বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: রাস্তায় একপাল হাতি৷ চোখের সামনে এ দৃশ্য দেখে নিজেকে সামলে রাখা খুবই কঠিন৷ ক্যামেরা রয়েছে অথচ ছবি উঠবে না, তা আবার হয় নাকি? তাই ঝলকে উঠেছিল ফ্ল্যাশ৷ আর তার জেরেই লাটাগুড়ির চন্দ্রচূড় টাওয়ারের কাছে প্রাণ হারালেন বাংলাদেশের পর্যটক সৈয়দ নুর সায়মন বিন কনক৷ বনদপ্তরের নিয়ম অমান্য করে ছবি তুলতে গিয়েই এহেন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে বলেই দাবি বনকর্মীদের৷
পাহাড়-নদী-জঙ্গলে ঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের টানে লাটাগুড়িতে আসেন পাঁচজন বাংলাদেশি পর্যটক৷ কালিম্পংয়ের জলঢাকার দলগাওয়ের একটি রিসর্টে উঠেছিলেন তাঁরা৷ জঙ্গল সাফারি শেষ করে শুক্রবার বিকালে মূর্তি হয়ে নাগরাকাটার খুনিয়া থেকে ফের দলগাওতে যাওয়ার কথা ছিল তাঁদের৷ রিসর্টে যাওয়ার সময় চন্দ্রচূড় টাওয়ারের কাছে রাজ্য সড়কে একদল হাতি চলে আসে৷ চোখের সামনে হাতি দেখতে পেয়ে নিজেকে আর স্থির রাখতে পারেননি সৈয়দ নুর সায়মন বিন নামে এক পর্যটক৷
বছর পঞ্চান্নর ওই পর্যটক বাংলাদেশের বাসিন্দা৷ হাতেই ক্যামেরা রয়েছে অথচ এমন দৃশ্য ফ্রেমবন্দি করবেন না, তা কি আর হতে পারে? তাই তো সঙ্গে সঙ্গেই ছবি তুলতে শুরু করেন তিনি৷ ক্যামেরার ঝলকানিতে রেগে যায় হাতি৷ পর্যটকদের দিকে তেড়ে আসে দামাল৷ বেশিরভাগ পর্যটক দৌড়ে গাড়িতে উঠে পড়েন৷ তবে সৈয়দ ছুটতে গিয়ে পড়ে যান৷ ক্ষিপ্ত অবস্থায় ওই পর্যটককে শুঁড়ের নাগালে পেয়ে যায় হাতিটি৷ পর্যটককে পা দিয়ে পিষে দেয় দাঁতাল৷ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় গোটা দেহ৷ ঘটনাস্থলেই মারা যান ওই পর্যটক৷
মৃতের বন্ধু কিরণশংকর মণ্ডল বলেন, ‘‘দলগাওয়ের এক রিসর্টে উঠেছিলাম। লাটাগুড়িতে জঙ্গল সাফারি করে মূর্তি হয়ে ফিরছিলাম। সেই সময় হাতির ছবি তুলতে গিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে৷’’ ঘটনার তদন্তে নেমেছে নাগরাকাটা থানার পুলিশ৷ ওই থানার অফিসার-ইন-চার্জ অসীম মজুমদার বলেন, ‘‘হাতির হামলায় পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে বলেই প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।’’ বনদপ্তরের নিয়ম অমান্য করে ছবি তুলতে গিয়েই এহেন দুর্ঘটনা ঘটেছে বলেই দাবি বনকর্মীদের৷
গত ৯৬ ঘন্টায় হাতির হামলায় সাতজনের মৃত্যু হয়েছে৷ এর মধ্যে জঙ্গলে কাঠ কুড়োতে গিয়ে মারা গিয়েছেন ছ’জন মহিলা। এরপর আবার পর্যটকের মৃত্যুতে নতুন করে নাগরাকাটায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/সংবাদ প্রতিদিন/একে