বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: ঈদুল আজহা উপলক্ষে এবার টানা ৯ দিনের ছুটি পড়ছে। ৮ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) অফিস করে বিকেল কিংবা রাতে রওয়ানা দেবেন অনেকেই। অনেকে আবার একটু স্বস্তির আশায় পরদিন শুক্রবার (৯ আগস্ট) রওয়ানা দেবেন। মূলত এ কারণেই ৮ ও ৯ আগস্টের অগ্রিম বাস টিকিটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। তবে বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রেতারা বলছেন, ৮ ও ৯ ও ১০ আগস্টের টিকিটের চাহিদার বেশি হলেও সে তুলনায় টিকিট নেই।
টিকিট প্রত্যাশীরা বলছেন, কাঙ্ক্ষিত দিনের টিকিট পাওয়া গেলেও কাঙ্ক্ষিত আসনের টিকিট মিলছে না। অনেকেই বাধ্য হয়েই বাসের পেছনের দিকের সিটের টিকিট কিনছেন। শনিবার (২৭ জুলাই) সকালে গাবতলী ও কল্যাণপুর বাস কাউন্টার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
কল্যাণপুরে শ্যামলী এনআর ট্রাভেলস কাউন্টারে কথা হয় মিঠু নামে এক টিকিট প্রত্যাশীর সাথে। তিনি বলেন, রংপুর যাব। কাউন্টারে টিকিট যে নেই তা নয়। পরিচিতরা মানের (ভালো মানের) টিকিট পাচ্ছেন। আমিও পেয়েছি, তবে ৪টি ভালো সিটের টিকিট পেলেও ২টি পেছনের সিট।
ডিপজল পরিবহনের কাউন্টারে যেন টিকিট প্রত্যাশীদের হাহাকার। সাইদুর রহমান নামে দিনাজপুরের এক যাত্রী বলেন, এখানে গতকালও (শুক্রবার) দীর্ঘ লাইন ছিল। আজও। কিন্তু টিকিট শেষ। কোনো দিনেরই টিকিট নেই। তাই বাধ্য হয়ে ফিরে যাচ্ছি। অন্য পরিবহনে খোঁজ নিতে হবে।
ডিপজল পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার সৈয়দ মো. ইসলাম বলেন, আমাদের বাসের সংখ্যা এবার সীমিত। সর্বোচ্চ ১৫টি গাড়ি হয়তো চলবে। যে কারণে ভালো মানের টিকিট সব গতকালই বিক্রি হয়ে গেছে। বাসের পেছনের সিটের টিকিট অবিক্রিত আছে। এখন সেসব বিক্রি হচ্ছে।
শ্যামলী পরিবহনের কল্যাণপুর কাউন্টারের ম্যানেজার আব্দুর রশিদ বলেন, সবাই যদি ৮ ও ৯ আগস্টের টিকিট চেয়ে বসেন তাহলে তো টিকিট দেওয়া সত্যি মুশকিল। কারণ, ২-১ দিনের চাহিদা বেশি থাকলেও টিকিট তো সীমিত। তবে ৬, ৭, ১০ ও ১১ তারিখের টিকিট পর্যাপ্ত রয়েছে।
এসআর পরিবহনের সামনে ইকবাল নামে গাইবান্ধার টিকিট প্রত্যাশী বলেন, বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বিকেলের টিকিটের জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। কাউন্টারের সামনে পৌঁছার পর জানলাম টিকিট নেই। রাতে চাইলাম তাও নেই। পরদিন ৯ আগস্ট সকালের টিকিট থাকলেও পেছনে। অগত্যা দুপুরের টিকিট কাটতে হলো।
কামাল হোসেন নামের এক যাত্রী বলেন, ঠাকুরগাঁও যাব। কিন্তু হানিফ পরিবহনে ৮ আগস্ট রাতের টিকিট নেই। তবে দিনাজপুর পর্যন্ত টিকিট ছিল তিনটি। তাই নিয়েছি। তাও তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে পারব।
হানিফ পরিবহনের জেনারেল ম্যানেজার মোশারফ হোসেন, প্রতিবারই ঈদযাত্রার আগাম টিকিট বিক্রির সময় বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। নির্দিষ্ট ২ বা ১ দিনের টিকিটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। আমরা বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কিছু গাড়ি ৮ ও ৯ আগস্টের জন্য বাড়িয়েছি। তবুও চাহিদা সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। তবে টিকিট প্রত্যাশীদের অন্যান্য দিনের টিকিট দেওয়া যাবে।
জানা গেছে, এবার ঈদুল আজহায় দীর্ঘ ছুটি কাটানোর সুযোগ রয়েছে। একদিন বাড়তি ছুটির ব্যবস্থা করতে পারলে সরকারি চাকরিজীবীরা টানা ৯ দিন ছুটি কাটাতে পারবেন। কারণ, এবার কোরবানি ঈদের ছুটির আগে-পরে সাপ্তাহিক ছুটি ও জাতীয় শোক দিবসের ছুটি রয়েছে।
বাংলাদেশে ১২ আগস্ট ঈদুল আজহা হলে ছুটি থাকবে ১১, ১২ ও ১৩ আগস্ট অর্থাৎ রোব, সোম ও মঙ্গলবার। এর আগে শুক্র ও শনিবার (৯ ও ১০ আগস্ট) দু’দিন সাপ্তাহিক ছুটি। ঈদের ছুটির পর ১৪ আগস্ট (বুধবার) অফিস খোলা। এর পরের দিন ১৫ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) জাতীয় শোক দিবসের ছুটি। শোক দিবসের ছুটির পর ১৬ ও ১৭ (শুক্র ও শনিবার) দু’দিন আবার সাপ্তাহিক ছুটি। অর্থাৎ ৯ আগস্ট থেকে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত ৯ দিনের মধ্যে শুধুমাত্র ১৪ আগস্ট (বুধবার) অফিস খোলা থাকছে।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে শুক্রবার (২৬ জুলাই) থেকে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলগামী বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। ১২ আগস্ট সম্ভাব্য ঈদ ধরেই অগ্রিম টিকিট বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান বাংলাদেশ বাস ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষ।
তিনি বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে শুক্রবার সকাল থেকে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলগামী বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/আইএম