বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০২:১৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
৫ বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে শুক্রবার স্কুল খোলা না বন্ধ, জানাল শিক্ষা মন্ত্রণালয় ফিলিস্তিনকে তাদের জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে: খামেনি দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার স্বাস্থ্য খাতে সমন্বিত নেতৃত্বের আহ্বান সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের রাজবাড়ীতে লাইনচ্যুত ট্রেন উদ্ধার, ৩ ঘণ্টা পর যোগাযোগ স্বাভাবিক ঢাকায় পরিবহনে চাঁদাবাজি, মূলহোতাসহ গ্রেফতার ১১ জাতির পিতার সমাধিতে আপিল বিভাগের নবনিযুক্ত বিচারপতিদের শ্রদ্ধা প্রতীক নিয়ে আজ থেকেই ১৮ দিনের প্রচারণায় নামবেন প্রার্থীরা ওমরা পালনে সস্ত্রীক সৌদি যাচ্ছেন মির্জা ফখরুল গ্রামীণ টেলিকম দুর্নীতি: ইউনূসের জামিন, চার্জ শুনানি ২ জুন ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা কলম্বিয়ার রাজধানীতে ট্রাকের ধাক্কায় রিকশাচালক নিহত পুঁজিবাজারে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা তীব্র তাপদাহ থেকে সুরক্ষায় রিকশাচালকদের মাঝে ছাতা বিতরণ পেকুয়ায় বজ্রপাতে ২ লবণ চাষীর মৃত্যু প্রেমের অপেক্ষায় মনীষা, খুঁজছেন জীবনসঙ্গী ফিলিস্তিনসহ সব যুদ্ধ বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি: প্রধানমন্ত্রী ‘সকল মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে: শেখ হাসিনা কসবায় ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু

পথহারা তালার পোল্ট্রিশিল্পে জড়িতরা

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ২৭ মার্চ, ২০১৮
  • ৫১৭ বার পড়া হয়েছে
ফাইল ছবি

বাংলা৭১নিউজ, এম.এম হায়দার আলী, তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় নানান সমস্যায় জর্জারিত সম্ভাবনাময় পোল্ট্রি শিল্প বর্তমানে হুমকির মুখে। দীর্ঘদিন ধরে জেঁকে বসা ভাইরাসসহ প্রশ্নবিদ্ধ চড়ামূল্যের মুরগীর বাচ্চা, খাদ্য ও ঔষধের যাঁতাকলে পিষ্ট বহু পোল্ট্রি খামারী রীতিমত দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। বেকারদের কর্মমুখী করার গুরুত্বপূর্ণ এই খাতে সরকারীভাবে নেই পর্যাপ্ত বাস্তব প্রশিক্ষন এবং নিয়ম মাফিক অর্থনৈতিক তেমন কোন সুযোগ সুবিধা। উৎপাদন খরচের তুলনায় বিক্রয় মূল্য কম হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ খামার ব্যবসায়ীরা লাভজনক এই পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছেন।এমন কি লাখ লাখ টাকা ব্যায়ে প্রথম আমলের তৈরি অধিকাংশ পোল্ট্রি খামার এখন গরু ছাগল পালনের গোয়াল ঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আবার অনেকে ঋনের বোঝা মাথায় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ভোক্তা সাধারনের মাংশের চাহিদা পূরুনের পাশাপাশি বাজার দর সাধ্যের মধ্যে রাখতে অগ্রনী ভূমিকা পালনকারী এশিল্প আজ ধ্বংশের প্রায় দ্বারপ্রান্তে পৌছালেও বিষয়টি দেখার যেন কেউ নেই। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলায় আনুমানিক ১৫-২০ বছর আগে হাতে গোনা কিছু সংখ্যক মানুষ একরকম শখের বশত পোল্ট্রি খামার শুরু করেন।এক পর্যায়ে লাভজনক এই শিল্পকে এখানকার শত শত মানুষ বানিজ্যিক ভিত্তিতে পেশা হিসেবে বেছে নেয়া পূর্বক ব্যাপক হারে এশিল্প বিস্তার লাভ করে। এমন কি বেকাররা হবেন স্বকার, গরীব মানুষ হবেন আর্থিকভাবে স্বচ্ছল, মধ্যবিত্তরা হবেন লাখপতি আর উচ্চ মধ্যবিত্তরা হবেন কোটিপতি । সেই সময়ের হিসেবে মোটেও মিথ্যা ছিল না তাদের বুঁক ভরা আশা বা স্বপ্ন। কিন্ত শত চেষ্টার পরও নানান প্রতিকূলতার শিকার হয়ে দফায় দফায় ক্ষতিগ্রস্থ খামার মালিকেরা আজ পরাজিত সৈনিকের মতই জীবন জীবিকা নর্বিাহ করে চলেছেন।

ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অনেকে সোনালী, বয়লার, অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তানি জাতের মুরগী পালন করতে গিয়েও সঠিক পরিচর্জার অভাব এবং অজানা ভাইরাসে নতুন করে আরেক দফায় ক্ষতির মুখে পড়ার বিষয়টি নতুন কোন খবর নয়। তথ্য সংগ্রহকালে উপজেলার যুগীপুকুরিয়া গ্রামের খাদেম আলী সরদার (৫৫) ক্ষোভের সাথে জানান, আট দশ বছর আগে প্রায় দু লাখ টাকা খরচ করে খামার বানিয়ে একবারে আড়াই হাজার করে মুরগী পালন শুরু করেছিলাম। তিন চার বছর ভাল ভাবে চলার পর এক বছর পর পর কয়েক কিস্তির পোল্ট্রি ভাইরাসে মরে গিয়েছিল। তার উপর ওই মুরগীর দাম তো কমে গেল আবার বিক্রি করতে হতো বাকিতে।সেবার অনেক টাকা লোকসান হয়ে গিয়েছিল তাই ওই বছর খেকেই ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। খামারে এখন গরু ছাগল রাখি। বুঝে শুনে করতে পারলে খুব একটা লস্ হয় না। পোল্ট্রি চাষ করতে গেলে যারা ভাল বোঝে তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে হবে। কিন্ত সে সব লোক পায়াও মুশকিল।

একই গ্রামের দীর্ঘ বছরের পোল্প্রি খামার ব্যবসায়ী আনোয়ারুল ইসলাম সরদার (৬৫) জানান, গত কয়েকদিন আগে প্রায় ১ কেজি ওজনের ২শত পিছের মত বয়লার মুরগীর রানীক্ষেত রোগ দেখা দেয়ায় এই চালানে ৩০ হাজার টাকার মত লোসকান হয়ে গেছে। ১৮-২০ বছর যাবৎকাল পোল্ট্রি চাষ কওে আসছি কিন্ত সরকারী হোক আর বেসরকারী হোক এই পর্যন্ত কোন প্রকার সহযোগীতা পায়নি। ওই সময় উপস্থিত প্রতিবেশি সোহরাব মল্লিক (৬০) জানান, আমি ও প্রায় ২০ বছরের মত পোলিাট্র চাষ করে আসছি। প্রথমদিকে মাংশের মুরগী পালতাম তাতে বেশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে কয়েক বছর ধরে ডিমের মুরগীর চাষ করছি, কিন্ত গত বছর খানেক যাবৎ ডিমের যা দাম তাতে করে মুরগীর খাবারের টাকাও হচ্ছে না। বর্তমানে একশত ডিম মাত্র সাড়ে ৪ শত টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে এ ব্যবসা আর করার ইচ্ছা নেই। শুধু তালা উপজেলা নয়, এ ধরনের অভিযোগ সাতক্ষীরা জেলাসহ দেশের দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের ভুক্তভোগী বহু পোল্ট্রি খামার মালিকদের বলে জানা যায়।

উপজেলার পাটকেলঘাটা বাজারে অবস্থিত সততা পোল্ট্রি এন্ড ফিড ব্যবসায়ী তৌহিদুজ্জামান জানান, আমি বেশ কিছু খামারের মালিকদের বিভিন্ন জাতের বাচ্চা, খাবার ও ঔষধ দিয়ে থাকি। কিন্ত মাঝে মধ্যে কোম্পানীর কর্তৃপক্ষ এমন ভাবে বাচ্চা গ্রেড করেন যার মান এতো খারাফ হয় সে কথা বলার না। বর্তমানে নগদ টাকায় একটা ব্রয়লার বাচ্চা ৪৬ টাকা এবং প্রতিটা সোনালী জাতের মুরগীর বাচ্চা কিনতে হচ্ছে ২২-২৪ টাকা দরে। মানহীন বাচ্চ বাঁচে কম কিছু বাঁচলেও আশানুরুপ গ্রোথ হয়না ফলে চরম লোসকানের মুখে পড়তে হয়। যে কারনে খামার মালিকদের সাথে অনেক সময় ভ’ল বোঝাবুঝি হয়ে থাকে। বর্তমানে পাইকারী প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগী ৯৫-১০০ টাকা এবং সোনালী মুরগী ১ শত ৮০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। এবছর ব্যবসা বানিজ্যের অবস্থা মোটেও ভাল না। এদিকে তালা উপজেলা প্রানি সম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তা ছুটিতে থাকায় ওই অফিসের সহকারী কর্মকর্তা মোঃ রকিবুজ্জামান জানান,উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নে সবমিলিয়ে ৪ শত ১৩ টি পোল্ট্রি খামার রয়েছে।

আর প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা হিসেবে যে সময় ন্যাশনাল এগ্রিকালসার টেকনোলজি প্রজেক্ট (এন,এ,টি,পি) নামক প্রকল্প মুরগী পালনের উপর অর্থ যোগান দেন সে সময় ২৫ জন ব্যক্তিকে প্রশিক্ষন দেয়া হয়ে থাকে। এছাড়া খামার ব্যবসায়ীদের জন্য সরকারী ভাবে নির্দিষ্ট কোন কিছু বরাদ্দ নেই। তবে খামারে ভাইরাস বা অন্য কোন রোগ সংক্রান্ত কো ব্যক্তি অফিসে যোগাযোগ করলে তাৎক্ষনিক ভাবে সরজমিনে গিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। সবমিলে দৈনন্দিন জীবনে অতি গুরুত্বপূর্ণ এ শিল্প বা পেশাকে আরো বেশি উন্নতিকল্পে সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করা সহ সার্বিক সহযোগিতার মাধ্যমে জনস্বার্থ রক্ষায় আন্তরিক হওয়ার জন্য স্থানীয় অভিজ্ঞ মহল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com