বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: কাশ্মীরে ভারতীয় বর্বরতার তীব্রতা বেড়েছে বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)। ভারত সরকারের কাশ্মীর নীতির কঠোর সমালোচনা করে একটি প্রস্তাবনাও অনুমোদন দিয়েছে সংস্থাটি ।
শনিবার আবুধাবিতে ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়। শুক্রবার ওআইসির সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ যোগ দেওয়ার পরদিনই ওই প্রস্তাব অনুমোদন করে ইসলামিক দেশগুলোর সর্ববৃহৎ সংস্থা ওআইসি।
তবে ওআইসির এ প্রস্তাবের নিন্দা জানিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, কাশ্মির ইস্যু একান্তই ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
ওআইসি জানায়, ২০১৬ সাল থেকে কাশ্মীরে ভারতীয় বর্বরতার তীব্রতা বেড়েছে। একই সঙ্গে অবৈধ আটক ও গুম বেড়েছে বলে জানানো হয় ওআইসির প্রস্তাবে। ভারত নিরীহ কাশ্মীরিদের বিরুদ্ধে নির্বিচার বলপ্রয়োগ করছে বলেও অভিযোগ আনা হয় ওআইসির প্রস্তাবে।
পাকিস্তানের প্রবল আপত্তি ও বয়কট সত্বেও প্রথমবারের মতো এবারের ওআইসি সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। প্রতিবাদে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ কোরেশী এ বৈঠকে অংশ নেন নি।
শুক্রবার ওআইসি’র সভায় সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রসঙ্গে ভারতের অবস্থান ব্যাখ্যা করে সুষমা স্বরাজ প্রতিবেশী পাকিস্তানের ব্যাপক সমালোচনা করেন। সরাসরি নাম না নিলেও পাকিস্তানকে কড়া আক্রমণ করে সুষমা বলেন, যে সব দেশ সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দেয় তাদের বিরুদ্ধে অন্য দেশ গুলির ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত।
সুষমার যোগ দেওয়ার পরদিনই ওআইসির সভায় গৃহীত প্রস্তাবে ভারতের কাশ্মীর নীতির কঠোর সমালোচনা করা হয়। এ দিকে ওআইসির গৃহীত প্রস্তাবের নিন্দা জানিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কাশ্মীর ইস্যুতে আমাদের অবস্থান সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং সর্বজনবিদিত। আমরা আবারও নিশ্চিত করতে চাই যে জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের অবিভাজ্য অংশ এবং এটা ভারতের একান্তই নিজস্ব বিষয়।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মীরের পুলওয়ামায় নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণে শুক্রবার ওআইসির সভায় যোগ দিয়ে বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ওআইসি’র দেশগুলোকে এক যোগে কাজ করার আহ্বান জানান সুষমা স্বরাজ। তার ১৭ মিনিটের ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি মানবতা রক্ষা করতে চাই, তাহলে অবশ্যই সন্ত্রাসীদের আশ্রয় ও অর্থ দেওয়া রাষ্ট্রগুলোকে সেসব দেশে থাকা সন্ত্রাসী আস্তানার অবকাঠামো ধ্বংস এবং অর্থায়ন বন্ধ করতে বলতে হবে।
সুষমা বরেন, আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী সন্ত্রাসবাদ বিশ্বকে ভয়াবহ বিপদের দিকে ঠেলে দিয়েছে। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদ এবং উগ্রবাদ ভিন্ন নাম এবং পথ অবলম্বন করে। তাদের ব্যবহৃত কারণগুলোও বহুমাত্রিক।
সুষমার এই বক্তব্যের পরদিনই ওআইসির গৃহীত প্রস্তাবে ভারতের কঠোর নিন্দা জানানো হলেও আটক ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন বর্তমানকে ফিরিয়ে দেওয়ায় পাকিস্তানের প্রশংসা করা হয়। গত বুধবার ভারত-পাকিস্তান বিমান যুদ্ধের পর পাকিস্তানে আটক হন ওই ভারতীয় পাইলট। যুদ্ধ এড়িয়ে যাওয়ায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের প্রশংসা করা হয় ওআইসি’র পক্ষ থেকে।
ওআইসির গৃহীত প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানকে সমর্থন করে প্রস্তাব গ্রহণের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসই