বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশি তেহরানে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। এ সাক্ষাতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ছাড়াও, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথাবার্তা হয়েছে। পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী তেহরান সফরের আগে কাবুলে আফগান কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ইরান সফর শেষে তিনি এখন চীন রয়েছে এবং এরপর রাশিয়ায় যাবেন বলে কথা রয়েছে।
ইরান সবসময়ই প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করে আসছে। এ কারণে পাকিস্তানের সঙ্গে আর্থ-রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিকসহ সব ক্ষেত্রে সম্পর্ক বিস্তারকে ইরান সবসময়ই অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে। পাকিস্তানের সঙ্গে সার্বিক সহযোগিতা আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোরদারেও ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে সম্প্রতি এ অঞ্চলে সন্ত্রাসী তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় এবং নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি হওয়ায় এ দু’দেশের সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা বহুগুণে বেড়েছে। এ বিষয়টি উপলব্ধি করে ইরান সন্ত্রাসীদেরকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য এ অঞ্চলের দেশগুলোকে উৎসাহিত করার চেষ্টা চালিয়ে আসছে।
পাকিস্তানের সঙ্গে ইরানের ৯০০ কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে পাকিস্তানের ভূখণ্ড ব্যবহার করে এ পর্যন্ত বহুবার ইরানে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলায় বহু ইরানি সীমান্তরক্ষী শহীদ হয়েছে এবং অনেককে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গত অক্টোবরে সন্ত্রাসীরা ইরানের ভেতরে ঢুকে বেশ ক’জন সীমান্তরক্ষীকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। একের পর এক এসব ঘটনা নিরাপত্তা ক্ষেত্রে ইরান ও পাকিস্তানের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর গুরুত্বকে বাড়িয়ে দিয়েছে।
ইরানের কর্মকর্তারা বিভিন্ন বৈঠকে পাকিস্তানের মাটিতে সন্ত্রাসীদের তৎপরতা বন্ধে এবং ইরানের বিরুদ্ধে হামলা ঠেকাতে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পাক কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, পশ্চিম এশিয়ায় অস্থিতিশীলতার কারণে উগ্র তাকফিরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর আবির্ভাব ঘটেছে। এসব গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা অব্যাহত থাকলে ইরান ও পাকিস্তানসহ আরো অন্যান্য দেশের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। এ অবস্থায় নিরাপত্তা ক্ষেত্রে ইরান ও পাকিস্তানের সহযোগিতা শুধু এ দুই দেশ নয় বরং এ অঞ্চলের সব দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য কল্যাণকর।
পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রধান অধ্যাপক সাজ্জাদ বোখারি এ অঞ্চলের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে খুবই নাজুক ও ভঙ্গুর অভিহিত করে বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের অবসান ঘটাতে ইরান ও পাকিস্তান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
পশ্চিম এশিয়ার বর্তমান অবস্থা থেকে বোঝা যায়, অভিন্ন হুমকি বজায় থাকায় অন্য দেশের সঙ্গে ইরানের নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে। এ কারণে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আফগানিস্তান, ইরান, চীন ও রাশিয়া সফরকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। #
বাংলা৭১নিউজ/সূত্র: পার্সটুড/এমএইচ