বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: এমন একটি ম্যাচই দেখার জন্যই হয়তো চাতক পাখির মত অপেক্ষায় থাকেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। এমন ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় কালেভদ্রে। যদিও এমন ম্যাচগুলোতে স্রেফ অসহায় হয়ে যেতে হয় বোলারদের। ব্যাটসম্যানদের রান বন্যায় ভেসে যাওয়া ম্যাচটিতে কোনো প্রতিপক্ষ ৪০০ প্লাস রান করে ফেললেও শেষ পর্যন্ত কে জিতবে সেটা আগাম বলতে পারে না কেউ।
গ্রানাডার সেন্ট জর্জে ন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে কাল রাতে তেমন একটি ম্যাচেরই অবতারণা করলো ইংল্যান্ড এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যার পরতে পরতে ছড়িয়ে ছিল রোমাঞ্চ আর উত্তেজনা। ব্যাটসম্যানদের জয়জয়কারের এই ম্যাচে শেষ মুহূর্তে নায়ক হয়ে উঠলেন একজন স্পিনার। যিনি কি না মাত্র এক ওভারে ভিলেন থেকে হয়ে উঠলেন ম্যাচ জয়ের নায়ক। শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ডের জয় মাত্র ২৯ রানের।
ছক্কার রেকর্ড গড়ে স্কোরবোর্ডে ইংল্যান্ডের রান ওঠে ৪১৮। ওয়ানডে ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ডও ইংল্যান্ডের, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪৮১ রান। এবার সেন্ট জর্জে ইংল্যান্ডের ৪১৮ রান দেখে অনেকেই তাদের নিশ্চিত জয় ধরে নিয়েছিল।
কিন্তু প্রতিপক্ষ দলে যখন ক্রিস গেইলের মত ব্যাটসম্যান রয়েছেন, তখন সেই ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজও যে ছেড়ে কথা বলবে না, তা নিশ্চিত ধরেই নেয়া যায়। বলেওনি। ক্রিস হেনরি গেইলের দানবীয় রূপ দেখে নিলো ইংলিশ বোলাররা। ৫৫ বলে সেঞ্চুরি করার পর ৯৭ বলে ১৬২ রান করেন তিনি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজও সেই ৪১৮ রান তাড়া করে পুরোপুরি জয়ের দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছিলো। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ক্যারিবীয়দের জন্য ভিলেনে পরিণত হলেন ইংলিশ স্পিনার আদিল রশিদ। যিনি আগের ৯ ওভারে ৮৩ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ১ উইকেট। কিন্তু ৪৮তম ওভারে এসে নিয়ে নিলেন ক্যারিবীয়দের শেষ ৪ উইকেট। ওভারের শেষ ৫ বলেই নিয়েছেন ৪ উইকেট।
আদিল রশিদের এই বিধ্বংসী ওভারেই শেষ হয়ে গেলো ক্যারিবীয়দের স্বপ্ন। তিন ওভারে যাদের প্রয়োজন ছিল ৩২ রান। হাতে তখনও ৪ উইকেট। এমন পরিস্থিতিতে বল করতে এসে প্রথম বলে দিলেন ২ রান। ওই বলেই ক্যাচ ড্রপ হয়েছিল অ্যাশলে নার্সের। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বলে ফিরিয়ে দিলেন নার্স এবং ব্র্যাথওয়েটকে। চতুর্থ বলটা দেবেন্দ্র বিশু কোনমতে ঠেকালেন। পঞ্চম এবং ষষ্ঠ বলে নিলেন বিশু এবং থমাসের বাকি দুই উইকেট।
নিশ্চিত জয়ের অবস্থান থেকে হেরে গেলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্রিস গেইল যে ভিত রচনা করেছিলেন, তার ওপর দাঁড়িয়ে কার্লোস ব্র্যাথওয়েট এবং অ্যাসলে নার্স জয়ের একেবারে দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছিলেন। কিন্তু এক ওভারেই আদিল রশিদ সব চুরমার করে দিলেন। ইংল্যান্ডকে এনে দিলেন স্বপ্নের চেয়েও অবিশ্বাস্য এক জয়।
বাংলা৭১নিউজ/এমএইচ