বাংলা৭১নিউজ, ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার কাওলীবেড়া ইউনিয়নের শেখপুরা গ্রামের সরোয়ার মাতুববরের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে কনিকা আক্তার ভালবেসে পরিবারের অমতে বিয়ে করে স্বামীর অধিকার না পেয়ে এখন দ্বারে দ্বারে ধরনা দিচ্ছে।
জানা যায়, কলেজ পড়ুয়া ঐ তরুনী কলেজে পড়ার সময় একই কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক পাস করা উপজেলার পল্লিবেড়া গ্রামের শফিউদ্দিন মাতুব্বরের ছেলে আমানুর ইসলামের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরিবারের সদস্যরা তাদের বিয়েতে রাজি না হলে প্রেমিক তার কয়েক বন্ধুকে সাথে করে প্রেমিকাকে নিয়ে গত ৩ মার্চ অজ্ঞাত একটি কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে ও কাবিন করার নাটক করে। এরপর থেকে তারা স্বামী স্ত্রীর মত বিভিন্ন বন্ধু বান্ধব ও আত্মীয়ের বাড়িতে বসবাস করতে থাকে।
এক পর্যায়ে কনিকা তাকে তার শ্বশুর বাড়ি নিয়ে যেতে আমানুরকে চাপ প্রয়োগ করে। কিন্তু আমানুর কনিকাকে তার বাড়িতে না তুলে নিয়ে বিভিন্ন অযুহাতে তার সাথে প্রতারনা করতে থাকে এবং তাকে নিয়ে এবাড়ি-সেবাড়ি ঘুরতে থাকে। তবুও কনিকা স্ত্রীর অধিকার এবং তাকে শ্বশুর বাড়ীতে নেওয়ার জন্য আমানুরকে বারবার চাপ প্রয়োগ করতে থাকলে আমানুর তার সাথে নানা দূর্ব্যবহার, মারধর এবং প্রাননাশের হুমকি দেয়। কনিকাকে নিয়ে আমানুর তার কু-লালসা চরিতার্থ করার পর তার সাথে প্রতারনার আকস্মিকতায় সে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে। কিছুদিন পর কনিকা তার পিতার বাড়ীতে ফিরে যায়। পিতার বাড়ীতে আসার পরও আমানুর তার সাথে কিছুদিন যোগাযোগ রাখে। এক পর্যায়ে সে মোবাইল ফোন ও যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। বৃহস্পতিবার কনিকা আক্তার তার পিতার বাড়িতে সাংবাদিকদের সামনে এসব কথা বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে।
কনিকা আরো বলে, আমানুর যে এভাবে তার সাথে প্রতারনা করবে তা সে কল্পনাও করতে পারেনি। একই কলেজে পড়া সিনিয়র এবং পরে প্রেমিক ও ভালবাসার মানুষটির কথা সরল মনে সে বিশ^াস করে পরিবারের অমতে জনৈক কাজী অফিসে গিয়ে প্রেমিক আমানুরের বন্ধু জনৈক শামীম, করিম বাবু ও দ্বীপের উপস্থিতিতে তারা বিবাহ করে। কিন্তু মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে তার আসল রুপ বেরিয়ে পড়ে। সম্প্রতি সে তার কয়েকজন বন্ধু নিয়ে তার পিতার বাড়িতে গিয়ে তার সাথে কথা আছে বলে তাকে রাস্তায় ডেকে নেয় । এসময় তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে একটি কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এরপর থেকে আমানুর সম্পূর্ণভাবে তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
তরুনীটির নানা আঃ হক হাওলাদার বলেন, এ ঘটনা নিয়ে বেশ কয়েকবার পল্লীবেড়া গ্রামে আমানুরের বাড়ীতে স্থানীয় বাদল মাতুব্বর, হাসমত মিয়া, মতিন সরদার, রাজন হাওরাদারসহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতে এক শালিশ বৈঠক হলেও কোন সুরাহা হয়নি। সর্বশেষে কয়েকদিন আগে বাধ্য হয়ে মেয়ের পিতা ভাঙ্গা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত দুদু মিয়া বলেন, উভয় পরিবারের লোকজন আমার কাছে আসলে আমি তাদেরকে সামাজিকভাবে মীমাংসা করতে বলি, না হলে মেয়ে পক্ষকে আইনের আশ্রয় নিতে বলি।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গা থানার ওসি(তদন্ত) মেরাজ হোসেন বলেন, মেয়েটির পিতা ভাঙ্গা থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে পুলিশ তদন্ত করছে। আমরা জেনেছি ছেলে মেয়ে উভয়ে পরিনত বয়সের। তবে উভয় পরিবারে মধ্যে বিষয়টি নিয়ে পারিবারিকভাবে মীমাংসার চেষ্টা চলছে। গন্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে পারিবারিকবাবে বিষয়টির সমাধান না হলে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস