পরিবেশ রক্ষা করা, জলবায়ুর সাথে মোকাবেলা করা, পরিবেশগত চ্যালেঞ্চের মত বিষয়গুলোকে আমলে নেওয়া শুরু করেছে সৌদি আরব। সৌদির উচ্চ তাপমাত্রা, কম বৃষ্টি ও ধুলা পরিবেশ এবং অর্থনীতির জন্যও হুমকি সৃষ্টি করে। এরই জের ধরে মধ্যপ্রাচ্য সবুজায়ন ও সৌদি আরব সবুজায়নের কার্যযক্রম খুব দ্রুত শুরু হতে হতে হচ্ছে। যার লক্ষ্য হবে সবুজায়নের মাধ্যমে একটি রোড ম্যাপ তৈরি করে জলবায়ু পরিবর্তনকে মোকাবেলা করা এবং সেই সঙ্গে কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করা।
মধ্যপ্রাচ্যের সব দেশে সবুজায়ন করা হবে এবং বাণিজ্যিক সফলতা অর্জন করা এই উদ্যোগের লক্ষ্য। এতে করে ওই অঞ্চলের স্থানীয় নাগরিক ও বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে এবং জীবনমান উন্নত করে তুলবে। সেই সঙ্গে সৌদি আরবের সবুজায়ন জীবনযাত্রার মান উন্নত করার সাথে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষা দেবে। সৌদি আরবের সবুজায়ন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে গাছপালা লাগানো, কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ কমানো, দূরষণের মোকাবেলা করা, ভূমি অবক্ষয় রোধ করা, সামুদ্রিক পরিবেশ রক্ষা করা।
এই প্রকল্পের আওতায় সৌদি আরবে এক হাজার কোটি গাছ লাগানো হবে আর এতে করে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ কমবে ৪ শতাংশের বেশি, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি কর্মসূচী চালু করা হবে যা ২০৩০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য থেকে বিদ্যুতের অংশ (০.০৩%) থেকে (৫০%) বাড়িয়ে দেবে।
মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের জন্য সবুজায়ন একটি উদ্যোগ যার লক্ষ্য হল সমন্বয় করা এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক উন্নয়নের সাথে সামঞ্জস্য রাখা যা অঞ্চলটির জন্য একটি রোডম্যাপ চালু করবে, জলবায়ু পরিবর্তনে মোকাবেলার মাধ্যমে বৈশ্বিক লক্ষ্য অর্জনে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে।
উদাহরণস্বরুপ বলা যায়, হাইড্রোকার্বন প্রযুক্তির দক্ষতা বৃদ্ধি করা, বিশ্বের বৃহত্তম বনভূমি পরিকল্পনা চালু করা, যার লক্ষ্য মধ্য প্রাচ্য অঞ্চলে ৫ হাজার কোটি গাছ লাগানো আর এর ৫ শতাংশ গাছ লাগালেই বৈশ্বিক স্বার্থ অর্জন হবে। এতে করে বিশ্বব্যাপী ২.৫ শতাংশ কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ বেড়ে যাবে। আর এই যৌথ উদ্যোগ বিশ্বব্যাপী দশ শতাংশেরও বেশি কার্বন নির্গমনে ভূমিকা রাখবে।
আরব উপসাগরীয় দেশ, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো এবং অন্যান্য আন্তজার্তিক দেশের সহায়তায় এ লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হবে। এরই জের ধরে সৌদি আরব মধ্যপ্রাচ্যের সবুজায়ন শিরোনামে একটি সামিটের আয়োজন করবে যেখানে পরিবেশ বিষয়কি মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের আহ্বান করা হবে যারা একটি রুপরেখা প্রদান করবে। এই বছরের শেষ ভাগ থেকে আগামী দু দশক উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নের জন্য সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
সৌদি আরবের পানির সমস্যা, আর্থিক এবং প্রযুক্তিগত সম্পদের অভাব চ্যালেঞ্চের মুখোমুখি করছে। তেল উৎপাদনের জন্য অতিরিক্ত কার্বন ডাই অক্সাইড তৈরি হয় যা নিঃসারণ করতে হবে। আর এজন্য অঞ্চলের উপযোগী গাছ লাগানো, সেচ দেওয়া সহ আরো পদক্ষেপ নিতে হবে।
মধ্য প্রাচ্যের সবুজায়ন সম্মেলনে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করবে এবং তা সমাধানের জন্য কাজ করবে। গত চার বছরের অর্জনের দিকে আমরা লক্ষ্য করলে দেখি প্রাকৃতিক মজুদ বেড়েছে ৪ থেকে ১৪ শতাংশ,চার বছরে গাছপালা বেড়েছে ৪০ শতাংশ, কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসারণ বেড়েছে,নিয়ম নামে সবুজ হাইড্রোজেন উত্পাদন প্রকল্প চালু করেছে। বালু ঝড়ের কারণে প্রতিবছর কোটি কোটি ডলারের ক্ষতি হয় সৌদি আরবে এবং বায়ু দূষণের ফলে গড় আয়ু কমেছে দেড় বছর।
বাংলা৭১নিউজ/এমকে