ইউনিয়নের মুন্সীডাঙ্গি গ্রামে বাড়ি ছিল মীর কাসেম আলীর বাবা মৃত তৈয়ব আলীর। সেখানেই ১৯৫২ সালের ৩১ ডিসেম্বর জন্ম গ্রহণ করেন মীর কাসেম আলী ওরফে মিন্টু। তবে ওই গ্রাম অনেক আগেই পদ্মা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এরপর প্রায় ১৬ বছর আগে মীর কাসেম আলী হরিরামপুর উপজেলার চালা গ্রামে প্রায় ৫০ শতাংশ জমি কেনেন। সেখানে প্রতিষ্ঠা করেন মসজিদ। কিন্তু সেখানে কোনো বাড়িঘর করেননি। এই আসন থেকে তিনি চারদলীয় জোট থেকে নির্বাচন করতে চেয়ে ছিলেন। সেই সুবাদে এই এলাকায় তিনি প্রায় আসতেন। স্থানীয় জামায়াত নেতাদের সঙ্গে মসজিদে বসে মিটিং করতেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর সেখানে আর আসেননি তিনি।
বাংলা৭১নিউজ/সিএইস