সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং তার যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে নগরে জনস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা সম্ভব। রোববার (৮ নভেম্বর) বিশ্ব নগর পরিকল্পনা দিবস ২০২০ উপলক্ষে জনস্বাস্থ্যের জন্য নগর পরিকল্পনা শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে এ মন্তব্য করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট পরিকল্পনাবিদ মুহাম্মদ আরিফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং তার যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে নগরে জনস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা সম্ভব। উপযুক্ত ভূমি ব্যবহার ও জন ঘনত্ব নিয়ন্ত্রণের মধ্য দিয়ে নগরে বাসযোগ্যতা নিশ্চিতকরণে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন তিনি। পরিকল্পিত বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে এবং দেশবাসীকে পরিকল্পনার উপকারিতা সম্পর্কে অবহিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেন এই নগর পরিকল্পনাবিদ।
সেমিনারের বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের উপদেষ্টা পরিষদের আহ্বায়ক পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. এ কে এম আবুল কালাম বলেন, নগরকেন্দ্রিক কর্মকাণ্ডের সাথে জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত। তাই নগর কেন্দ্রিক কর্মকাণ্ডে নগর পরিকল্পনাকে গুরুত্ব না দিলে জনস্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন না করলে মানব বসতির বিভিন্ন সমস্যা, স্বাস্থ্যঝুঁকি, পরিবেশগত ঝুঁকি থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়। তিনি জনস্বাস্থ্য থেকে শুরু করে উন্নয়নের প্রতিটি অবকাঠামোগত খাতে পরিকল্পনাবিদের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং পরিকল্পনার মাধ্যমে সামাজিক, মানসিক, পরিবেশগত জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রদান করা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন।
ওয়েবিনারে ব্র্যাক-আরবান ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম এর জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচির পরিচালক মোঃ লিয়াকত আলী, পিএইচডি বস্তির সাথে জনস্বাস্থ্য সমন্বয় করে বলেন, বস্তিতে যারা বসবাস করে তাদের কথা মাথায় রেখে জনসাধারণ কেন্দ্রিক পরিকল্পনা করতে হবে। বস্তিতে আলো-বাতাসের স্বল্পতা, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করা অসম্ভব।
এছাড়াও, কোভিড মহামারির কারণে নতুন বর্জ্য যুক্ত হয়েছে, যার সঠিক ব্যবস্থাপনা করতে হবে এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, বস্তিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, ইউটিলিটি সার্ভিসের সাথে সমন্বয়ের চেষ্টা এবং জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব বিবেচনায় রেখে আবাসন প্রদানের চেষ্টা করা হয়। দ্রুত নগরায়ন, জলবায়ু পরিবর্তন, জলাবদ্ধতাসহ নগরের সমস্যা চিহ্নিত করে পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করতে হবে।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স এর সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ এর সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এমপি। এছাড়াও গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার এবং ব্র্যাক-আরবান ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচির পরিচালক মো. লিয়াকত আলী, পিএইচডি, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের উপদেষ্টা পরিষদের আহ্বায়ক পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. এ কে এম আবুল কালাম সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
আগামী দিনের বাংলাদেশে বাসযোগ্য নগর ও জনবসতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে জনস্বাস্থ্যকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে নগর পরিকল্পনায় ভবন নির্মাণের সময় কয়েকটি বিষয়ে জোর দেয়ার পরামর্শ দেন বক্তারা।
বাংলা৭১নিউজ/এএম