মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:০৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
‘পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থিতিশীলতা পুরো অঞ্চলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ’ বাংলাদেশ আর কোনো নতজানু পররাষ্ট্রনীতিতে বিশ্বাস করে না অবশেষে পদত্যাগের ঘোষণা জাস্টিন ট্রুডোর অগ্রাধিকারমূলক কাজের তালিকা দিলেন উপদেষ্টা মাহফুজ জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণে সহযোগিতা করবে সরকার এবার ভারতে দুই শিশুর শরীরে মিললো এইচএমপিভি চারদিনে রেমিট্যান্স এলো ২৭৬৫ কোটি টাকা বিদেশে বাংলাদেশ নিয়ে প্রচার করতে হবে বেপজাকে: প্রধান উপদেষ্টা মেক্সিকোতে পানশালায় বন্দুক হামলা, নিহত ৫ সাবেক এমপি মোস্তাফিজুর ও তার স্ত্রীর নামে দুর্নীতির ২ মামলা খ্যাতিমান অভিনেতা প্রবীর মিত্রের মৃত্যুতে তথ্য উপদেষ্টার শোক ঘরে ফিরেই জ্বলে উঠেছে সিলেট বৃহস্পতিবার থেকে ফের শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা ডিজিটাল কোর্ট করে দেননি কেন? পলককে বিচারকের প্রশ্ন কোন ডিবি সাধারণ পোশাক পরে আসামি গ্রেপ্তার করতে পারবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ৮২তম গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ডস জিতলেন যারা গাজীপুরে আজও সড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ রাতে স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডেকেছেন তারেক রহমান স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের নির্বাচনে সুযোগ দেওয়া যেতে পারে টস জিতে সিলেটকে ব্যাটিংয়ে পাঠালো রংপুর

হাওরের ধান সংগ্রহ : সরষের মধ্যেই রয়েছে ভূত!

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় রবিবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৯
  • ৩৫ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,(সুনামগঞ্জ)প্রতিনিধি: সরকারি খাদ্যগুদামে ন্যায্যমূল্যে বোরো ধান সংগ্রহের নামে চরম দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কৃষি অফিসার, খাদ্য অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, উপজেলা প্রশাসনের কিছু দুর্নীতিবাজসহ ফড়িয়া ও দালাল সিন্ডিকেট কৃষকের কার্ড নিয়ে নিজেরাই গুদামে ধান দিচ্ছে। লটারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচনের নামেও প্রহসন করছে সংশ্লিষ্টরা। ওই সিন্ডিকেট লটারির মাধ্যমে মৃত ব্যক্তি ও একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তিকেও নির্বাচিত করছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। অন্যদিকে প্রকৃত কৃষকরা ধান দেয়ার চেষ্টা করলেও দালালদের সঙ্গে সম্পর্ক না থাকায় খাদ্যগুদামে ধান দেয়ার সুযোগ পাননি।

জেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সরকার দুই দফা হাওরের কৃষকদের কাছ থেকে ১ হাজার ৪০ টাকা মণ দরে ১৭ হাজার ৪০৩ মেট্রিক টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। এ উপলক্ষে দুই দফা জেলায় প্রায় ২৫ হাজার কৃষক নির্বাচিত হন। নির্বাচিত কৃষকরা ৪০০ কেজি থেকে ১ টন, কেউ কেউ দুই টন ধানও দেয়ার সুযোগ পান। গত ১৮ মে থেকে সুনামগঞ্জে ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। শেষ হবে ৩১ আগস্ট।

তবে কৃষকের নামে খাদ্যগুদামে ধান দেয়া হলেও প্রকৃতপক্ষে সিন্ডিকেট নির্ধারিত দালালরাই কৃষকের কার্ড জিম্মি করে তাদের নামে ধান দিয়ে লাভবান হচ্ছে। কৃষক নির্বাচনের নামে ধাপে ধাপে অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষক নেতারা।

কৃষক আন্দোলনের নেতারা জানান, মাঠে গিয়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের কৃষকদের তালিকা সংগ্রহ করার কথা থাকলেও কৃষকদের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা ইউপি চেয়ারম্যানদের কার্যালয়ে বসে কৃষকের তালিকা ও কৃষক বাছাই করেন। কৃষকদের কোনো সহযোগিতাও করেন না তারা। কেবল কৃষি ভর্তুকি ও ধান সংগ্রহের সময় এলেই ব্লক সুপারভাইজাররা ইউপি চেয়ারম্যানদের অফিসে গিয়ে কৃষকের তালিকা করেন। মাঠে না যাওয়ায় প্রকৃত কৃষকরা বাদ পড়েন। তাছাড়া সকল কৃষকের কাছে খবর না পৌঁছানোয় তারা ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সরকারকে ধান দেয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন।

তাহিরপুরের উত্তর বড়দল ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড সদস্য মোহাম্মদ আলী জানান, এই ওয়ার্ডের ব্রাহ্মণগাঁও গ্রামের ০৪৯৫নং কৃষি কার্ডধারী আব্দুল মালেক তিন বছর আগে মারা গেছেন। কিন্তু তার কার্ড সংগ্রহ করে তার নামে ধান দিচ্ছে সিন্ডিকেট। এভাবে অসচেতন কৃষকদের নামে নিজেরাই গুদামে ধান দিয়ে কৃষকদের বঞ্চিত করে লাভবান হচ্ছে ফড়িয়ারা। আর এই সুযোগ করে দিচ্ছে স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতা, উপজেলা প্রশাসনের লোক, উপজেলা কৃষি অফিস ও খাদ্য অধিদফতরের কতিপয় দুর্নীতিবাজ।

জামালগঞ্জ উপজেলায়ও কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা সিন্ডিকেট করে গুদামে ধান দিচ্ছেন বলে অভিযোগ আছে। এ কারণে কিছুদিন ধান সংগ্রহ স্থগিত ছিল। এভাবে ১১ উপজেলায়ই দালালরা কৌশলে কৃষকের কৃষি কার্ড জব্দ করে গুদামে ধান দিচ্ছে। গুদামে ধান ঢুকানো বাবদ খাদ্য বিভাগ প্রতি টনে ২ হাজার টাকা নেয় বলেও অভিযোগ আছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কৃষকের নামে তাদের কার্ড এনে ধান দেয়া হলেও লাভবান হচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। তারা কৃষকের নাম দিয়ে নিজেরাই গুদামে ধান দিচ্ছে প্রতিদিন। কৃষক কার্ড দেয়ায় তাকে ১ হাজার ২ হাজার টাকা বকশিস দিচ্ছে ফড়িয়ারা। আর গুদাম ও ব্যাংকে কৃষকদের উপস্থিত করতে হয় বলে ওই দুটি জায়গায় তাদের উপস্থিত নিশ্চিত করে ফড়িয়ারা। তারপর কার্ড রেখে তাদের বিদায় করে দেয়।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলা খাদ্য গুদামের ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের ব্যবসায়ী শফিকুলের ধান শুকাচ্ছেন এক ব্যক্তি। তিনি জানান, শফিকুল বিভিন্ন কৃষকের কার্ড এনে তাদের নামে ধান দিচ্ছেন। তারা শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন।

একই সময় দেখা গেল একই উপজেলার পিঠাপই গ্রামের মধ্যস্বত্বভোগী নজরুল ইসলাম গুদামে ধান দিতে ট্রাক ভরে ধান নিয়ে এসেছেন। তিনি কয়েকজন শ্রমিক নিয়োগ দিয়েছেন ধান শুকিয়ে গুদামে দেয়ার জন্য।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শ্রমিক জানান, নজরুল বিভিন্ন এলাকার কৃষকের কার্ড এনে তাদের নামে ধান দেন।

এ বিষয়ে জেলা খাদ্য অফিসার জাকারিয়া মোস্তফা বলেন, কৃষকের তালিকা করেছে কৃষি বিভাগ। আমরা তাদের কাছ থেকে তালিকা নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিলে বাছাই করেছি।

মধ্যস্বত্বভোগীরা কীভাবে ধান দিচ্ছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মধ্যস্বত্বভোগী বা কৃষক কে তা আমরা যাচাই করতে পারি না। আমরা যার কাছে কৃষি কার্ড আছে তার কার্ড দেখেই ধান নিচ্ছি। আমাদের কেউ দুর্নীতিতে জড়িত না।

বাংলা৭১নিউজ/এমএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com