বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:২৪ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
রাজধানীতে পঙ্গু হাসপাতালে আগুন পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে ইইউর সহায়তা চাইলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা রমজান শেষ না হওয়া পর্যন্ত পণ্যের শুল্কে পরিবর্তন আনবে না সরকার অংশীজনরা কী চান তার ওপর নির্ভর করবে নির্বাচন কবে হবে ঢাকা ছাড়লেন খালেদা জিয়া ২ লাখ ৩৮ হাজার বেকারের কর্মসংস্থান করবে বেজা খালেদা জিয়াকে বার্তা পাঠিয়ে যা বললেন জিএম কাদের ইসলামী ব্যাংকের ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম উদ্বোধন এলএনজি ও চাল আমদানি, ব্যয় ১০২৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা নাঈমুল ইসলাম খান ও তার পরিবারের দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদক বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বিমসটেক সেক্রেটারি জেনারেলের সাক্ষাৎ প্রথমবারের মতো দেশব্যাপী হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা কবে নাগাদ সব শিক্ষার্থী পাঠ্যবই পাবে জানি না: শিক্ষা উপদেষ্টা ট্রাইব্যুনালের মূল ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধান বিচারপতি পুলিশে চাকরি পাচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে আহত ১০০ জন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় শুনানি মুলতবি সচিবালয়ের গেটে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ পাঁচ মাসে আর্থিক স্থিতিশীলতায় খুব বেশি খুশি নয় বাংলাদেশ ব্যাংক জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণে ৮ পরিচালক নির্বাচিত

৮ বছরেও শেষ হয়নি বিচার কাজ

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০১৯
  • ৯৩ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: সাভারের আমিনবাজারে ডাকাতের তকমা লাগিয়ে ছয় ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা মামলার বিচার কাজ এখনও শেষ হয়নি।

২০১৩ সালের ৮ জুলাই ৬০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করা হয়। এরপর থেকে শতাধিক কার্যদিবসেও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়নি।

চার্জশিটভুক্ত (অভিযোপত্র) ৯২ জন সাক্ষীর মধ্যে অধ্যাবধি ৫২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। এর মধ্যে কোনো কোনো সাক্ষী উল্টো (আসামিপক্ষে) সাক্ষ্য দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষ জানিয়েছে যারা সাক্ষ্য দিতে আসেনি তাদের বাদ দিয়েই সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব শেষ করা হবে।

এদিকে বিচারের দীর্ঘসূত্রতায় চাঞ্চল্যকর এ মামলায় বর্তমানে সব আসামিই জামিনে মুক্ত। এমতাবস্থায় সুবিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে নিহতদের পরিবার। ২০১১ সালের রাতে ১৭ জুলাই শবেবরাতের রাতে সাভারের আমিনবাজারের বড়দেশী গ্রামের কেবলাচরে ডাকাত সন্দেহে মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজের তিন শিক্ষার্থীসহ ছয় কলেজছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

চাঞ্চল্যকর এ মামলায় দু’জন তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য দিলেই সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম শেষ হবে। তবে বিগত ৩ কার্যদিবস ধরে তদন্ত কর্মকর্তারা সাক্ষ্য দিতে আসছেন না। গত বছরের ১১ অক্টোবর সর্বশেষ এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। চলতি বছরের ১০ এপ্রিল এ মামলায় দ্বিতীয় তদন্ত কর্মকর্তা মো. সিরাজুল হকের সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু ওই দিন তিনি না আসায় আদালত সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২৮ এপ্রিল দিন ধার্য করেন। ঢাকার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।

নিহত শিক্ষার্থী টিপু সুলতানের মা কাজী নাজমা সুলতানা বলেন, বিচার যাই হোক, আমি আমার ছেলেকে ফিরে পাব না। অনেকের হয়তো শবেবরাত এলে ওই নির্মম ৬ ছাত্র হত্যাকাণ্ডের কথা মনে পড়ে। কিন্তু আমি মা, আমার জন্য প্রতিদিন শবেবরাত। নিহত ইব্রাহিম খলিলের মা বিউটি বেগম ছেলে হত্যার বিচার চাইতে চাইতে মারা গেলেন। অন্তত ছেলে হত্যার বিচার হলে শান্তি পেতাম।

নিহত ইব্রাহিম খলিলের বাবা আবু তাহের আলী বলেন, দেশে কত মামলার বিচার হচ্ছে আর এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার হচ্ছে না। হত্যাকারীরা ছাত্রদের হত্যার কথাও স্বীকার করেছে। এরপর ৮ বছর পার হয়ে গেল। ছেলের শোকেই তার মা মারা গেল। শবেবরাতের রাতে, আল্লাহর কাছে আমার একটাই চাওয়া; তা হল- খুনিদের বিচার চাই। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের একটাই দাবি, আমাদের ছেলে হত্যার বিচার করুন। ইব্রাহিম খলিলের ভাই ইউসুফ আলী জানান, দীর্ঘদিনেও বিচার শেষ না হওয়ায় তিনি দুঃখে ও ক্ষোভে মামলার খবর নেয়া বাদ দিয়েছেন।

নিহত ইব্রাহিম খলিলের মা বিউটি বেগম ৬ মাস আগে মারা গেছেন। মৃত্যুর আগে গত বছর দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের একটাই দাবি, হয় আমাদের ছেলে হত্যার বিচার করুন, আর তা না হলে নিহত ছয় ছাত্রের বাবা-মাকে একসঙ্গে গুলি করে মেরে ফেলুন।’

নিহত কামরুজ্জামান কান্তর বাবা আবদুল কাদের সুরুজ বলেন, শবেবরাত এলেই ছেলের শোকে কাতর হয়ে যায় কান্তর মা। সারাক্ষণ কান্নাকাটি করে আর আল্লাহর কাছে বিচার চায়। আমার ছেলের নামে ডাকাতির মিথ্যা মামলা দিয়েছিল। পবিত্র রাত বলে আল্লাহর অশেষ রহমতে সত্য ঘটনা উদ্ঘাটন হয়েছে। সরকারই (রাষ্ট্র) যখন আমার মামলার বাদী তাই বিচারের দাবিতে সরকারের দিকেই তাকিয়ে আছি। তিনি আরও বলেন, ইতিপূর্বে আসামিপক্ষ বিভিন্ন হুমকি দিয়েছে।

জানতে চাইলে আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী কৌঁসুলি শাকিলা জিয়াছমিন মিতু বলেন, সাক্ষীরা আদালতে সাক্ষ্য দিতে না আসায় মামলার বিচার কাজ বিলম্ব হচ্ছে। মামলায় অর্ধশতাধিক জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। তবে গুরুত্বরপূর্ণ দু-এক জনের সাক্ষ্য বাদ রয়ে গেছে। এর মধ্যে দ্বিতীয় তদন্ত কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে সাক্ষ্য দিতে আসছেন না। গুরুত্বপূর্ণ আর কয়েকজনের সাক্ষ্য নিয়েই সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করা হবে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ মামলায় সবাই ঠিকমতো সাক্ষ্য দিতে পারেননি। তবে এ মামলায় অনেক আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

বাদীপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ বলেন, মূলত পুলিশ এ মামলায় সাহায়তা করছে না। তারা মামলাটি ভিন্ন খাতে অর্থাৎ ডাকাতি সাজাতে চেয়েছিল। এজন্য তারা সাক্ষীদের আনতেও তাদের তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। এ মামলায় অনেকে আসামিই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মূলত ওই স্বীকারোক্তির ভিত্তিইে আমরা আইননি লড়াই করে যাবো। আশা করছি, আসামিদের যথাযথ সাজা দেবেন আদালত।

২০১১ সালের রাতে ১৭ জুলাই শবেবরাতের রাতে সাভারের আমিনবাজারের বড়দেশী গ্রামের কেবলাচরে ডাকাত সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয় মিরপুর সরকারি বাংলা কলেজের তিন শিক্ষার্থীসহ ছয় কলেজছাত্রকে। নিহতরা হলেন- তৌহিদুর রহমান পলাশ, ইব্রাহিম খলিল, কামরুজ্জামান কান্ত, টিপু সুলতান, সিতাব জাবির মুনিব ও শামস রহিম শামীম।

নিহতদের সঙ্গে থাকা বন্ধু আল-আমিন গুরুতর আহত হলেও পরে প্রাণে বেঁচে যান। ঘটনার পর কথিত ডাকাতির অভিযোগে বেঁচে যাওয়া আল-আমিনসহ নিহতদের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় একটি ডাকাতি মামলা করেন স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী আবদুল মালেক। ওই সময় পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা গ্রামবাসীকে আসামি করে সাভার মডেল থানায় আরেকটি মামলা করে। পুলিশ, সিআইডির হাত ঘুরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে চাঞ্চল্যকর এ মামলার তদন্তভার র‌্যাবের হাতে দেয়া হয়। তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারি র‌্যাবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ উদ্দিন আহমেদ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা নিরীহ ছাত্রদের হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে জখম করে। পরে হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিতে মসজিদের মাইকে সবাইকে ডাকাত আসার ঘোষণা দেয় এবং থানায় মিথ্যা মামলা করে।

বাংলা৭১নিউজ/এইচ.এস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com