বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বড় ধরনের জয় প্রত্যাশিত ছিল মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি এ মন্তব্য করেন।একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথমবারের মতো ভাষণ দিলেন শেখ হাসিনা।
ভাষণটি বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও রেডিওতে একযোগে সম্প্রচার করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১০ বছরের উন্নয়নে সাধারণ মানুষ সুফল পেয়েছে বলেই জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে। এ জন্যই একাদশ সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বড় ধরনের জয় প্রত্যাশিত।
ভাষণের শুরুতেই আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয়ের জন্য দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানান তিনি। এছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব দল এবং নৌকার পক্ষে ও বিপক্ষের ভোটারদেরও ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটকে বিপুলভাবে বিজয়ী করার জন্য আমি আপনাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। একইসঙ্গে আমি মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে শোকরিয়া আদায় করছি।
শেখ হাসিনা বলেন, যারা নৌকায় ভোট দিয়ে আমাদের বিজয়ী করেছেন আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। যারা আমাদের ভোট দেননি, আমি তাদেরও ধন্যবাদ জানাচ্ছি; নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব দল, জোট এবং প্রার্থীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য আমি নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা-কর্মচারা এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সশস্ত্র বাহিনীর সব সদস্যের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
বিএনপির পরাজয়ের কয়েকটি কারণ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ জোটের নির্বাচনী কৌশল সম্পর্কে জনগণ ভালোভাবেই জানেন। এ নিয়ে কথা বলতে চাই না। তাদের পরাজয়ের নানা কারণ রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক আসনে ৩-৪ জন বা তারও বেশি প্রার্থী মনোনয়ন, মনোনয়ন নিয়ে ব্যাপক বাণিজ্যের অভিযোগ এবং দুর্বল প্রার্থী মনোনয়ন, নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে কে প্রধানমন্ত্রী হবেন-সে বিষয়ে অনিশ্চয়তা, নিজেরা জনগণের জন্য কী করবে, সে কথা তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। অপরদিকে ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কী ধরনের প্রতিহিংসামূলক ব্যবস্থা নেবে-তাদের প্রচারণায় সেটি প্রাধান্য পেয়েছে বলে উল্লেখ করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।
পরাজয়ের কারণ তুলে ধরে শেখ হাসিনা আরও বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করা ছাড়া নিজেদের সাফল্যগাথা তারা তুলে ধরতে পারেনি, ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামাতের দেশব্যাপী অগ্নি-সন্ত্রাস ও ধ্বংসাত্বক কর্মকান্ড সাধারণ মানুষের মন থেকে মুছে যায়নি।
এছাড়া বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতাদের মনোনয়ন তরুণ ভোটাররা মেনে নিতে পারেনি। তরুণরা আর যাই হোক স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির পক্ষ নিতে পারে না।
প্রসঙ্গত, নিরঙ্কুশ জয়ে ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশ্ব নেতাদের অনেকেই অভিনন্দন জানিয়েছেন।এরমধ্যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট, সৌদি আরবের বাদশা সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদ এবং ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানসহ অনেক দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইতিহাস গড়ে জয় পেয়েছে নৌকা। টানা তৃতীয়বারের মতো নির্বাচিত হয়ে আগামী পাঁচ বছর দেশ পরিচালনার দায়িত্বগ্রহণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গত ৩০ ডিসেম্বর শেষ হওয়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ পেয়েছে ২৫৯টি আসন।জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট পেয়েছে ৮ এবং জাতীয় পার্টি পেয়েছে ২২টি আসন।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ