বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
চাচাকে বাবা বানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বিসিএস ক্যাডার! হাইকোর্টের নতুন রেজিস্ট্রার হাবিবুর রহমান সিদ্দিকী লামায় অগ্নিসংযোগ: ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে উপদেষ্টা-প্রশাসন নসরুল হামিদের ৩৬ কোটি টাকার সম্পদ, অস্বাভাবিক লেনদেন ৩১৮১ কোটি তিন উপদেষ্টাকে বিপ্লবী হতে বললেন সারজিস আলম জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে আওয়ামী লীগ নেতা বলরাম ফায়ার ফাইটার নিহতের ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলা কোরিয়া থেকে ৬৯৩ কোটি টাকার এলএনজি কিনবে সরকার সাভারে বন্ধ টিএমআর কারখানা চালুর নির্দেশনা উপদেষ্টার দুদকের সাবেক কমিশনার জহুরুল হকের দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু কনস্টাসকে ধাক্কা দেওয়ায় কোহলিকে আইসিসির শাস্তি শেখ হাসিনা-শেখ রেহানার বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করার দাবি ফখরুলের ১১ বছর পর দেশে ফিরছেন ব্যারিস্টার রাজ্জাক যারা নির্বাচনকে বিতর্কিত করেছেন, তাদের বিচারের আওতায় আনা উচিত প্রাণ এএমসিএলের ৩২ শতাংশ লভ্যাংশ অনুমোদন সেতু মন্ত্রণালয় থেকে বাদ যাচ্ছে ১১১৮৬ কোটি টাকার অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বিমানের সিটের নিচে মিলল ২০ সোনার বার, যাত্রী আটক ‘পিলখানা হত্যায় নিরপেক্ষ থেকে ষড়যন্ত্র চিহ্নিত করা হবে’ চোখের জলে এক বীরকে বিদায় দিল ফায়ার সার্ভিস

সম্পত্তিতে রিসিভার নিয়োগ, রাষ্ট্র কখন সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে?

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ২৭ বার পড়া হয়েছে

শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর দেশের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে, যাদের তৎকালীন সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।

এদের মধ্যে এস আলম গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, নাসা গ্রুপসহ আরো কয়েকটি বড় ব্যবসায়িক গোষ্ঠির নাম বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আলোচিত হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, এসব ব্যবসায়ীক গোষ্ঠি শেখ হাসিনা সরকারের সাথে আঁতাতের মাধ্যমে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারিত করেছেন। একই সাথে আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির জোরালো অভিযোগও উঠেছে।

এমন প্রেক্ষাপটে বেক্সিমকো গ্রুপের সব প্রতিষ্ঠান দেখাশোনা করতে কেন রিসিভার নিয়োগ করা হবে না তা জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট। একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ নির্দেশনা দেয়।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেদওয়ান আহমেদ রানজীব বলেন, বেক্সিমকো গ্রুপের সব প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে যাবতীয় তথ্য দিতে এবং বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে বেক্সিমকো গ্রুপের নেওয়া কী পরিমাণ ঋণ বকেয়া আছে তা বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছে আদালত।

বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরসহ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিআইডি।

সিআইডি জানিয়েছে, বসুন্ধরা গ্রুপের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি, শূল্ক ফাঁকি, ভ্যাট ফাঁকি, আন্ডার ইনভয়েসিং/ওভার ইনভয়েসিং করে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচার সংক্রান্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে মানিলন্ডারিং অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিআইডি।

প্রশ্ন হচ্ছে, কোনও ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে যখন রিসিভার নিয়োগ করা হয়, তখন তাদের ভূমিকা কী থাকে? এছাড়া, দুর্নীতির মাধ্যমে যদি ব্যবসা সম্প্রসারণ করা হয় তাহলে আইনগতভাবে কী পদক্ষেপ নেয়া যায়?

রিসিভারের কাজ কী?
হাইকোর্টের আইনজীবী শিহাব উদ্দিন খান বিবিসি বাংলাকে বলেন, যদি কোনও প্রতিষ্ঠান পরিচালনার অযোগ্য হয়ে যায় বা পরিচালনার মতো অবস্থা না থাকে সেক্ষেত্রে রিসিভার বা তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ করা হয়। এই রিসিভার অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে দেখাশোনা করবেন।

এই কাজটি সরকার তার নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে করতে পারে কিংবা আদালতের আদেশের মাধ্যমেও হতে পারে।

মি. খান বলেন, একজন মালিক যেভাবে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন, রিসিভারও ঠিক সেভাবে পরিচালনা করার ক্ষমতা পায়। তিনি কোম্পানির সব হিসেবনিকেশ এবং ব্যবস্থাপনার যাবতীয় দেখাশোনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকেন।

বাংলাদেশে আদালতের মাধ্যমে রিসিভার নিয়োগের ঘটনা অতীতে বিভিন্ন সময় দেখা গেছে। ইভ্যালীর ক্ষেত্রেও হাইকোর্ট থেকে রিসিভার নিয়োগ করে দেওয়া হয়েছিলো।

তিনি বলেন, বেক্সিমকো গ্রুপের মালিকের বিরুদ্ধে যেহেতু নানাবিধ অভিযোগ রয়েছে সেক্ষেত্রে রিসিভার নিয়োগ না করা হলে প্রতিস্ঠানগুলো থেকে অর্থ লোপাট হতে পারে।

যদি কোম্পানির মালিকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়, এবং কোন একটি পক্ষ যদি আদালতের শরণাপন্ন হয় তাহলে রিসিভার নিয়োগ হতে পারে।

রাষ্ট্র কী করতে পারে?
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আহসানুল করিম বিবিসি বাংলাকে বলেন, কোম্পানি দুর্নীতি করতে পারে না, দুর্নীতি করে মানুষ। অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি প্রমাণ হয় না, দুর্নীতি আদালতে প্রমাণ করতে হয়।

২০০৭ সালে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলের উদাহরণ দিয়ে মি. করীম বলেন, তখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতিগ্রস্ত হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আদালতের মাধ্যমে কিছু প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি।

“অনেক কোম্পানির পাবলিক শেয়ার থাকে, প্রচুর মানুষের অংশগ্রহণ থাকে, কিছু মানুষের জন্য যখন কোম্পানিগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়, সাধারণ গ্রাহকরা তখন খুব ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই, কোম্পানিগুলোকে চলতে দিতে হবে,” বলেন মি,করীম।

তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ইভ্যালির প্রতারণার জন্য দুইজনকে জেলে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ইভ্যালিকে বন্ধ করা হয়নি বলে গ্রাহকরা এখন কিছু কিছু টাকা পাচ্ছে।

তিনি বলেন, একটি কোম্পানিতে মালিকের সংখ্যা একাধিক থাকতে পারে। যার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আদালতে প্রমাণিত হবে, সেই ব্যক্তির মালিকানার অংশটুকু আদালত বাজেয়াপ্ত করে। সেক্ষেত্রে বাজেয়াপ্ত করা সম্পদ রাষ্ট্রের অধীনে চলে যায়।

কোম্পানির মালিকদের অপরাধের ধরণ অনুযায়ী মামলা কিংবা সাজার বিধান রয়েছে দেশের আইনে। আইনজীবীরা বলছেন সব অপরাধের ক্ষেত্রে সম্পদ বাজেয়াপ্ত হয়না। এক্ষেত্রে জেল জরিমানার বিধানও আইনে রয়েছে বলে আইনজীবীরা উল্লেখ করেন।

তদন্ত প্রক্রিয়া কী
আইনজীবীরা বলছেন, কোন প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি হয়েছে কী না সেটি নির্ণয় করার জন্য বিভিন্নভাবে তদন্ত হতে পারে।

দুর্নীতির মাধ্যমে ব্যবসা সম্প্রসারণ, কর ফাঁকি, বিদেশে অর্থ পাচার – এসব বিষয় নিয়ে সাধারণত কোম্পানির বিরুদ্ধে তদন্ত হয়।

“আমাদের দেশের দুর্নীতিলব্ধ সম্পদ তদন্ত করার একক এখতিয়ার দুদকের। ব্যক্তির কাছে দুর্নীতির তথ্য থাকলে তিনি দুদককে জানাতে পারেন। কিন্তু নিজ উদ্যোগে কেউ কিছু করতে পারে না। দুদক অভিযোগ না নিলে স্পেশাল কোর্টে অভিযোগ দায়ের করতে পারে,” বলেন শিহাব উদ্দিন খান।

দুর্নীতি দমন কমিশন যখন কোন দুর্নীতির মামলা করে সেখানে তারা কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করে।

দুদকে মামলা হওয়ার প্রাথমিক প্রক্রিয়া হল, প্রাথমিক তথ্য অনুসন্ধান করা, দুদক আইন অনুযায়ী প্রমাণ পেলে নিয়মিত মামলা দায়ের করেন। দুদকের মামলা স্পেশাল আদালতে যায়, সেখানে ফাইনাল রিপোর্ট দাখিল হয়, পরে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়

“আমাদের ট্র্যাডিশনাল ফৌজদারি ব্যবস্থায় একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়ার ভোগান্তি তো আছেই। ভুক্তভোগী সবাই। কিন্তু দুদকের যেহেতু এ সংক্রান্ত অপরাধ বিচারের একক এখতিয়ার, তাদের এর বাইরে অন্য কাজ নাই; সেক্ষেত্রে ওনারা প্রাথমিক তদন্ত দ্রুত করলে আদালতে দ্রুত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারে। তখন এটি দ্রুত করা সম্ভব,” বলেন মি. খান।

কিন্তু যেহেতু এটা সম্পদের বিষয়, অনেক প্রমাণের বিষয়, কিছুটা সময় দরকার বলে তিনি মনে করেন।

বাংলা৭১নিউজ/সূত্র: বিবিসি অনলাইন

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com