হিমালয় কন্যা খ্যাত সীমান্ত জেলা পঞ্চগড়ে শুরু হয়েছে শীতের আমেজ। সোমবার (১ নভেম্বর) সকালে তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন ১৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। দিনে গরম আবহাওয়া থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয় এই শীতের আমেজ। রাতভর টিপটিপ করে শিশির পড়ে। ভোরে এলাকার ধানখেত, গাছের পাতা ও ঘাসের উপর চিকচিক করা সেই শিশিরফোঁটা জানান দেয় শীতের আগমনী বার্তা।
পঞ্চগড়সহ আশপাশ এলাকায় সাধারণত নভেম্বরের শুরু থেকেই শীতের তীব্রতা বাড়তে থাকে। আর অক্টোবরের শেষ দিকে শুরু হয় শীতের আমেজ। কিন্তু এবার অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকেই শীতের আমেজ শুরু হয়। কয়েকদিন ধরে এখানে রাতভর কুয়াশা পড়ছে। সাথে উত্তরের ঠান্ডা হাওয়া জানান দিচ্ছে শীতের পদধ্বনি। শীত থেকে বাঁচতে সন্ধ্যার পর মোটরবাইক চালকরা গরম কাপড় পরতে শুরু করেছেন। কাঁথা-কম্বল আর শীতের কাপড় নিয়ে শুরু হয়েছে স্থানীয় মানুষের শীত নিবারণের প্রস্তুতি।
এদিকে রাতে শীতের আমেজ থাকলেও দিনে রোদের কারণে বেশ গরম থাকে। দিনভর ঝলমলে রোদের কারণে শীতের অনুভূতি থাকে না। গরম আর ঠান্ডার কারণে বেড়েছে মৌসুমী রোগ বালাই। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা জ্বর, সর্দি, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে বেড়েছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, দুদিন ধরে তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হচ্ছে। রোববার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সোমবার সকালে সর্বনিম্ন ১৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
আধুনিক সদর হাসপাতলের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মনোয়ার হোসেন বলেন, প্রতি বছর এই সময়ে আবহাওয়া পরিবর্তন জনিত কারণে মৌসুমী রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এবারও এ সময় সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিদিন অসংখ্য রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতলে রোগী ভর্তির সংখ্যাও বেড়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, উত্তরের জেলা পঞ্চগড় একটি শীতপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত। এখানে প্রতিবছর কিছুটা আগেভাগেই শীত শুরু হয় এবং শীত এখানে দেশের অন্য এলাকার তুলনায় কিছুটা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত থাকে। শীত নিয়ে আমাদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব রকম প্রস্তুতি রয়েছে। এছাড়া উত্তরের মানুষ হিসেবে আমাদের শীত মোকাবিলার মানসিক প্রস্তুতিও রয়েছে। প্রতি বছরের মতো এবারও দুস্থ মানুষদের জন্য পর্যাপ্ত কম্বলসহ শীতবস্ত্রের ব্যবস্থা পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
বাংলা৭১নিউজ/পিকে