রবিবার, ২৬ মে ২০২৪, ০১:৪০ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত সন্ধ্যায় ঢাকায় আসছেন কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন উপমন্ত্রী দক্ষ জনশক্তি রপ্তানিতে দেশ ভিত্তিক প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হবে ‘এ পরিবারে জন্ম হওয়াটাই আমার ভুল হয়েছে’ দেশে ফিরলেন ভারতে পাচার হওয়া ৩ বাংলাদেশি পুলিশের সার্জেন্ট পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি, যুবক গ্রেফতার পৃথিবীর কাছাকাছি ‘বাসযোগ্য’ নতুন গ্রহ আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী নিয়ে প্রচারিত তথ্যচিত্রের প্রতিবাদ আইএসপিআরের ইসরায়েলগামী আরও তিন জাহাজে হুথির হামলা রেকর্ড গড়ে বড় পতনে সোনা উপকূলীয় এলাকায় লঞ্চ চলাচল বন্ধের নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পরিচয়ে ফেসবুকে হারবাল পণ্যের রমরমা বাণিজ্য তাপপ্রবাহে পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা, তাপমাত্রা ৪২ ছুঁই ছুঁই এমপি আনার হত্যা: অপরাধী হলে শিলাস্তির বিচার চান দাদা ভারতীয় প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান সালমান এফ রহমানের ডলার সংকটে আমদানি কম, রাজস্ব ঘাটতি ৬৭ কোটি ৮৯ লাখ টাকা রামপুরায় রড কাটার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মিস্ত্রির মৃত্যু ঢাকায় এসেছেন ‘কুরুলুস উসমান’ খ্যাত অভিনেতা বুরাক আবারও নিজেকে ‘ঈশ্বরের দূত’ বললেন মোদি ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে ওলামা লীগের মানববন্ধন

দোয়া কবুলে বাধা যেসব কাজ

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক:
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ১০ মে, ২০২২
  • ২৫ বার পড়া হয়েছে

আল্লাহর নির্ধারিত ফরজ-ওয়াজিব লঙ্ঘন করা এবং হারাম ও নিষিদ্ধ কাজ করা, দোয়া কবুলের পথে বাধা। কেননা, এর ফলে আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। তাই তার দোয়া আল্লাহ কবুল করেন না। ঠেকা ও বিপদে পড়লেই মানুষ দোয়া করে, যেন বিপদমুক্ত হওয়া যায়; সুস্থ্য ও ভালো অবস্থায় দোয়া করে না। এ বিষয়ে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
‘ভালো অবস্থায় তুমি আল্লাহকে চিনেত শেখ; তবেই বিপদের অবস্থায় আল্লাহ তোমাকে চিনবে।’

১. নাফরমানের দোয়া আল্লাহ কবুল করেন না
আল্লাহ তাআলা হজরত ইউনুস আলাইহিস সালাম সম্পর্কে বলেন, ‘তিনি যদি আগে তাসবিহকারীদের অন্তর্ভূক্ত না হতেন তাহলে তিনি কেয়ামত পর্যন্ত মাছের পেটে থাকতেন।’

আবার আল্লাহ তাআলা ফেরাউন সম্পর্কে কোরআনে বলেছেন, ‘যখন পানি ফেরাউনকে ডুবিয়ে দিল তখন সে বললো, আমি ঈমান আনলাম, (আল্লাহ বলেন) এখন? এর আগে তুমি নাফরমানি করেছ এবং তুমি ছিলে ফাসাদ সৃষ্টিকারীদের অন্তর্ভূক্ত।’

এই দুই আয়াতে দোয়া কবুলের জন্য আল্লাহর আদেশ মানা ও নিষিদ্ধ কাজ থেকে দূরে থাকার কথা পরিষ্কার করে বলা হয়েছে। হজরত ইউনুস আলাইহিস সালাম আল্লাহর অনুগত ও বাধ্য ছিলেন এবং আল্লাহর আদেশ পালন করেছেন। তাই তার দোয়া কবুল হয়েছে। পক্ষান্তরে ফেরাউন আল্লাহর অবাধ্য ছিল ও তাঁর আদেশ মানতো না। তাই তার দোয়া ও তাওবা কবুল করা হয়নি।

২. হারাম খাবার ও পোশাক
দোয়া কবুলের ক্ষেত্রে হারাম আয় দ্বারা খাদ্য পানীয় ও পোশাক পরা সবচেয়ে বড় বাধা। এ প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে-
‘যে ব্যক্তি আকাশের দিকে দুইহাত তুলে হে প্রভু! হে প্রভু! বলে দোয়া করে। অথচ তার খাবার হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম এবং হারাম দ্বারাই তার রক্ত-মাংস তৈরি। তার দোয়া কিভাবে কবুল হবে?’ (মুসলিম)

নবিজী আরও বলেছেন, ‘তোমরা খাবারকে পবিত্র করো, তাহলে তোমাদের দোয়া কবুল হবে।’

৩. শিরক ও বিদআত
শিরক ও বিদআতের কারণে দোয়া কবুল হয় না। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘তোমরা আল্লাহকে ডাকো এবং তার দ্বীনকে ইখলাসপূর্ণ ও একনিষ্ঠ করো।’
ইখলাস এবং একনিষ্ঠতার মূল হচ্ছে- শিরক ও বিদআত থেকে দূরে থাকা। যারা আল্লাহর সঙ্গে দেবতা, কবরবাসী, নেকলোক, মাজার ও অন্যান্য জিনিসকে শরিক করে এবং তাদের সাহায্য চায়, তাদের দোয়া কবুল হবে না। কেননা আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘আল্লাহর সঙ্গে অন্য কাউকে তোমরা ডেকো নো।’
কবর পুজারীরা মৃতদের উসিলায় দোয়া কবুলের আহ্বান জানায় এবং বলে, আমরা অমুকের উসিলায় কিংবা তার সম্মানের উসিলায় দোয়া কবুলের দরখাস্ত করছি। তাদের এই দোয়া শিরক ও বিদআত।
কেননা আল্লাহ তাআলা কাউকে মাধ্য কিংবা উসিা বানিয়ে দোয়া করার নির্দেশ দেননি। তিনি বরং সরাসরি তার কাছে দোয়া করার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ‘তোমরা আমার কাছে দোয়া করো, আমি কবুল করবো।’

দোয়া কবুলে উসিলা
হাদিসে পাকে নেক (আমলের) কাজের দোহাই দিয়ে দোয়া করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যেন এক গুহায় পাথর দ্বারা অবরুদ্ধ তিন ব্যক্তি তাদের তিনটি নেক আমলের কথা উল্লেখ করে দোয়া করায় আল্লাহ তাআলা তাদের দোয়া কবুল করেন এবং গুহার মুখ অবরুদ্ধকারী পাথরটিকে সরিয়ে তাদেরকে মুক্তি দেন। তাই কোনো নেক ব্যক্তি নয়, বরং নেক আমলকে উসিলা হিসেবে উপস্থাপন করা যায়। তবে কোনো উসিলা ছাড়াই আল্লাহ তার কাছে দোয়া করার নির্দেশ দিয়েছেন।

৪. গাফেল ও উদাস মনের দোয়া আল্লাহ কবুল করেন না
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা এমনভাবে আল্লাহর কাছে দোয়া করো যেন তা কবুল হওয়ার দৃঢ় বিশ্বাস থাকে। তোমরা জেনে রাখো! গাফেল ও উদাস মনের দোয়া আল্লাহ কবুল করেন না।’ (মুসতাদরাকে হাকেম)

৫. সৎ কাজরে আদেশ ও অসৎ কাজের প্রতিরোধ না করলে দোয়া কবুল হয় না
হজরত হুজায়ফা বিন ইয়ামান রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমার প্রাণ যার হাতে, সেই আল্লাহর শপথ! হয় তোমরা সৎ কাজের আদেশ দাও এবং অসৎ কাজের প্রতিরোধ করবে, না হয় শীঘ্রই তোমাদের উপর নিজ আজাব পাঠাবেন; এরপর তোমরা তাঁর কাছে দোয়া করবে, তিনি দোয়া কবুল করবেন না।’ (তিরমিজি)

হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘দোয়া মুমিনের হাতিয়ার ও দ্বীনের খুঁটি এবং আসমান ও জমিনের আলো।’ (মুসতাদরাকে হাকেম)

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে বিপদ নাজিল হয়েছে কিংবা এখনও নাজিল হয়নি তার জন্য দোয়া উপকারী। হে আল্লাহর বান্দারা, তোমাদের দোয়া করা জরুরি।’ (মুসতাদরাকে হাকেম)

ইমাম ইবনুল কায়্যিম রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, ‘মকসুদ অর্জন ক্ষতিকর জিনিস প্রতিরোধে দোয়া হচ্ছে শক্তিশালী উপায়। দোয়ার ফলাফল কয়েক কারণে দেখা যায় না। যদি মন্দ কাজ বা লক্ষ্য অর্জনের জন্য দোয়া করা হয় তাতে আল্লাহ তাআলার নাফরমানি থাকায় তা কবুল করেন না। দুর্বল মন ও বেপরোয়া মনের দোয়াও আল্লাহ কবুল করেন না। তিনি আরও বলেন, ‘দোয়া হচ্ছে সর্বোত্তম চিকিৎসা। তা বিপদের শত্রু এবং তা নাজিলে বাধা সৃষ্টি করে কিংবা হাল্কা করতে সাহায্য করে। দোয়া মুমিনের অস্ত্র।

৬. তাড়াহুড়ো করলে দোয়া কবুল হয় না
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, দোয়া কবুলের বাপারে তাড়াহুড়ো করলে দোয়া কবুল হয় না।’ (মুসলিম, তিরমিজি)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, দোয়া কবুলে বাধা হয়ে দাঁড়ায় এমন সব কাজ থেকে বিরত থাকা। খাঁটি ও বিশুদ্ধ নিয়ত ধীরস্থিরভাবে দোয়া করা। কোরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনা মোতাবেক দোয়া করা। আর তাতে দোয়া কবুল হবে ইনাআল্লাহ।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত বিষয়গুলো মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com