বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: তরুণ প্রজন্মই তাঁর লক্ষ্য। তাই দলের ইস্তাহারে রাজ্যের আর্থিক অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে কর্মসংস্থানেই প্রধান গুরুত্ব আরোপ করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজ বুধবার সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে দলীয় ইস্তহার প্রকাশ করবেন তিনি। সেই সঙ্গে রাজ্যে গত সাড়ে সাত বছরে কী বিপুল সার্বিক উন্নয়ন ঘটেছে, তারও তথ্য সম্বলিত একটি পুস্তিকা প্রকাশিত হবে। যেহেতু এবারের নির্বাচনের গুরুত্ব শুধু রাজ্য থেকে দিল্লিতে সাংসদ পাঠানোয় সীমাবদ্ধ নয়, তাই বাংলার উন্নয়ন মডেলকে দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার অন্যতম লক্ষ্যে তৈরি হয়েছে তৃণমূলের ইস্তাহার।
একদিকে দেশের অর্থনৈতিক ‘দুরবস্থা’, অন্যদিকে বিগত রাজ্য সরকারের করে যাওয়া ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে উন্নয়নের কাজ শুরু করতে হয়েছিল মমতা সরকারকে। ২০১৪ সালে বছরে দুই কোটি কর্মসংস্থানের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়ে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি সরকার।
তৃণমূল সহ বিরোধীদের দাবি, মোদির সেই প্রতিশ্রুতি ফাঁকা আওয়াজে পর্যবসিত হয়েছে। তাই তাঁর জমানায় নতুন কাজ পাওয়া দূর অস্ত, উল্টে কর্মসঙ্কোচন হয়েছে। শিল্পের বিকাশ বন্ধ। আড়াই বছর আগে নোটবন্দির জেরে অসংগঠিত ক্ষেত্রে ব্যাপক হারে কর্মচ্যুত হয়েছে মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষক সমাজও।
তৃণমূলের দাবি, বাংলার ছবিটা একেবারেই ভিন্ন। ঋণের বকেয়া মিটিয়েও রাজ্যের উন্নয়ন অব্যাহত শুধু নয়, নতুন নতুন ক্ষেত্রে তা সম্প্রসারিত হয়েছে তাদের আমলে, যা দেশের অন্য রাজ্যগুলির কাছেও দৃষ্টান্ত স্বরূপ। তাই একই সময়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের গুণগত পার্থেক্যের ছবিটাই স্পষ্ট হবে দলের নির্বাচনী ইস্তাহারে। উল্লেখ্য, বাংলার জিএসডিপি বৃদ্ধির হার দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। শিল্পক্ষেত্রে বৃদ্ধির গড় জাতীয় গড়ের থেকে ১৯৪ শতাংশ বেশি। বাংলার পরিষেবা ক্ষেত্রে বৃদ্ধির গড় জাতীয় গড়ের থেকে ২৬ শতাংশ বেশি। বাংলার কৃষি ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বৃদ্ধির গড় জাতীয় গড়ের চেয়ে ২৪৭ শতাংশ বেশি।
কৃষি, শিল্প ও পরিকাঠামো উন্নয়নের উপর দাঁড়িয়ে রাজ্যে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির দিকে নজর দিয়েছে তৃণমূল সরকার। একদিকে নতুন লগ্নির সম্ভাবনাকে কেন্দ্র করে কর্মসংস্থান, অন্যদিকে ক্ষুদ্র ও অতিক্ষুদ্র শিল্পে গত কয়েক বছরে জাতীয় স্তরে রেকর্ড অগ্রগতির প্রেক্ষিতে স্বনির্ভর প্রকল্পের বিকাশের দিগন্ত খুলে গিয়েছে বলে তৃণমূল মনে করে। যার ভরসায় মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, গোটা দেশে যখন লোকে কাজ হারাচ্ছে, বেকারির চাপ বাড়ছে, সেখানে বাংলায় তা হ্রাস পেয়েছে।
অর্থাৎ, মোদি জমানার বিকল্প হিসেবে রাজ্যের সীমিত ক্ষমতায় দেশকে নতুন দিশা দেখিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাই রাজ্যের তরুণ সমাজের দিকে নজর রেখে প্রত্যক্ষ এবং স্বনিযুক্ত কর্মসংস্থানের উপরেই মমতা জোর দিয়েছেন তাঁর ইস্তাহারে। রাজনৈতিক মহলের মতে, দেশের কাছে উন্নয়নের বিকল্প মডেল যে বাংলা হতে পারে, তা স্পষ্ট করে দেওয়াটাও এই নির্বাচনী লড়াইয়ের অন্যতম উদ্দেশ্য। কেননা, এবারের লড়াই দিল্লি অভিমুখী।
ভোটের ফল প্রকাশের পর দেশের পরবর্তী সরকার গঠনের চাবি যে তাঁর হাতেই থাকতে চলেছে, সেই প্রত্যয়ের প্রতিফলন পড়বে দলের নির্বাচনী ইস্তাহারে। যার পরিপূরক হিসেবে ‘মা-মাটি-মানুষের সরকারের উন্নয়ন একনজরে’ শীর্ষক পুস্তিকা ভোটারদের হাতে তুলে দিতে চাইছে তৃণমূল।
বাংলা৭১নিউজ/তথ্যসূত্র:বর্তমান অনলাইন