বাংলা৭১নিউজ,মেহেরপুর প্রতিনিধি: মেহেরপুরের মালিক-শ্রমিক দ্বন্দ্বে তিন রুটে টানা ৬ দিন বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন এসব সড়কের যাত্রীরা। সেই সুযোগে মহাসড়কে চলছে অবৈধ ঝুঁকিপূর্ণ ভটভটি, নছিমন, করিমন। সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ নেই মালিক-শ্রমিক নেতাদের।
জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান জানান, বর্তমান নিয়মে কুষ্টিয়া- মেহেরপুর সড়কে দিনে ১৮টি বাস দুইবার করে চলাচল করে। মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কে ৮টি গাড়ি দুইবার করে চলাচল করে। মুজিবনগর-মেহেরপুর রুটে ১০টি বাস দিনে দুইবার যাতায়াত করে। প্রতিটি গাড়ি একটানা ৩৬দিন ওই তিন সড়কে চলাচল করার পর একটানা ৪৬ দিন টার্মিনালে বসে থাকে। মেহেরপুরের মোট বাসের সংখ্যা ৮৬টি। প্রতিদিন তিন সড়কে ৩৬টি গাড়ি চলে। বাকি ৫০টির ১৫০ জন শ্রমিক বসে থাকেন ৪৬দিন।
তিনি আরও বলেন,, দীর্ঘ সময় ধরে চলা মালিক সমিতির এই নিয়ম শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারছে না। বর্তমানে একটি বাসে চালকসহ আরও দুই জন সহকারি কাজ করে। ওই তিন জনকে প্রতিদিন মোট ১৭০০ টাকা দেয়া হয়। ওই টাকা দিয়ে একটানা ৩৬দিন শ্রমিকদের সংসার ভালই চলে। কিন্তু বাকি ৪৬দিন সংসার চালানো সম্ভব হয় না। এ নিয়ম থেকে বেরিয়ে এসে মালিক-শ্রমিক উভয়ের ভাল হয় এমন একটি নিয়ম তৈরি করতে হবে। শ্রমিকদের দাবি তাদের প্রতিদিন গাড়ি চালাতে দিতে হবে, নতুবা মাসিক বেতন সিস্টেম চালু করতে হবে।
বাসচালক রমিজ উদ্দিন বলেন, বাসের চাকা ঘুরলে সংসারের চাকা ঘোরে। একটানা দীর্ঘদিন বসে থাকতে হয় বলে অনেকেই এই পেশা ছেড়ে অন্য কাজ ধরেছেন। যাদের অন্য কোনো কাজের অভিজ্ঞতা নেই শুধুমাত্র তারাই বাসের কাজ করছে।
হামিদুল আলম নামে আরেক চালক বলেন, মাঠের দিনমজুর, আর আমাদের মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য নেই। দিন হাজিরা হিসেবে মজুরি পাওয়া যায়। এ কারণে প্রতিদিন বাস চলাচল জরুরি। বর্তমান নিয়মে চলতে থাকলে বাস শ্রমিকের সংখ্যা দিন দিন কমবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাস মালিক সমিতির অনেকে শ্রমিকদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, শ্রমিকরা প্রতিদিন বাস চালাতে চায়। প্রতিদিন বাস চললে মালিক-শ্রমিক উভয়েরই লাভ। এ ব্যপারে মালিক সমিতি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসুল বলেন, তাদের সংগঠনটি সব সময় শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষা করে এসেছে। বর্তমানে যে নিয়মে বাস চলছে তা মালিক-শ্রমিক মিলেই তৈরি করেছিল।
তিনি বলেন, গত বছর শ্রমিক নেতারা একই দাবি নিয়ে আন্দোলন করেছিল। ওই সময় তাদের দাবি মেনে দিনে একটি ট্রিপ করা হয়েছিল যাতে করে জেলার সবকটি বাস সচল থাকে। কিছুদিন পর শ্রমিকরা আবারও পুরনো নিয়মে ফেরত আসে। তাদের দাবির বিষয়ে মালিক সমিতি বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার (ভারপ্রাপ্ত) শেখ জাহিদুল ইসলাম বলেন, আজ (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় বাস মালিকদের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে। সেখানে আলোচনা করে শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এস এইচ