বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫৯ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
পঞ্চগড়ে বইছে শৈত্যপ্রবাহ ভারতের মহারাষ্ট্রে ১৭ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার অন্তর্বর্তী সরকারের উদারতা জাতিকে অনন্তকাল ভোগাবে : হাসনাত আব্দুল্লাহ স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও দেশকে অস্থির করার ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে ভেতরে প্রবেশ করছেন সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা লামায় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ড. ইউনূসের নিন্দা আগুনের সূত্রপাত কীভাবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি : ফায়ারের ডিজি সচিবালয়ের আগুন ৬ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে সড়কে পড়ে আছে ফায়ারকর্মী নয়নের হেলমেট ও তাজা রক্ত সচিবালয়ে আগুন: যে হুঁশিয়ারি দিলেন আসিফ মাহমুদ আগুন ৬ তলায় লেগে উপরে গেছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সবাই একসঙ্গে শান্তিতে থাকতে চাই : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে থেকে পড়ে বিদ্যুতায়িত, দুই শ্রমিকের মৃত্যু ‘আমাদের একমাত্র লক্ষ্য শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা’ বাংলাদেশ সীমান্তে অতিরিক্ত বিএসএফ মোতায়েন সৌদিতে সড়কে প্রাণ গেল ময়মনসিংহের দুই যুবকের, পরিবারে শোকের মাতম বিএনপিকর্মী মকবুল হত্যা: সাবেক মুখ্য সচিব নজিবুর কারাগারে প্রশাসন নিরপেক্ষ করতে ‘স্বৈরাচারের দোসরদের’ অপসারণ করুন সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিউল্লাহ শফিকে পুলিশে দিল ছাত্র-জনতা

সুদানে ধর্ষক স্বামীকে হত্যার দায়ে নোরার ফাঁসির আদেশ: সোস্যাল মিডিয়ায় ঝড়

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় রবিবার, ২৭ মে, ২০১৮
  • ১৫৭ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক: ধর্ষক স্বামীকে হত্যার দায়ে সুদানি নারী নোরার মৃত্যুদণ্ড নিয়ে সরব হয়ে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া৷ তবে শেষ পর্যন্ত কী হয়, তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে৷ নোরার ফাঁসি হলে, তা হবে মানবাধিকারের জন্য একটি বড় ধাক্কা৷

নারী অধিকার নিয়ে আন্দোলনকারীরা তো বটেই, মানবিক জায়গা থেকেও নোরার ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনা করে তাঁকে খালাস করার দাবি নিয়ে এগিয়ে এসেছেন অনেকে৷

নোরা হোসেইন হামাদের বয়স ১৯ বছর৷ মে মাসের ১৭ তারিখ সুদানের আদালতে তাঁর ফাঁসির আদেশ হয়৷ মাধ্যমিক পরীক্ষার পরপরই মাত্র ১৬ বছর বয়সে নোরার বাবা জোর করে তাঁর বিয়ে দিয়ে দেন আবদুলরাহমান হামাদ নামের এক ব্যক্তির সাথে৷

জানা যায়, দু’বার বিয়ে পড়ানো হয়েছিল তাঁর৷ প্রথমে নোরার বাবা ও স্বামীর মধ্যে একটি চুক্তির হয়৷ পরে আবারো বিয়ে পড়ানো হয় তাঁকে৷ এরপর ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে স্বামীর বাড়িতে পাঠানো হয় নোরাকে৷  কিন্তু নোরা স্বামীর সাথে যৌন সম্পর্কে জড়াতে অস্বীকৃতি জানায়৷ মে মাসের ২ তারিখে স্বামী আবদুলরাহমান হামাদ নিজের দুই ভাই এবং এক চাচাত ভাইয়ের সহায়তা নিয়ে তাদের সামনেই নোরাকে ধর্ষণ করে৷

পরদিন সকালে নোরাকে আবারো তাঁর স্বামী ধর্ষণ করতে গেলে সে ঘর থেকে পালিয়ে রান্নাঘরে যায়৷ এ সময় হাতের কাছে হঠাৎই একটা ছুরি পেয়ে যায় নোরা৷ ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে আবদুলরাহমান হামাদ তাঁর হাতের ছোরার আঘাতে গুরুতর জখম হয় এবং পরে মারা যায়৷

শ্বশুরবাড়ি থেকে পালিয়ে বাবার বাড়িতে গেলেও, নিজের বাবাই নোরাকে পুলিশ দেন৷

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি  ইন্টারন্যাশনালসহ অন্যান্য সংগঠনের মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন,  নোরার বিচার কাজ চলার সময় এই হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত খুন’ বলে বর্ণনা করেছে আদালত৷ কিন্তু বিচার প্রক্রিয়ায় নোরাকে যে বিয়ের পর ধর্ষণ করা হয়েছে, তা নিয়ে কোনো কথাই সেখানে হয়নি৷

সুদানে এ ধরনের বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ তৈরি হলেও, এখনও তা ততটা জোরালো নয়৷ দেশটির আইন ১০ বছর হলেই মেয়েদের বিয়ের অনুমোদন দেয়৷ তবে একমাত্র আদালতের একজন বিচারকের সামনে এবং কন্যার অভিভাবকের উপস্থিতিতে এ বিয়ে হওয়ার বিধান আছে৷ জাতিসংঘের প্রতিবেদন বলছে, সুদানি মেয়েদের প্রতি তিনজনের মধ্যে একজনের বিয়ে হয় ১৮ বছরের আগে৷

এদিকে আফ্রিকা ইউথ মুভমেন্টের কর্মী বদর আলদিন সালাহ বলেন, ‘‘সুদানে চালু মুসলিম শরীয়া আইন অনুযায়ী, নোরার মতো ঘটনায় তাঁর স্বামীর পরিবার অর্থের বিনিময়ে ক্ষতিপূরণ নিতে পারতো কিংবা ফাঁসি চাইতে পারত৷ নোরার শ্বশুরবাড়ির পরিবার তার ফাঁসি চেয়েছে৷”

নোরার আইনজীবী জানান, এই সিদ্ধান্তের বিপরীতে আপিল করতে চান তাঁরা৷ কিন্তু এর জন্য শক্তিশালী আন্তর্জাতিক সমর্থন প্রয়োজন৷ যেমন আফ্রিকান ইউনিয়ন, জাতিসংঘ কিংবা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো সংগঠনগুলির প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ চাপ৷

সোশ্যাল মিডিয়ায় অবশ্য নোরার শাস্তি মাফের সপক্ষে প্রচারণা শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই৷চেঞ্জ ডট ওআরজি এবং আভাজ ডট কমের মতো প্রতিষ্ঠান নোরার মুক্তির পক্ষে স্বাক্ষর করতে প্রচারণায় জোর দিচ্ছে৷

বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও সংগঠন, যেমন ‘ইকুয়ালিটি নাও’ বলছে যে, তারা সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে নোরার শাস্তি মওকুফের জন্য ‘ক্ষমাপ্রার্থনার’ চিঠি লিখবে, যাতে উল্লেখ থাকবে নোরার এ মৃত্যুদণ্ডাদেশ সুদানি সংবিধান পরিপন্থি৷

‘ইকুয়ালিটি নাও গ্লোবাল’-এর পরিচালক ইয়াসমিন হাসান বলেন, ‘‘নোরা পরিস্থিতির শিকার৷ সে কোনো অপরাধী নয়৷ বিষয়টা এভাবেই দেখা উচিত৷ নোরার মতো এমন ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শিকার নারীদের অনেক দেশেই পালটা সেবা দেওয়া হয়, যাতে তারা দুঃসহ স্মৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারে৷”

 

ইয়াসমিন হাসানের কথায়, ‘‘নিজেকে রক্ষার জায়গা থেকে নোরাকে অপরাধী বানিয়ে ফেলা অন্যায়৷ তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলে মানবাধিকার ক্ষুণ্ণ হবে৷ এটা সুদানের সংবিধান ও আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি৷”

নোরার ঘটনায় প্রতিদিনই প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন নিজ নিজ অবস্থানের বরেণ্য ব্যক্তিত্বরা৷ টুইটারে #justicefornoura প্রচারণায় অংশ নিয়ে মতামত জানাচ্ছেন তাঁরা৷

সুদানের ঔপন্যাসিক হামোর জায়েদা ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘নোরা পরিস্থিতির শিকার, অপরাধী নয়৷ তাই তাকে বাঁচাতে আমাদের এক জোট হওয়া উচিত৷”

‘‘আমাদের সবার নোরাকে বাঁচাতে এবং বিয়ের পর ধর্ষণ প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত”, ফেসবুকে লিখেছেন নারী অধিকারকর্মী আমাল হাব্বানি৷

ব্রিটিশ সুপার মডেল নওমি ক্যাম্পবেল লিখেছেন, ‘‘আমি নাওমি ক্যাম্পবেল৷ আমি সুদানের সরকারের কাছে নোরার জন্য ক্ষমার আবেদন জানাচ্ছি এবং তাদের বলছি এটা প্রমাণ করতে যে যারা ধর্ষণের শিকার হয়, তারাই প্রকৃত ভুক্তভোগী৷”

সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার নোরার শাস্তি মওকুফ চেয়ে আবেদনের শেষ দিন ছিল৷ সেইদিন শেষ মুহূর্তে তাঁর আইনজীবীরা সুদান সরকারের কাছে ক্ষমার আবেদন জানিয়েছেন৷

জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা এরই মধ্যে নোরার ক্ষমার আবেদন বিবেচনায় নিতে সুদান সরকারকে অনুরোধ করেছে৷ উল্লেখ্য, জাতিসংঘের লৈঙ্গিক সমতার সূচকে ১৮৮টি দেশের মধ্যে সুদানের অবস্থান ১৬৫৷

এখন দেখার বিষয় অত্যাচারের শিকার এই নারী পুরুষতান্ত্রিকতার বলি হন কিনা!

বাংলা৭১নিউজ/তথ্যসূত্র: ডয়চে ভেলে/ ডিপিএ, এএফপি, এপি/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com