বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:২০ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
হাসিনার দালালরা অপকর্মের ফাইল পুড়িয়ে দিল: সারজিস ৪০ কোটির মধ্যে ৩০ কোটি বই ছাপানো বাকি কর্ণফুলীতে ভেসে উঠলো নিখোঁজ দুই পর্যটকের মরদেহ ফায়ার সার্ভিস কর্মীকে চাপা দেওয়া ট্রাকচালক ধরা পড়ল শিক্ষার্থীদের হাতে সিরিয়ায় আসাদপন্থিদের ‘অতর্কিত হামলায়’ ১৪ নিরাপত্তা সদস্য নিহত ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সচিবালয় এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার, দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন আট-নয় তলার নথিপত্র সব পুড়ে গেছে বলে ধারণা ফায়ার ডিজির পঞ্চগড়ে বইছে শৈত্যপ্রবাহ ভারতের মহারাষ্ট্রে ১৭ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার অন্তর্বর্তী সরকারের উদারতা জাতিকে অনন্তকাল ভোগাবে : হাসনাত আব্দুল্লাহ স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও দেশকে অস্থির করার ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে ভেতরে প্রবেশ করছেন সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা লামায় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ড. ইউনূসের নিন্দা আগুনের সূত্রপাত কীভাবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি : ফায়ারের ডিজি সচিবালয়ের আগুন ৬ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে সড়কে পড়ে আছে ফায়ারকর্মী নয়নের হেলমেট ও তাজা রক্ত সচিবালয়ে আগুন: যে হুঁশিয়ারি দিলেন আসিফ মাহমুদ আগুন ৬ তলায় লেগে উপরে গেছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সবাই একসঙ্গে শান্তিতে থাকতে চাই : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

২৫ হাজার কোটি টাকার সম্পদের পাহাড় রাশেদ খান মেননের

বাংলা৭১নিউজ ঢাকা:
  • আপলোড সময় বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৪
  • ১৪ বার পড়া হয়েছে

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। আওয়ামী সরকারের আমলে ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক। রমনা, মতিঝিল ও সবুজবাগ থানা নিয়ে গঠিত ঢাকা-৮ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।

ছিলেন সমাজ কল্যাণমন্ত্রী এবং বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী। দায়িত্ব পালনকালে রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘ ৮ বছর।

অভিযোগ, বিগত ১৬ বছরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের একান্ত দোসর ও সহযোগী হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ২০ থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি বাণিজ্য, মাদক ব্যবসা, স্বর্ণ চোরাচালান, ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে চাঁদা, নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্য, বিমান ক্রয় দুর্নীতি ও অবৈধভাবে বরাদ্দ নিয়ে দেশে এবং বিদেশে ওই সম্পদ গড়েছেন।

অবৈধ সম্পদের মধ্যে রয়েছে রাশেদ খান মেননের নামে লন্ডনে ২৫টি বাড়ি, কানাডায় স্ত্রীর নামে ৫টি বাড়ি ও আমেরিকায় ২টি বাড়িসহ বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার। অন্যদিকে ঢাকার গুলশানে ৪টি ফ্ল্যাট ও বানানীতে ২টি ফ্ল্যাটসহ ঢাকা ও ঢাকার বাইরে হাজার বিঘা জমির মালিকানা রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া নিজ ও আত্মীয় স্বজনের নামে দেড় হাজার কোটি টাকা ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন বলে জানা গেছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) গোয়েন্দা অনুসন্ধানে অভিযোগের বেশকিছু দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ার পর প্রকাশ্যে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। সম্প্রতি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরপরই অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করে দুদকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দেশের চলমান দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে দুদক সদ্য সাবেক ক্ষমতাসীন মন্ত্রী-এমপি ও আমলাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান কাজ চলমান। দুদকের গোয়েন্দা অনুসন্ধানে তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত পাওয়ায় কমিশন থেকে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অনুসন্ধানে প্রকৃত সত্য উদঘাটিত হবে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য হয়ে সমাজ কল্যাণমন্ত্রী ও এবং বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী হন। তিনি ২০০৯ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভিকারুননেছা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, আডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি হিসেবে অবৈধভাবে শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ করে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।

ছাত্র/ছাত্রী ভর্তি বাণিজ্য, মাদক ব্যবসা, স্বর্ণ চোরাচালান ব্যবসা, ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে চাঁদা আদায়, ক্যাসিনো ব্যবসার চাঁদা, সমাজকল্যাণ ও বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্য, বিমান ক্রয়, অবৈধভাবে বরাদ্দ প্রদান ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে ২০ থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা অবৈধভাবে অর্জন করে দেশে এবং বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, রাজধানীর কাকরাইলের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হিসেবে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ওই সময়ে তিনি বিধি বহির্ভূতভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আদেশ অমান্য করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অযোগ্য ব্যক্তিদের সহকারী শিক্ষক, হিসাব রক্ষক উচ্চমান সহকারী, অফিস সহকারী, অফিস সহায়ক ও সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগ দেন। দায়িত্বপালনকালে তিনি ১৮২ জনকে নিয়োগ দিয়ে প্রায় ১৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

এ ছাড়া ওই প্রতিষ্ঠানে ২৭ জন সহকারী শিক্ষক থেকে প্রভাষক পদে অবৈধভাবে পদোন্নতি দিয়ে প্রায় ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছেন। অনুরূপভাবে ১৫ জন প্রভাষককে সহকারী অধ্যাপক পদে ২০১২ সনে পদোন্নতি দিয়ে প্রত্যেকের নিকট থেকে ১২ লাখ টাকা করে ১৫ জনের কাছ থেকে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা ঘুষ নেন।

অথচ এডহক কমিটির শিক্ষক/কর্মচারী/পদোন্নতি দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না। এমনকি ২০০৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের তহবিল থেকে বিভিন্ন খাতে ভুয়া ভাউচারে ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন মেনন চক্র।

অভিযোগ সূত্র আরও বলছে, ২০০৯ থেকে ২০১৬ এবং ২০২২ থেকে ২০২৪ সালে প্রতিষ্ঠানের অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের অবৈধভাবে দুর্নীতির মাধ্যমে ৪০ শতাংশ টাকা নিয়ে ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকা প্রদান করিয়া প্রতিষ্ঠানের অর্থ লোপাট করা হয়েছে। অথচ এ ধরনের অবসর সুবিধা বাংলাদেশের কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নাই। যেখানে বাংলাদেশের সব এমপিওভুক্ত শিক্ষক/কর্মচারীরা ৪ শতাংশ গ্রাইচুইটিবাবদ অবসরভাতা সুবিধা পেয়ে থাকে।

অথচ উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ও কর্মচারীদের অবসরভাতার নামে নিজেরাই হাতিয়ে নিয়েছেন। যা দণ্ড বিধির ৪০৯/৪২০ ধারা ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অপরাধ করেছেন। এই চক্রের অন্যান্য সদস্যরা হলেন সাবেক জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম, প্রভাষক শ্যামলী হোসেন এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষরা।

অন্যদিকে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২০০৯ হতে ২০১৬ সাল পর্যন্ত পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হিসেবে থাকাকালীন অনিয়মতান্ত্রিকভাবে শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ এবং ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির বাণিজ্য করে ৮ বছরে ৬ হাজার কোটি টাকা অবৈধভাবে অর্জন করেছেন।

আর রাশেদ খান মেনন সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী থাকাকালে অবৈধভাবে চাকুরিতে নিয়োগ, টেন্ডার বাণিজ্য, স্বর্ণ চোরাচালান, বিমান ক্রয় অবৈধভাবে বরাদ্দ প্রদানসহ বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে কমপক্ষে ১৫ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি ও অনিয়ম করে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।

রাশেদ খান মেননের যত অবৈধ সম্পদ

সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন লন্ডনে ২৫টি বাড়ি ক্রয় করেছেন। যার আনুমানিক মূল্য ৮ হাজার কোটি টাকা। কানাডায় তার স্ত্রীর নামে ৫টি বাড়ি ক্রয় করেছেন। যার মূল্য প্রায় ১২০ কোটি টাকা এবং আমেরিকায় ২টি বাড়ি ও বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করা হয়েছে।

অন্যদিকে ঢাকার গুলশান-২, রোড-৫, বাড়ি নং-২৭ এ ৪টি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন যার মূল্য ১৫ কোটি টাকা। বনানী রোড নং-৪, বাড়ি নং-১৬ তে ৯ কোটি টাকার ২টি ফ্ল্যাট, ঢাকার আশুলিয়া ও সাভারে ৪৫০ কোটি টাকার ১৬০ বিঘা জমি, পূর্বাচলে ১০ কাঠার ১টি ও ৫ কাঠার ৪টি ৪০ কোটি টাকার প্লট ও কেরাণীগঞ্জ দক্ষিণ হাইওয়ে রোডে ২৫০ কোটি টাকার ২০ বিঘা জমিসহ রিসোর্ট ক্রয় করেছেন।

আর ঢাকার বাইরে বরিশাল জেলার উজিরপুর থানায় তিন কোটি টাকা মূল্যের ৩০০ বিঘা জমি, নিজ নামে, স্ত্রীর নামে, ভাইদের নামে, সন্তানদের নামে ও বিভিন্ন ব্যক্তির নামে দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে এফডিআর রয়েছে। যার পরিমাণ প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা।

গত ২২ আগস্ট বিকেলে গুলশানের বাসা থেকে রাশেদ খান মেননকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ব্যবসায়ী আবদুল ওয়াদুদ হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। কয়েকদফা রিমান্ড শেষে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন বলে জানা গেছে।

বাংলা৭১নিউজ/এসএন

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com