সোমবার, ২৭ মে ২০২৪, ০৩:০৪ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
শ্রেষ্ঠ উদ্ভাবনী উদ্যোগের জন্য নির্বাচিত দপ্তর-সংস্থার মাঝে শিল্পমন্ত্রীর সনদ বিতরণ নিবন্ধিত সব সোনার দোকানে ইএফডি যন্ত্র বসাতে চিঠি কৃষির উন্নয়নে খাল খননের সুপারিশ ফায়ার সার্ভিসের চলমান সাফল্য ধরে রাখতে হবে: ডিজি ‘রিমাল’ মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিয়ে যা জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যান্সারে আক্রান্ত জবি অধ্যাপকের মৃত্যু সোমবার চট্টগ্রাম শহরের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা ঘূর্ণিঝড় রেমাল: ঢেউয়ের তোড়ে প্রাণ গেলো যুবকের তেল আবিবে বড় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হামাসের ঘূর্ণিঝড়ে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেবে জেলার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি: শিক্ষামন্ত্রী পরিবারসহ বেনজীরের আরও ১১৩ স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ ‘পর্যটন কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে মালয়েশিয়াকে স্বাগত জানানো হবে’ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে তিনদিনের পর্যটন মেলা ঝুঁকিপূর্ণ ঈদযাত্রা বন্ধে কঠোর থাকবে হাইওয়ে পুলিশ : শাহাবুদ্দিন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিএসএমএমইউ ও আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সাক্ষাৎ শপথ নিলেন ঝিনাইদহ-১ আসনের এমপি নায়েব আলী জোয়াদ্দার ঘূর্ণিঝড় রিমাল জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে গেছে সুন্দরবন এমপি আনারের আসন শূন্য ঘোষণা নিয়ে জটিলতা! ভাড়াটিয়ার রুমে তাস খেলা ও মাদক সেবনের জেরে বাড়িওয়ালাকে কুপিয়ে খুন সন্ধ্যা ৬টা থেকে উপকূল অতিক্রম করতে পারে রিমাল

জাকির নায়েক কি জঙ্গিবাদের মদতদাতা?

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় শুক্রবার, ৮ জুলাই, ২০১৬
  • ১৭৬ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক: ড. জাকির নায়েক আবার বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে৷ গুলশান ট্র্যাজেডির পর তাঁর বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদকে মদত দেয়ার অভিযোগ উঠেছে৷ ভারতের মহারাষ্ট্রেও শুরু হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত৷ জাকির নায়েক কি সত্যিই জঙ্গিবাদের মদতদাতা?

গত কয়েকদিন ধরে আবার সারা বিশ্বেই আলোচনা-সমালোচনায় আছেন ভারতীয় ইসলামি চিন্তাবিদ ড. জাকির নায়েক৷ সর্বশেষ খবর, ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকার তাঁর বিষয়ে তদন্ত শুরুর নির্দেশ দিয়েছে পুলিশকে৷

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, মুম্বইয়ে জাকির নায়েকের ‘ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন’-এর অফিসের বাইরে ইতিমধ্যে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে৷ ভারতের এনডিটিভি এবং হিন্দুস্থান টাইমস জানিয়েছে, বাংলাদেশ সরকারের দাবি পূরণ করতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে মহারাষ্ট্র সরকার৷

গত ১ জুলাই গুলশানের রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার পর জাকির নায়েকের নাম নতুন করে আলোচিত হতে থাকে বাংলাদেশে৷ নিহত জঙ্গিদের কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নিয়মিত জাকির নায়েকের ‘উগ্র’ বক্তব্য শেয়ার করতেন – এ বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরই নতুন করে শুরু হয় জাকির নায়েককে নিয়ে বিতর্ক৷

ড. জাকির নায়েককে নিয়ে বিতর্ক নতুন কিছু নয়৷ ভারতের মহারাষ্ট্রেই জন্ম নেয়া এই ইসলাম বিষয়ক বক্তা আগে নিষিদ্ধও হয়েছেন৷

গত বছর উসকানিমূলক কথাবার্তা বলার অভিযোগে ভারতের কর্নাটকা রাজ্যে তাকে নিষিদ্ধ করা হয়৷ শুধু তাকেই নয়, ভারতের মৌলবাদী হিন্দুদের দল আরএসএস-এর নেতা প্রবীন টোগারিয়াকেও তখন নিষিদ্ধ করেছিল কর্ণাটকা সরকার৷

২০১০ সালে ব্রিটেনও জাকির নায়েককে নিষিদ্ধ করে৷ এর তিন বছর পর বিবিসি-তে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়৷ সেখানে বলা হয়, জাকির নায়েকের বক্তব্যে অনেক ‘অগ্রহণযোগ্য’ উপাদান থাকায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাঁকে নিষিদ্ধ করেছে, কিন্তু তারপরও ব্রিটেনের লাইব্রেরিতে তাঁর বই রয়েছে৷

প্রতিবেদনে আরো দাবি করা হয়, লন্ডনের পাবলিক লাইব্রেরিতে জাকির নায়েকের অন্তত এমন তিনটি বই রয়েছে, যেগুলোতে তিনি জঙ্গিবাদ, নারী এবং ইহুদিদের বিষয়ে চরম আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন৷ প্রতিবেদক এড ডেভি জানান, উর্দুতে লেখা একটি বইয়ে জাকির নায়েক বলেছেন, তিনি ‘মৌলবাদী হতে পেরে গর্বিত’৷ প্রতিবেদকের আরো দাবি ছিল, জাকির নায়েক বলেছেন, ‘‘প্রত্যেক মুসলমানেরই জঙ্গি হওয়া উচিত৷”

ব্রিটেন ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র এবং মালয়েশিয়াতেও ড. জাকির নায়েককে নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷

তবে ড. জাকির নায়েক সবসময়ই উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়া এবং তথাকথিত ইসলামিক স্টেট বা আইএস অথবা অন্য কোনো জঙ্গি সংগঠনকে সমর্থন দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন৷

কিন্তু গুলশান ট্র্যাজেডির পর আবার উঠেছে সেই প্রশ্ন৷ ড. জাকির নায়েক কি সত্যিই আইএস-কে সমর্থন করেন? আইএস সম্পর্কে তাঁর কী বক্তব্য?

proxy

এ নিয়ে সংশয় বা সন্দেহের অবকাশ জাকির নায়েকই রাখেননি৷ এক অনুষ্ঠানে আইএস সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে আইএস-এর অন্য নাম আইসিস-এর পূর্ণাঙ্গ রূপ ‘ইসলামিক স্টেট অফ ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া’কে বিকৃত করে ড. জাকির নায়েক বলেন, ‘‘আমি মনে করি, তারা আসলে অ্যান্টিইসলামিক স্টেট অফ ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া৷” সঙ্গে সঙ্গেই উপস্থিত শ্রোতাদের কেউ কেউ হাততালি শুরু করেন৷

তখাকথিত ইসলামিক স্টেটকে ‘অ্যান্টিইসলামিক’, অর্থাৎ ইসলামবিরোধী বলার পক্ষে যুক্তি দেখাতে গিয়ে জাকির নায়েক বলেন, ‘‘আমি এমন মনে করি, কারণ, ইসলামপন্থি কোনো ব্যক্তি কখনোই কোনো নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করতে পারেনা৷”

পবিত্র কোরআনের আয়াত উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘‘কোরআনে বলা আছে, যদি কেউ কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে হত্যা করে, তাহলে নিহত ব্যক্তি মুসলিম-অমুসলিম যা-ই হোন না কেন, সেই হত্যা পুরো মানবতাকেই হত্যার শামিল৷ একইভাবে কেউ যদি একজন মানুষকে রক্ষা করে, তাহলে সেটাও পুরো মানবতাকেই রক্ষা করার মতো৷এখন এ সব লোক, যারা নিজেদের ‘আইএস’ বলে দাবি করে, তারা নিরপরাধ মানুষকেই তো হত্যা করছে৷

নিরপরাধ অমুসলিমদের হত্যা করার কথাও কোরআনে বলা নেই৷ তাই আমার মতে, তারা (আইসিস বা আইএসআইএস বা আইএস) মুসলমানই হতে পারেনা৷ সে-ই মুসলমান, যে কিনা সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে নিজেকে সমর্পণ করে৷ কোনো মুসলমান কখনোই কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে হত্যা করবেনা৷ তাই আমার মতে, তারা (আইএস) অ্যান্টিইসলামিক স্টেট অফ ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া৷”

সুতরাং, আইএস-এর বিষয়ে ড. জাকির নায়েকের বক্তব্য মোটামুটি স্পষ্ট৷ তিনি মনে করেন, আইএস নিরীহ মানুষকে হত্যা করছে বলে তারা মুসলমানই নয়, তারা বরং ইসলামবিরোধী৷
কিন্তু এই বক্তব্যই কি তাঁর জঙ্গিবাদবিরোধী অবস্থান স্পষ্ট করে?

ড. জাকির নায়েক জঙ্গিবাদবিরোধী কিনা সে সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে অন্তত আরেকটি ভিডিও সবারই দেখা দরকার৷ এই ভিডিওটি ২০০৬ সালের৷ তখন আরেক অনুষ্ঠানে আল-কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেন সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলেন এক তরুণ৷ জবাবে জাকির নায়েক কিন্তু লাদেনকে সমর্থনই করেছেন৷

নিচের ইউটিউব ভিডিওতেই রয়েছে লাদেন সম্পর্কে তাঁর সম্পূর্ণ বক্তব্য৷ সেখানে তিনি বলেছেন, ‘‘একজন মুসলমান প্রশ্ন করেছেন, ওসামা বিন লাদেন যা করছেন, ঠিক করছেন কিনা৷ আপনি কি নিজে যাচাই করে দেখেছেন? নাইজেরিয়ায় বোমা বিস্ফোরণ৷ কে করেছে? ওসামা বিন লাদেন৷ হেডলাইন৷ তিনি করেছেন কিনা আমরা তা জানি না৷ তবে আমার মতামত জানতে চাইলে বলবো, যদি তিনি সত্যের পক্ষে থেকে থাকেন, তিনি যদি ইসলামের শত্রুর সঙ্গে লড়াই করেন, আমি তাঁর পক্ষে৷”

সেই অনুষ্ঠানে ড. জাকির নায়েক একটা কথাই বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে লাদেন আদৌ খারাপ কোনো কাজ করছেন কিনা তা তিনি জানেন না৷ এমন অবস্থান থেকেই তিনি বলেন, ‘‘আমি জানিনা তিনি (লাদেন) কী করছেন৷ আমি তাঁর সংস্পর্শে নেই৷ ব্যক্তিগতভাবে আমি তাঁকে চিনি না৷ আমি শুধু খবরের কাগজ পড়ি৷ তিনি যদি সন্ত্রাসীদের সন্ত্রস্ত করেন, তিনি যদি সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী অ্যামেরিকাকে সন্ত্রস্ত করে থাকেন, আমি তার পক্ষে আছি৷

প্রত্যেক মুসলমানেরই সন্ত্রাসী হওয়া উচিত৷ ব্যাপারটা হলো, তিনি (লাদেন) যদি সন্ত্রাসীদের মনে ত্রাস ছড়িয়ে থাকেন, তিনি তাহলে ইসলামই অনুসরণ করছেন৷ আসলে তিনি তা করছেন কিনা, তা আমি জানি না৷”

ইসলামি চিন্তাবিদ হলেও নিজের বক্তব্যে ড. জাকির নায়েক কিন্তু বলেছেন, ওসামা বিন লাদেন কী করেছেন তা তিনি জানেন না৷ তিনি আরো বলেছেন, লাদেন যদি সন্ত্রাসীদের মনে ত্রাস ছড়িয়ে থাকেন তাহলে তিনি তার পক্ষে আছেন৷

প্রশ্ন হলো, নিরীহ মানুষ হত্যা করে বলে আইএস-কে ‘ইসলামবিরোধী’ বললেও, লাদেন সম্পর্কে জাকির নায়েকের এমন বক্তব্য জঙ্গিবাদকে উসকে দেয়ার মতো কিনা৷
আপনার কী মনে হয়?

বাংলা৭১নিউজ/সূত্র:ডয়েচে ভেলে

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com