প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কমবেশি চিনিযুক্ত খাবার সবাই খান। তবে স্বাস্থ্য সচেতনরা অবশ্য মিষ্টি খাবার দেখলেই ভয় পান! কারণ শরীরের জন্য চিনিযুক্ত বা মিষ্টি খাবার মোটেও ভালো নয়। এ বিষয় কমবেশি সবারই জানা।
ওজন কমানো থেকে শুরু করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে খাদ্যতালিকা থেকে চিনি বাদ দেওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। আসলে চিনি রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে তোলার পাশাপাশি শারীরিক বিভিন্ন ব্যাধির কারণ হয়ে দাড়ায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীর সুস্থ রাখতে খুব সীমিত পরিমাণে চিনি ব্যবহার করতে হবে। হেলথলাইনে প্রকাশিত এক গবেষণা অনুসারে, অতিরিক্ত চিনি খেলে ফ্যাটি লিভার, টাইপ ২ ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
আর যদি আপনি চিনি খাওয়া পুরোপুরি বাদ দিয়ে দেন, তাহলে আপনার শরীর কিন্তু ধন্যবাদ জানায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক একটানা ৩০ দিন অর্থাৎ একমাস চিনি না খেলে শরীরে ঠিক কী কী ধরনের পরিবর্তন ঘটে।
ব্লাড সুগার
চিনি-সমৃদ্ধ খাবার খেলে এমনিতেই রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায় ও টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। মিষ্টি জাতীয় জিনিস যেমন- ক্যান্ডি, অ্যনার্জি ড্রিংক দ্রুত রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়ায়।
এ কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে ও ইনসুলিনের মাত্রা বজায় রাখতে অবশ্যই চিনিযুক্ত খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে। যদি আপনি ৩০ দিন চিনি একদমই না খান তাহলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আসবে খুব দ্রুত।
বর্তমানে তরুণদের মধ্যে স্থূলতার সমস্যা দেখা দিতে শুরু করেছে। চিনি দিয়ে তৈরি খাবারের বিভিন্ন লোভনীয় পদ খেতে অভ্যস্ত এখনকার তরুণরা। তবে এসব খাবার শরীরের জন্য যে কতটা ক্ষতিকর তা হয়তো অনেকেরই জানা নেই।
আর দৈনিক এসব খাবার খাওয়ার কারণে মুটিয়ে যাচ্ছেন সবাই। চিনি থেকে তৈরি খাবার ও পানীয়েও ক্যালোরির পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। ফাইবার, প্রোটিনের মতো পুষ্টিগুণ এগুলোর মধ্যে খুবই কম।
উচ্চ চিনিযুক্ত খাবারের সঙ্গে ওজন বেড়ে যাওয়ার সরাসরি সম্পর্ক আছে। অত্যধিক চিনি খেলে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি তৈরি হয়, যা শরীরের বিভিন্ন অংশের চারপাশে জমা হয়। চিনি থেকে দূরত্ব বজায় রাখার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই ওজন কমাতে পারবেন।
মুখের স্বাস্থ্য
চিনি দিয়ে তৈরি পণ্য আমাদের দাঁতের জন্য খুবই ক্ষতিকর। চিনি মেশানো পানীয় ও খাবার মুখগহ্বর ও মাড়ির বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক উভয়েরই মুখের স্বাস্থ্য খারাপ করে চিনি। আপনি যদি ৩০ দিন চিনি থেকে দূরে থাকতে পারেন তাহলে দেখবেন দাঁতের স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে।
লিভারের স্বাস্থ্য
অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবার, বিশেষ করে উচ্চ ফ্রুক্টোজ খাদ্য, নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, লিভারের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে একটানা ৩০ দিন ‘নো সুগার চ্যালেঞ্জ’ গ্রহণ করেই দেখুন ফলাফল, চমকে উঠবেন আপনি!
হার্টের স্বাস্থ্য
হার্ট আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। তবে অতিরিক্ত চিনিসমৃদ্ধ খাবার হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এর পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ ও খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রাও বাড়ায়।
একমাসের জন্য চিনি খাওয়া বন্ধ করলে তা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কমাতেও সাহায্য করে।
সূত্র: মেডিকোভার হসপিটাল/হিন্দুস্তান নিউজ হাব/প্রেসওয়ার ১৮
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ