বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: ২৬ বছর পর পূর্ণাঙ্গ সিনেট পেয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে পাঁচ ছাত্র প্রতিনিধি সিনেটে যাওয়ার মাধ্যমে ১০৫ সদস্যের সিনেট পূর্ণাঙ্গ হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশের ১১(১) ধারা অনুযায়ী এই সিনেট ‘ভিসি প্যানেল’ নির্বাচন করবে। তিন সদস্যের এই প্যানেল থেকে পরবর্তী ভিসি মনোনীত করবেন রাষ্ট্রপতি (বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য)।
আগামীকাল বুধবার বেলা সাড়ে ৩টায় প্যানেল নির্বাচনের লক্ষ্যে ১৯৭৩-এর আর্টিক্যাল ২১(২) ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে ভিসি সিনেটের বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করেছেন। এর আগে সর্বশেষ ১৯৯৩ সালে সিনেট পূর্ণাঙ্গ ছিল।
প্যানেল নির্বাচনের বিষয়ে ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, প্রকৃত পক্ষে স্বাধীনতার পর পূর্ণাঙ্গ সিনেট ছিল ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধুর সময়ে।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুযায়ী সিনেট সদস্যরা তিন সদস্যের প্যানেল নির্বাচন করবে। সেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতির কাছে উত্থাপন করা হবে। তিনি সেখান থেকে একজনকে ভিসি হিসেবে মনোনীতি করবেন। জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ সময়েই ভিসিরা ব্যক্তিগত বা দলীয় স্বার্থে সিনেট পূর্ণাঙ্গ করতে কার্যকর উদ্যোগ নেননি বা আগ্রহ দেখাননি।
অনেকে আবার উদ্যোগ নিলেও তা ভেস্তে গেছে। ১৯৯৩ সালের পর ১৯৯৬ সালে সিনেট অধিবেশনে ৭৮ জন উপস্থিত ছিলেন।
২০০৪ সালে ছিলেন ৮৫ জন। ৪ বছর ৭ মাস অনির্বাচিতভাবে দায়িত্ব পালনের পর ২০১৩ সালের ২৪ আগস্ট ১০৫ সিনেট সদস্যের মধ্যে মাত্র ৫০ জন নিয়ে অধিবেশন ডাকেন তৎকালীন ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
সেখানে উপস্থিত ছিলেন মাত্র ৩৬ জন। এর পর ২০১৭ সালে সিনেটের মোট সদস্য ছিলেন ৫৫ জন। অধিবেশনের দিন উপস্থিত ছিলেন ৪৭ জন।
এর পর ২০১৭ সালের ৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মো. আখতারুজ্জামানকে সাময়িকভাবে ২৮তম ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেন। তিনি দায়িত্বগ্রহণের প্রায় দুই বছর পর সিনেট পূর্ণাঙ্গ করে অধিবেশন আহ্বান করলেন।
দীর্ঘ সময় পর পূর্ণাঙ্গ সিনেটের মাধ্যমে ভিসি প্যানেল নির্বাচনের বিষয়ে ভিসি বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ধারণ করে কাজ করেছি। ফলে দীর্ঘ সময় পর পূর্ণাঙ্গ সিনেট গঠন করা সম্ভব হয়েছে।
ভিসির আলোচনায় ৫ শিক্ষক
এদিকে সিনেট অধিবেশন সামনে রেখে সরগরম হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজনীতি। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকদের নীল দলের একক আধিপত্য রয়েছে, তাই তাদের মধ্য হতেই নির্বাচিত হবে পরবর্তী ভিসি।
এটি অনেকটা নিশ্চিত। সে কারণে নীল দলের সিদ্ধান্তের দিকেই চোখ সবার। রোববার নীল দল থেকে সিনেট সদস্য হিসেবে নির্বাচিত ৩৩ শিক্ষকের ৩১ জনকে নিয়ে একটি বৈঠক হয়। দুজন অনুপস্থিত ছিল এই বৈঠকে।
সেখানে প্রাথমিকভাবে পাঁচ শিক্ষকের নাম প্রস্তাবনায় আসে। তারা হলেন- বর্তমান ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমেদ, প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নীল দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ড. হুমায়ুন কবির। এদিকে সোমবার সন্ধ্যায় নীল দল থেকে নির্বাচিত শিক্ষক প্রতিনিধিরা এক বৈঠকে মিলিত হন।
সেখানে উপরোক্ত পাঁচজনের পাশাপাশি আলোচনায় আসে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এম অহিদুজ্জামান এর নাম।
বাংলা৭১নিউজ/এসআই