বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: রোহিঙ্গা ইস্যুতে দলের ঘোষিত শুক্রবারের কর্মসূচি নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য অশনি সংকেত হিসেবে দেখছে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার বিকালে এক আলোচনা সভায় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপির শুক্রবারের কর্মসূচি নিয়ে ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য অশনি সংকেত। এ ধরণের কথায় বলার অর্থ হচ্ছে তাদের মাথার মধ্যে কিছু আছে । তারা অন্য কোনো কিছু পরিকল্পনা দেখছে।
জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে প্রয়াত অর্থমন্ত্রী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম সাইফুর রহমানের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ স্মরণ সভায় আয়োজন করে এম সাইফুর রহমান স্মৃতি পরিষদ।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ঈদ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি একটু উদ্বিগ্ন, তারা সভা সমাবেশ ডাক দিলে নিজেরাই নিজেদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়, দায়টা চাপায় আওয়ামী লীগের ওপর, সরকারের ওপর। রোহিঙ্গাদের মানবিক দিক দেখতে গিয়ে নিজেরাই নিজেদের সংঘর্ষে লিপ্ত হয় কিনা, সেটা নিয়ে আমি একটু চিন্তিত।
পাল্টা অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকের খবরের কাগজ খুলে দেখুন নোয়াখালীতে মহিলা আওয়ামী লীগের এমপির বাড়িতে গুলাগুলি হয়েছে নিজেদের মধ্যে। প্রতিদিন দেখবেন তারা নিজেরা মারামারি করছে, গুলাগুলি করছে, মানুষ মারা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে তারা নিজেরা মারামারি করে, গুলাগুলি করে কতজন মানুষ নিহত করেছেন তার হিসাব আমি বলতে পারবো না। শুধু তাই নয়, দেখবেন প্রতিটি অন্যায় কাজের নেতৃত্বে তারা (আওয়ামী লীগ)।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ধর্ষণের নেতৃত্বে তারা (আওয়ামী লীগ), হত্যার নেতৃত্বে তারা, খুনের নেতৃত্বে তারা, চোরাচালানির নেতৃত্বে তারা, দুর্নীতির নেতৃত্বে তারা। পানামা স্ক্যান্ডেলে ৯০ ভাগ হচ্ছে আওয়ামী লীগের লোকজন। কোনো বিচার নেই।
সরকার রোহিঙ্গা ইস্যুতে সুবিধাবাদী ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আজকে সমগ্র বিশ্ব সোচ্চার হয়ে উঠেছে। মানবতার প্রশ্নে বিশ্বকে এক হওয়া উচিত, মিয়ানমারকে বাধ্য করা উচিত তাদের হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা এবং এই মানুষগুলো ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যে। সেখানে আমাদের সরকার খুব সুবিধাবাদী ভূমিকা পালন করছে।
রোহিঙ্গা ইস্যুর সমাধানে দলের অবস্থানের কথা ব্যাখ্যা করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের বক্তব্য খুব স্পষ্ট, আমরা রোহিঙ্গা ইস্যুর এখনই সমাধান চাই। মিয়ানমারকে বাধ্য করতে হবে তাদের রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। তারা হিন্দু না মুসলমান –ওই কথা আমরা জিজ্ঞাসা করতে চাই না। তারা মানুষ, তাদের মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার সমস্ত অধিকার রয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনী যে এপ্রোসিটিজ (নৃশংসতা) করেছিল, তা চাইতে বড় এপ্রোসিটিজ আমরা এখানে দেখতে পারছি। আজকে এ বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের সোচ্চার হওয়া উচিত, মানুষের বিবেক জাগ্রত হওয়া উচিত।
এম সাইফুর রহমান স্মৃতি পরিষদের সভাপতি প্রয়াত অর্থমন্ত্রীর বড় ছেলে নাসের রহমানের সভাপতিত্বে ও সংগঠনের উপদেষ্টা কাইয়ুম চৌধুরীর পরিচালনায় স্মরণ সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, সমবায় বিষয়ক সম্পাদক জি কে গউস, কেন্দ্রীয় নেতা সদস্য অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ আবদুল মালেক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস