রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০১:৫৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সংঘাতে নেই: কাদের ডিবি কার্যালয়ে মিল্টন সমাদ্দারের স্ত্রী, চলছে জিজ্ঞাসাবাদ তুরস্ক বাণিজ্য বন্ধ করায় ‘বড় বিপদে’ পড়তে যাচ্ছে ইসরায়েল উপজেলা নির্বাচন কুলাউড়ায় সংঘর্ষে দুই ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ আহত ২০ বাবা ছিলেন বাসচালক মা দরজি, ছেলে লন্ডনের মেয়র ম্যাচিং না হলে প্রিজাইডিং অফিসারের আঙুলের ছাপে দেওয়া যাবে ভোট জম্মু-কাশ্মীরে বন্দুক হামলায় ভারতীয় বিমান সেনা নিহত, আহত ৫ তাপপ্রবাহ না বৃষ্টি, কেমন থাকবে আজকের আবহাওয়া সুন্দরবনে অল্প অল্প আগুন জ্বলছে, জোয়ারের অপেক্ষায় ফায়ার সার্ভিস ভেঙে গেল অনন্যা-আদিত্যর প্রেম! শাহজাহানপুরে স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে নববধূর আত্মহত্যা খাগড়াছড়িতে বজ্রপাতে বসতঘরে আগুন লেগে মা-ছেলের মৃত্যু ঢাকায় আসছেন আইওএম মহাপরিচালক অ্যামি পোপ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ডিসিও মহাসচিবের বৈঠক দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি আজ উজ্জীবিত বাংলাদেশের সামনে ভঙ্গুর জিম্বাবুয়ে এ জে মোহাম্মদ আলীর সম্মানে বন্ধ থাকবে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকাজ টানা ৮ দফা কমার পর ফের বাড়লো সোনার দাম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সরকারের পাতানো ফাঁদ: আব্বাস আশুগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২ ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ এবি ব্যাংকের লভ্যাংশ ঘোষণা

আদালতকক্ষে খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের দীর্ঘ আলাপ

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় রবিবার, ৩ মার্চ, ২০১৯
  • ৯৩ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: নাইকো দুর্নীতি মামলায় আদালতকক্ষে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বলেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। খালেদা জিয়ার সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক আলাপ হয়নি দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার দুরভিসন্ধি করে জামিন দিচ্ছে না। তাঁর অভিযোগ, চিকিৎসকদের কাছ থেকে যথাযথ চিকিৎসা পাচ্ছেন না খালেদা জিয়া।

শুনানির জন্য হুইল চেয়ারে রোববার দুপুর ১২ টা ৩৭ মিনিটে খালেদা জিয়াকে আদালতে আনা হয়। তখন আগে থেকে চেয়ারে বসে থাকা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সরকারি কৌঁসুলি মোশাররফ হোসেন কাজল উঠে গিয়ে খালেদা জিয়ার কাছে জানতে চান, তাঁর শরীর কেমন। খালেদা জিয়া কাজলের উদ্দেশে বলেন, ‘না, আমার শরীর ভালো যাচ্ছে না। শরীর খুব খারাপ। ’ কাজলের সঙ্গে কথা বলা শেষ হলে সেখানে উপস্থিত মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বলা শুরু করেন। খালেদা জিয়া তখন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বলতে থাকেন, তাঁর শরীর মোটেও ভালো যাচ্ছে না। খালেদা জিয়ার কাছে ফখরুল জানতে চান, ‘থেরাপি ঠিকমতো দেওয়া হচ্ছে কি না।’

খালেদা তখন ফখরুলকে জানান, কারাগারে তাঁকে দেখতে চিকিৎসক এসেছিলেন। কিন্তু তাঁর শরীর ভালো যাচ্ছে না। খালেদা জিয়ার সঙ্গে যখন ফখরুল ইসলাম কথা বলছিলেন, এর কিছুক্ষণ পর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান এজলাসে আসেন।

অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু করেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলামের আইনজীবী আসাদুজ্জামান। এজলাসকক্ষে দেখা যায়, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বসেন খালেদা জিয়ার ঠিক বাঁ-পাশে। তখন থেকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন মির্জা ফখরুল। বেলা ১ টা ১০ মিনিট পর্যন্ত খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

এ সময় তিনি চেয়ার থেকে উঠে গেলে সেখানে বসেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও বিএনপির নেতা জয়নুল আবেদিন। কিছুক্ষণ কথা বলার পর তিনি উঠে গেলে বিএনপির নেতা মীর নাসির এবং জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন কথা বলেন। এই তিনজনের কথা শেষ হলে আবার বেলা সোয়া ১টার দিকে খালেদা জিয়ার পাশের চেয়ারে বসেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত খালেদা জিয়ার পাশে বসে ছিলেন তিনি।

১৯ মার্চ মামলার পরবর্তী শুনানি

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম ও সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেনের পক্ষে তাঁর আইনজীবীরা শুনানি শেষ করেন। এরপর মামলার আসামি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ নিজেই শুনানি শুরু করেন। আদালতকে তিনি বলেন, এ মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে কিছুই নেই। মামলার প্রধান আসামি খালেদা জিয়াসহ অন্য সব আসামির অব্যাহতি চেয়ে শুনানি শেষ করেন সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ। মওদুদের পর খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি শুরু করেন আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার।

তিনি আদালতকে বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যাপারে আদালতে আবেদন করেছেন। একই সঙ্গে শুনানির সময় চেয়েও আবেদন করেছেন। কারণ মামলার সব কাগজপত্রের অনুলিপি এখনো হাতে পাননি। আদালত তখন দুদকের কৌঁসুলি মোশাররফ হোসেন কাজলের বক্তব্য জানতে চান। কাজল আদালতকে বলেন, জেলকোডের বিধান অনুযায়ী খালেদা জিয়ার চিকিৎসা হোক তাতে কোনো আপত্তি নেই তাঁর। তবে কাগজপত্রের অজুহাত দিয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা শুনানি করলেন না। অন্য সব আসামির যেখানে শুনানি শেষ হয়েছে, সেখানে আজ খালেদা জিয়ার পক্ষে তাঁর আইনজীবী শুনানি শুরু করতে পারতেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কারাগারের সামনে আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলছেন।

আদালত তখন খালেদা জিয়ার আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, উচ্চ আদালত যেখানে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যাপারে আদেশ দিয়েই দিয়েছেন, সেখানে নিম্ন আদালত আদেশ দিতে পারেন কি না? তখন খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, সরকারি মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা ২৪ ফেব্রুয়ারি কারাগারে খালেদা জিয়াকে দেখে গেছেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। খালেদা জিয়া তাঁকে বলেছেন, তাঁর পক্ষে আদালতে বসে মামলার কার্যক্রম শোনা সম্ভব না। তাঁর শরীর পারছে না।

আদালত তখন জানান, খালেদার চিকিৎসা নিয়ে করা আবেদনের ওপর আজই আদেশ দেবেন। ১৯ মার্চ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করে এজলাস ত্যাগ করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান।

দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত খালেদা জিয়া গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে আছেন।

মির্জা ফখরুল কী বললেন

প্রায় এক ঘণ্টা শুনানি শেষে বেলা ১টা ৩৫ মিনিটে হুইল চেয়ারে খালেদা জিয়াকে আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। দেখা যায়, নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কারাগারে প্রবেশের প্রধান ফটক পর্যন্ত মির্জা ফখরুল ইসলাম খালেদা জিয়ার সঙ্গে যান। খালেদা জিয়াকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘খালেদা জিয়ার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে, কথাও হয়েছে। খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা চিন্তিত। চিকিৎসকদের কাছ থেকে যথাযথ চিকিৎসা পাচ্ছেন না খালেদা জিয়া। এখন পর্যন্ত খালেদা জিয়ার রক্ত নেওয়া হয়নি। তিনি ডায়াবেটিস রোগী। এ ব্যাপারেও যথাযথ চিকিৎসা তিনি পাচ্ছেন না।’

কী আলাপ হলো? খালেদা জিয়ার সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক আলাপ হয়নি দাবি করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়া জামিন পাচ্ছেন না। সরকার দুরভিসন্ধি করে জামিন দিচ্ছে না।

নাইকো মামলার সারসংক্ষেপ

বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে খালেদা জিয়া গ্রেপ্তার হওয়ার পর ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় এ মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয় দুদক।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে ‘তুলে দেওয়ার’ মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন। আসামিপক্ষ মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করলে হাইকোর্ট ওই বছরের ৯ জুলাই এ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন এবং রুল দেন। প্রায় সাত বছর পর ২০১৫ সালের ১৮ জুন হাইকোর্ট রুল নিষ্পত্তি করেন। একই সঙ্গে খালেদা জিয়াকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। ওই বছরের ডিসেম্বরে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন খালেদা জিয়া।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের সাবেক সাংসদ এম এ এইচ সেলিম এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া-বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

বাংলা৭১নিউজ/সূত্র: প্রথম আলো

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com