বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে চলছে বাংলাদেশ বনাম জিম্বাবুয়ের সিরিজ নির্ধারনী টেস্ট ম্যাচ।
তবে স্টেডিয়ামের বাইরে ভিড় করা ক্রিকেট ভক্তদের কথা বলার বিষয় এই খেলা নয় বরং হয়ে উঠেছে ক্রিকেট তারকাদের রাজনীতিতে আসা না আসার প্রসঙ্গটি।
বিশেষ করে মাশরাফি বিন মুর্তজা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন সংগ্রহ নিয়ে ক্রিকেট ভক্তদের মধ্যে দেখা গিয়েছে নানা ধরণের প্রতিক্রিয়া।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জান্নাতুল নাইম শাওলিন ক্রিকেটারদের রাজনীতিতে জড়ানোর বিষয়টিকে নেতিবাচক বলে মনে করেন।
তিনি বলেন, “আমার মনে হয়না ক্রিকেটাররা রাজনীতিতে আসলে কোন ভাল করতে পারবে। তারা ক্রিকেট নিয়েই যদি থাকে, তাহলে তারা ভাল করতে পারবে। আর তারা যদি রাজনীতিতে জড়িয়ে যায় তাহলে অনেক কম্প্লিকেটেড হয়ে যাবে। যে তারা খেলাটা দেখবে নাকি রাজনীতিটা সামলাবে। তাই আমার মনে হয় তারা রাজনীতিতে না আসলেই ভাল”
তবে ভিন্ন ভাবে ভাবছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী শেখ সাকিব ফেরদৌস। তার মতে তরুণ প্রজন্মকে রাজনীতিতে উদ্বুদ্ধ করতে ক্রিকেটাররা বড় ধরণের ভূমিকা রাখতে পারবে।
তিনি বলেন, “এই ক্রিকেটারটা নতুন প্রজন্মের জন্য একটা আইডল। সবাই তাদেরকে খুব ফলো করে। তারা তরুণ প্রজন্মের মনের ভাষাটা বোঝে, তারা কি চায় সেটা জানে, এসব নিয়ে তারা সংসদে আলোচনা করতে পারে। তাছাড়া রাজনীতির প্রতি তরুণ প্রজন্মের যে অনাগ্রহ, সেটা থেকে তাদেরকে বের করে আনতে এই ক্রিকেটারদের রাজনীতিতে আসাকে আমি ইতিবাচক-ভাবেই দেখছি।”
এতদিন সংসদ নির্বাচনের হাওয়া সংগীত ও রূপালি জগতে বয়ে গেলেও এখন তার ছোঁয়া লেগেছে ক্রিকেট মাঠে। ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ক্যাপ্টেন মাশরাফির মনোনয়নপত্র সংগ্রহ যেন সেই ইঙ্গিত দেয়।
খেলার ক্যারিয়ারের মধ্যেই হঠাৎ রাজনীতিকে কেন বেছে নিলেন এই ক্রিকেট তারকা। এ বিষয়ে মিডিয়ার সামনে মুখ খোলেননি তিনি।
তবে আওয়ামী লীগের প্রেস উইং জানিয়েছে যে, নিজ জেলা নড়াইল-২ আসনে প্রার্থিতার জন্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহের পর শহরের উন্নয়নে কাজ করার কথা জানিয়েছেন মাশরাফি।
শ্রীলঙ্কার সানাথ জয়সুরিয়া, খেলোয়াড় জীবনেই রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার উদাহরণ সৃষ্টি করেছিলেন।
তবে বাংলাদেশ ক্রিকেটে এই ঘটনা এবারই প্রথম। বিশ্বকাপের আগমুহূর্তে অধিনায়ক মাশরাফি বা অন্য কোন ক্রিকেট খেলোয়াড়ের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে বিসিবির কি কোন বিধিনিষেধ রয়েছে?
এমন প্রশ্নের জবাবে বিসিবির মুখপাত্র জালাল ইউনুস বলেন, “মাশরাফি তার ক্যারিয়ারের শেষ পর্যায়ে চলে এসেছেন। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের পর তিনি খেলা থেকে রিটায়ার করবেন। এটা কোন নিয়ম নাই যে কোন ক্রিকেটার রাজনীতি করলে খেলতে পারবেন না”।
তার মতে, “এটা যার যার সাংবিধানিক অধিকার। উনি যদি মনে করেন যে, রাজনীতির পাশাপাশি তিনি খেলাতেও পারফর্ম করতে পারবেন, তাহলে আমাদের কোন নিয়ম নাই যে আমরা তাদেরকে কোন বাঁধা দিতে পারবো। তাছাড়া মাশরাফিকে নির্বাচনী প্রচারণার জন্য এক মাস দেড় মাস ব্যস্ত থাকবেন। বাকিটা তিনি ম্যানেজ করে নেবেন।”
এদিকে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহের খবরগুলোতে মাশরাফির সাথে সাকিব আল হাসানের নামও উঠে এসেছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। পরে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে কথা বলে সরে আসেন বলেও খবর প্রকাশ হয়।
এ বিষয়ে বিবিসি বাংলার পক্ষ থেকে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলেও তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি।
তবে কদিন আগে বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাতকারে তিনি জানিয়েছিলেন যে ক্রিকেট ক্যারিয়ারের বাইরে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনও কোন পরিকল্পনা তার নেই।
সাকিব আল হাসান বলেন, “আমি এখনও কোন লক্ষ্য তৈরি করিনি। আমি ওইভাবে আমার লাইফটাকে চালাইনা। বেশি একটা চিন্তা করিনা। যেভাবে আসছে, সেভাবেই পার করছি। চেষ্টা করছি নিজেকে কিভাবে বেটার করা যায়। এজন্য আমি কোন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করিনা”।
তিনি বলেন, “অনেকগুলো অপশন আছে আমার কাছে। যেটা আমার কাছে মনেহয় নিলে ভাল হবে। যখন খেলার ক্যারিয়ার শেষ হবে, তখন সিচুয়েশন অনুযায়ী বুঝতে পারবো যে কোনটা বেছে নিলে আমার জন্য ভাল হবে।”
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদক সাকিবের সাক্ষাৎকার নিতে তার বাড়ি মাগুরায় যায়। সেখানে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে সাকিব আল হাসান নির্বাচন করবেন এমন কিছু জানা যায়নি। সূত্র: বিবিসি বাংলা।
বাংলা৭১নিউজ/এমকে