বাংলা৭১নিউজ, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : পূর্ববিরোধ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার নরিনা ইউনিয়নের বাতিয়া গ্রামের মন্ডল গ্রুপের লোকজন পরিকল্পিতভাবে ফালাবিদ্ধ করে রাসেল ফকির (৩২) নামের এক যুবককে হত্যা করেছে মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে । নিহত রাসেল ওই গ্রামের ফিরোজ উদ্দিন ফকিরের ছেলে।
ফকির গোষ্ঠির লোকজন খবর পেয়ে রাসেলকে উদ্ধার করতে গেলে মন্ডল গ্রুপের সমর্থকেরা তাদের ওপরও হামলা চালালে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। সংঘর্ষ চলাকালে ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ৫/৬ টি বাড়িঘর ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করেছে। থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। সরেজমিন পরিদর্শকালে এলাকাবাসী জানায়, এদিন সকাল প্রায় ১০ টার দিকে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী উপজেলার নরিনা ইউনিয়নের বাতিয়া গ্রামের আফসার মন্ডলের নেতৃত্বে বাচ্চু, বিল্লু, যুবলু, সরো, আলতাব, নজরুলসহ ৫০/৬০ জন মন্ডল গোষ্ঠির লোকজন লাঠি, ফালা, হলঙ্গা, হাসুয়া, রামদা, চাইনিজ কুড়ালসহ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রাইমারি স্কুল সংলগ্ন এলাকায় এসে ফকির গোষ্ঠির লোকজনকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি প্রদর্শনপূর্বক ফিরে যাচ্ছিলো।
তারা অাব্দুর রহমানের বাড়ি সংলগ্ন সড়ক দিয়ে ফেরার পথে ফকির গোষ্ঠির রাসেলকে একা পেয়ে বেধড়ক পিটিয়ে ও ফালাবিদ্ধ করলে ঘটনাস্থলেই মারা যায় রাসেল। এ খবর পেয়ে ফকির গোষ্ঠির লোকজন ঘটনাস্থলে গেলে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে সাত্তার, ইয়াছিন, সরোয়ার, শহীদসহ ৫/৬ জনের বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। পরে ফকির গোষ্ঠির লোকজন রাসেলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ফকির গোষ্ঠির লোকজনের অভিযোগ,”মন্ডল গোষ্ঠির লোকজন জনৈক উচ্চপদস্থ এক পুলিশ কর্মকর্তার প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাদের নানাভাবে হয়রানি করে আসছে।” খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। সংঘর্ষ এড়াতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল) ফাহমিদা হক শেলী, থানার অফিসার ইনচার্জ মো: খাজা গোলাম কিবরিয়া ও নরিনা ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল হক মুন্ত্রী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহতের বড় ভাই জিল্লুর রহমান বাদী হয়ে ৩১ নামীয় ও বেশ কয়েকজন অজ্ঞাতনামানামাকে আসামী করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। থানার অফিসার ইনচার্জ মো: খাজা গোলাম কিবরিয়া বলেন,”পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করেছে। অপ্রীতিকর ও অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশী টহল জোরদার করা হয়েছে।”
বাংলা৭১নিউজ/জেএস