বাংলা৭১নিউজ,(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি: সাকিবের নির্দেশ পা্ওয়ার পর সাকিব আল হাসান এগ্রো ফার্মের কাকড়া প্রকল্পের শ্রমিকদের পাওনা মজুরি পরিশোধ করা শুরু করেছে দায়িত্বরতরা। তবে সাকিবের প্রতি চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ওই প্রকল্পের জমির আসল মালিক।
বুধবার বিকেলে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দাতিনাখালীতে অবস্থিত সাকিব এগ্রো ফার্ম লিমিটেডে শ্রমিকদের ডেকে তাদের বেতন পরিশোধ করেন জেনারেল ম্যানেজার মো. সালাহউদ্দিন।
১৫০ জন শ্রমিকের ১৯ লাখ ৫৪ হাজার টাকা বেতন পরিশোধ করে দেওয়া হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাকিব আল হাসানের কাঁকড়া খামার প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সগীর হোসেন পাভেল, জেনারেল ম্যানেজার মো. সালাউদ্দিন, সাতক্ষীরা ফুটবল অ্যাসোসিশনের সভাপতি ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নাসেরুল হক, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সদস্য সচিব মোশফিকুর রহমান মিল্টন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য খন্দকার আরিফ হাসান প্রিন্সসহ ফার্মের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
উপস্থিত জেলা শিল্পকলা একাডেমির সদস্য সচিব মোশফিকুর রহমান মিল্টন জানান, (বুধবার) মোটামুটি প্রায় সব শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করেছে। সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার বাকিদের বকেয়া পরিশোধ করা হবে।
এদিকে শ্রমিক কর্মচারীরা যখন বকেয়া মজুরি পাচ্ছেন তখন জমির মূল মালিক গাজী শহীদুল্লাহ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, সাকিব আল হাসানের কাঁকড়া খামার প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ক ক্রিকেটার সগীর হোসেন পাভেল ২০১৬ সালে চুক্তি করে কাকড়া প্রকল্পটি চালু করেই তারা শর্ত ভঙ্গ করে সেখানে তিনতলা ভবন বানায়। তারা তাদের ৪৮ বিঘা জমির চুক্তিভিত্তিক অর্থ দেয় না।
আরেকজন জমির মালিক আব্দুল হাকিম বলেন, চুক্তির পাওনা টাকা চাইতে গেলে তাদের অনেক ক্ষমতা টাকা চাইলে বিপদ হবে বলে নিত্যনৈমিত্তিক হুমকি দিয়ে থাকে। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির ঘটনাও সেখানে ঘটেছে বলে অভিযোগ জমির মালিকদের।
সগীর হোসেন পাভেলের কাছে কাকড়া প্রকল্পের জমির মূল মালিকদের পাওনা টাকা না দেয়া ও তাদের হুমকি দেয়ার বিষয়টি তুললে উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান।
সাকিব আল হাসান এগ্রো ফার্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সগীর হোসেন পাভেল বলেন, বৈশ্বিক মহামারী করোনা পরিস্থিতি’র কারণে সাময়িক সংকটে পড়ে ফার্মের কাকড়া প্রকল্প। এ পরিস্থিতিতে ফার্মের প্রস্তুতকৃত যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুরের তিনটি দেশের শিপমেন্ট স্থগিত হয়ে যায়।
এ ছাড়া নানা সংকটের মুখোমুখি হয়ে পড়ায় সাময়িক সমস্যার মুখোমুখি হয় প্রতিষ্ঠান। যা রপ্তানিমুখী সকল প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ঘটেছে। এর আগে শুরু থেকে এ প্রতিষ্ঠান শ্রমিক কর্মচারীদের সাথে নিয়ে যৌথ কর্মপ্রেরণায় প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এগিয়ে চলে। কখনও কোনদিন বেতনভাতা সংক্রান্ত সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়নি প্রতিষ্ঠানটিকে।
২০ এপ্রিল সোমবার দুই শতাধিক শ্রমিকের বিক্ষোভের খবরটি আমাদের ব্যথিত করেছে। আমরা সাকিবের নির্দেশে পাওনা মেটাতে শুরু করেছি। করোনা পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পরিশোধের কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে।
সাকিব আল হাসান এগ্রো ফার্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সগীর হোসেন পাভেল জানান, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের রয়েছে বহু প্রকল্প। যার বেশিরভাগটার পরিচালনায় তিনি থাকেন না। সাকিব বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।
সেখান থেকে কাকড়া প্রকল্পের শ্রমিক কর্মচারীদের পাওনা নিয়ে বিক্ষোভের খবর পেয়েই সাথে সাথে নিজের একাউন্ট থেকে অর্থ পাঠিয়ে শ্রমিক কর্মচারীদের বেতনভাতা পরিশোধের নির্দেশ দেন। তাদের পাশে থাকতে বলেছেন।
বিষয়টি নিয়ে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন ম্যানেজিং ডিরেক্টর সগীর হোসেন পাভেল ও ডিরেক্টর গাজী ইমদাদুল হক।
বাংলা৭১নিউজ/এমআর