বাংলা৭১নিউজ, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: আজ ৭ মে, মির্জাপুর গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে টাঙ্গাইল জেলার প্রথম গণহত্যা সংগঠিত হয় মির্জাপুর উপজেলা সদরের মির্জাপুর এবং আন্ধরা গ্রাম দুটিতে। পাকবাহিনী এবং তাদের স্থানীয় দোসররা গণহত্যা চালিয়ে এশিয়াখ্যাত দানবীর কুমুদিনী হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা রণদা প্রসাদ সাহাসহ ৩১ জন নিরাপরাধ গ্রামবাসীকে হত্যা করে।
৭১’এর ৭ মে ছিল শুক্রবার। উপজেলা সদরে সেদিন ছিল হাটবার। এলাকাবাসী হাটে কেনা-বেচার জন্য কেউ বা হাটে এসেছিলেন, কেউ বা আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। আবার কেউ দুপুরে খাওয়ার পর বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। এমন সময় বেলা আনুমানিক পৌনে তিনটার দিকে পাকবাহিনীর ক্যাপ্টেন আইয়ূর এবং তাদের স্থানীয় দোসর মাওলানা ওয়াদুদের নেতৃত্বে পাকবাহিনীর একটি দল কেউ কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই লৌহজং নদীর পলি মাটিতে গড়া মির্জাপুর ও আন্ধরা গ্রাম দুটিকে ঘিরে ফেলে।
এরপর যাকে যেখানে যে অবস্থায় পায় তাকেই পাখির মতো গুলি করে হত্যা করে এবং বাড়ি ঘরে লুটপাট চালায়। এতে মূহুর্তের মধ্যেই সদা কর্ম চঞ্চল ও কোলাহলপূর্ন গ্রাম দুটি বিরান ভূমিতে পরিণত হয়। ঘাতকদের এই দলটিই সন্ধার পর নারায়গঞ্জের বাসা থেকে দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা ও তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহা রবি এবং কর্মচারী গৌরপদ সাহাকে ধরে নিয়ে শীতলক্ষার পারে হত্যা করে।
পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের এই হত্যাযজ্ঞে মির্জাপুর ও আন্ধরা গ্রামের নারী-পুরুষ শিশুসহ ৩১ জন নিরাপরাধ গ্রামবাসী শহীদ হন। টাঙ্গাইলের প্রথম গণহত্যার শিকার এই শহীদদের স্মরণে মির্জাপুরে আজও কোন স্মৃতি ফলক গড়ে উঠেনি। তবে হালে মির্জাপুরের এই শহীদদের স্মরণে স্মৃতি ফলক নির্মাণের জন্য একটি চিঠি এসেছে বলে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের মির্জাপুর অফিস সূত্রে জানা গেছে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস