বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কুমিল্লা এবং নড়াইলে দুটি মামলায় জামিন আবেদনের ওপর আদেশ দেয়ার জন্য আগামী রোববার (২৭ মে) তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
আজ (বৃহস্পতিবার) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের হাইকোর্টডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আজ তৃতীয় দিনের মতো এ দু’টি মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয়।এদিন রাষ্ট্রপক্ষে অসমাপ্ত শুনানি শেষ করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। পরে আদালতজানান, ‘আগামী রবিবার বাকি মামলাটির শুনানি শেষে ঐদিনই আদেশ দেয়া হবে।’
আদালতের অনুমতি নিয়ে কুমিল্লায় হত্যা ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা দুটি এবং নড়াইলে মানহানির একটি মামলায় রোববার হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
গত সোমবার (২১ মে) এই তিন মামলার মধ্যে দুটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় ছিল। তবে রাষ্ট্রপক্ষেঅ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম প্রস্তুতির জন্য সময় চান। পরে আদালত জামিন আবেদনের বিষয়েশুনানির জন্য মঙ্গলবার (২২ মে) দিন ধার্য করেন। মঙ্গলবার প্রথম দিনে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিকরেন খন্দকার মাহবুব হোসেন। তার বক্তব্য শেষ না হওয়ায় বুধবারের দিন ধার্য করে আদালত।বুধবার খন্দকার মাহবুব হোসেনের শুনানি শেষ হলে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানি শুরুকরেন। তার শুনানি শেষ না হওয়ায় আদালত আজকের দিন ধার্য করেছিলেন।
আজ সকালে শুনানি কথা থাকলেও অ্যাটর্নি জেনারেলের সময় আবেদনের ফলে শুনানি শুরু হয় দুপুর২টা’র পর। এ সময় খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের দুর্ভাগ্য খালেদা জিয়ার কারাবরণকে দীর্ঘায়িত করার জন্য অযথা সময়ক্ষেপণ করছেন।’
খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে মামলার শুনানি চলছে তা ২০১৫ সালের হরতালের সময় করা। সেই মামলায় জামিন শুনানির জন্য আমরা সকাল থেকে বসা ছিলাম। দীর্ঘ তিনদিন শুনানি চলছে। অ্যাটর্নি জেনারেল যথাসময়ে শুনানিতে আসেন না।
এ প্রসঙ্গে বেগম জিয়ার আইনজিবি মাসুদ আহমেদ তালুকদার রেডিও তেহরানকে বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল অহেতুক বিলম্ব করাচ্ছেন; লম্বা বক্তব্য দিচ্ছেন- এসব কারণে আদালতও বিরক্ত হচ্ছে।
খন্দকার মাহবুব বলেন, এই দু’টি মামলার ক্ষেত্রে খালেদা জিয়াকে জামিন না দেয়ার আইনগত বিধান নাই। এইক্ষেত্রে আশা করছি, জামিন আদেশ আমরা পাব। কিন্তু অ্যাটর্নি জেনারেল এ ছোট দুটি মামলায় সময়ক্ষেপণ করে তিন দিন যাবত ঠিকমতো শুনানিতে অংশ গ্রহণ করেন না। একটি রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তার কাছ থেকে জাতি এটা প্রত্যাশা করে না।’
এদিকে, ঢাকার মানহানি ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে জন্মদিন পালনের অভিযোগে দায়ের করা দুটি মামলার জামিনের জন্য আবেদন করেছেন খালেদা জিয়া। বাংলাদেশের মানচিত্র, জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত এবং মিথ্যা তথ্য দিয়ে জন্মদিন পালনের দুটি পৃথক অভিযোগে দায়ের করা মামলায় হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন তিনি। এ নিয়ে পাঁচটি মামলার জামিনের আবেদন করা হলো।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের অনুমতি নিয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা এ আবেদন করেন। এ দুটি মামলাও আগামী সপ্তাহে শুনানি হতে পারে বলে জানা গেছে।
গত ১৬ মে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে দেয়া হাইকোর্টের জামিন বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। জামিন পেলেও তিনি মুক্তি পাননি।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয় নিম্ন আদালত। এ মামলার অপর আসামি খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বাকি পাঁচজনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। একই সঙ্গে তাঁদের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা জরিমানাও করা হয়।
রায়ের পর পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারকে বিশেষ কারাগার ঘোষণা দিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে সেখানে রাখা হয়েছে। সূত্র : পার্সটুডে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস