মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৫৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
অংশীজনরা কী চান তার ওপর নির্ভর করবে নির্বাচন কবে হবে ঢাকা ছাড়লেন খালেদা জিয়া ২ লাখ ৩৮ হাজার বেকারের কর্মসংস্থান করবে বেজা খালেদা জিয়াকে বার্তা পাঠিয়ে যা বললেন জিএম কাদের ইসলামী ব্যাংকের ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম উদ্বোধন এলএনজি ও চাল আমদানি, ব্যয় ১০২৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা নাঈমুল ইসলাম খান ও তার পরিবারের দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদক বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বিমসটেক সেক্রেটারি জেনারেলের সাক্ষাৎ প্রথমবারের মতো দেশব্যাপী হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা কবে নাগাদ সব শিক্ষার্থী পাঠ্যবই পাবে জানি না: শিক্ষা উপদেষ্টা ট্রাইব্যুনালের মূল ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধান বিচারপতি পুলিশে চাকরি পাচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে আহত ১০০ জন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় শুনানি মুলতবি সচিবালয়ের গেটে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ পাঁচ মাসে আর্থিক স্থিতিশীলতায় খুব বেশি খুশি নয় বাংলাদেশ ব্যাংক জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণে ৮ পরিচালক নির্বাচিত রংপুরের বিপক্ষে এবার ঢাকা অলআউট ১১১ রানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে তিব্বতে নিহত বেড়ে ৯৫ স্ত্রী-ছেলেসহ নাফিজ সরাফতের বাড়ি, জমি ও ১৮ ফ্ল্যাট ক্রোকের আদেশ

হরেক হালুয়া, প্রকাণ্ড রুটি

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় রবিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৯
  • ১১৬ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকতেই সুস্বাদু খাবারের ম–ম ঘ্রাণ। টেবিল ভরা বাহারি নকশাদার রুটি। ৭০ গ্রাম থেকে শুরু করে ১৫ কেজি পর্যন্ত ওজন। পাশেই ছোট ছোট বাটিতে সাজানো হরেক রকম সুস্বাদু হালুয়া।
পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে পুরান ঢাকার আনন্দ কনফেকশনারিতে এই বিশেষ হালুয়া-রুটির আয়োজন। পুরান ঢাকায় শবে বরাতে বিশেষ ধরনের খাবারের আয়োজনের রেওয়াজ বহুদিনের। একসময় ঘরে ঘরে চাল বা আটার রুটির সঙ্গে হালুয়া তৈরি হতো। এখন ব্যতিব্যস্ত নাগরিক জীবনে হাতে রুটি তৈরির ঝক্কি এড়াতে বেকারির রুটি-হালুয়াই ভরসা।

বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির ঢাকাই খাবার বইয়ের তথ্য অনুযায়ী, বাংলার নবাবেরা বিশেষ মর্যাদার সঙ্গে দিনটি পালন করতেন। ঘরের আলোকসজ্জা করা হতো। পুরুষেরা সারা রাত মসজিদে আর নারীরা ঘরে নফল নামাজ আদায় করতেন। ভোজের আয়োজন থাকত। বিকেল থেকেই দরিদ্রদের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হতো। হালুয়া-রুটির পাশাপাশি সচ্ছল পরিবারে রান্না হতো পোলাও, কোর্মা, ভুনা খিচুড়ি, হাঁসের মাংস।

বইটির তথ্য আরও বলছে, সামর্থ্য অনুযায়ী আটা বা ময়দার রুটি, দোস্তি রুটি, রুমালি রুটি তৈরি করা হতো। অনেকে অবশ্য শখ করে চালের রুটিও বানাতেন। এর পাশাপাশি ঘরে তৈরি হতো বুটের ডাল, সুজি বা মৌসুমি গাজরের হালুয়া। মিষ্টির দোকানে মিলত মাশকাতের হালুয়া। অনেক পরিবারে আবার হালুয়া জমাট করে বরফি আকারে কেটে অতিথিদের মধ্যে পরিবেশন করতেন।

সাতরওজার বর্ষীয়ান বাসিন্দা সুরুজ মিয়া বলেন, পুরান ঢাকায় শবে বরাত পালন ঐতিহ্যের অংশ। ইবাদত, খানাপিনা ও আনন্দ–উৎসবের মধ্য দিয়ে বহুকাল থেকে এই বিশেষ দিন পালন করা হয়। এদিন সামর্থ্য অনুযায়ী বাসায় বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরি হয়, আত্মীয়র বাড়িতে রুটি-হালুয়া পাঠানো হয়। নতুন পোশাক পরার রীতিও আছে। আর রাতে মসজিদে ইবাদত শেষে শিরনি বিতরণ হয়। রাতভর কবরস্থান জিয়ারত চলে। তবে ইদানীং রীতিনীতির অনেক পরিবর্তন এসেছে বলে তাঁর মন্তব্য।

গতকাল শনিবার আনন্দ কনফেকশনারিতে দেখা গেল বিভিন্ন ফুলেল ও লতানো উদ্ভিদের মনোমুগ্ধকর নকশার রুটি। এসব রুটি তৈরিতে ময়দার সঙ্গে দুধ, ডিম, ঘি, কিশমিশ, সাদা তিল, কাজুবাদাম ব্যবহার করা হয়েছে। দাম প্রতি কেজি ২০০ থেকে শুরু করে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত। ক্রেতারা আগাম ফরমাশ দিলে তাদের চাহিদামতো রুটিও তৈরি করে দেওয়া হয়। এখানে পাওয়া যায় ছয় ধরনের হালুয়া। এর মধ্যে গরুর দুধে তৈরি মাখাদি হালুয়ার বিশেষ জনপ্রিয়তা রয়েছে। হালুয়া কিনতে প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা খরচ করতে হবে। এ কনফেকশনারির অন্যতম স্বত্বাধিকারী ইউসুফ আলী বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই শবে বরাত উপলক্ষে বেকারিতে রুটি বিক্রির পরিমাণ বাড়তে শুরু করেছে। তবে হালুয়া বিক্রি মূলত শুরু হয় আশির দশক থেকে।

চকবাজারকে কেন্দ্র করেই মূলত শবে বরাতের বিশেষ পদ রুটি-হালুয়ার আয়োজনের শুরু। এলাকার বাসিন্দা নূর উদ্দিন বলেন, শবে বরাতের দিন সকাল থেকেই বাজারজুড়ে রুটি-হালুয়ার পসরা বসে যায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে ছোট দোকানের সংখ্যা। বিকেল হতে বিক্রি জমজমাট। চকবাজারের আলাউদ্দিন সুইটমিটে অবশ্য শবে বরাত উপলক্ষে এক দিন আগেই রুটি-হালুয়ার আয়োজন করেছে। এখানে বুট, গাজর, কদু, সুজি, পুদিনাসহ ১২ ধরনের হালুয়া আছে। এর মধ্যে স্থানীয়দের মধ্যে বিটের স্পেশাল হালুয়ার চাহিদা বেশি। প্রতি কেজির দাম উপকরণ অনুসারে ৩৬০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত। এখানে রুটির দাম প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা। ১০০ গ্রাম থেকে শুরু করে ৮ কেজি পর্যন্ত এখানে রুটি পাওয়া যায়।

পুরান ঢাকার অলিগলিতে এ খাবার পাওয়া গেলেও চকবাজারের বোম্বে সুইটস অ্যান্ড কাবাব, রায়সাহেব বাজার এলাকার ইউসুফ বেকারি, বংশালের আল-রাজ্জাক কনফেকশনারিতে খাবারের চাহিদা বেশি।

এ ধর্মীয় উৎসব ঘিরে পুরান ঢাকার মসজিদগুলোতে শিরনি বিতরণ করা হয়। কোনো কোনো মসজিদে এশার নামাজের মোনাজাত শেষে এ শিরনি বিতরণ করা হয়। কোনো মসজিদে আবার ফজরের নামাজ শেষে বিতরণের রেওয়াজও আছে। এ ছাড়া স্থানীয় ব্যক্তিরা নামাজ শেষে কবরস্থান জিয়ারত করেন। সেখানে বিশেষ মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাতের পর তবারক বিতরণ করা হয়।

বাংলা৭১নিউজ/এইচ.এস.বি

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com