সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
দুই নারী কর্মকর্তাকে কুপিয়ে সোনালী ব্যাংকের ৭ লাখ টাকা ছিনতাই বাংলাদেশ সফরে আসছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আইনের শাসনের বিকল্প নেই ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি ঢাকায় গ্রেফতার প্রাণী রক্ষায় আরও মানবিক হতে হবে: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা রূপালী ব্যাংকে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস পালন শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদের ৩৮৪তম সভা অনুষ্ঠিত সাবেক মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার মারা গেছেন রেললাইনে উঠে গেছে তিস্তার পানি, দুর্ভোগ চরমে: লালমনিরহাট ধর্ষণ মামলায় আসামি হলেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ টি-টোয়েন্টিতে নতুন মুখ ২টি, ফিরলেন মিরাজ চট্টগ্রাম বন্দরে বিনিয়োগে আগ্রহী সংযুক্ত আরব আমিরাত সমবায় ব্যাংকের লকার থেকে ১২ হাজার ভরি সোনা গায়েব গত ২৪ ঘণ্টায় বছরের সর্বোচ্চ ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ৮ নেতানিয়াহুর ওপর হামলা, ইসরাইলজুড়ে বিমান পরিবহন বন্ধ ঘোষণা ৪০ লাখ শ্রমিক পাবে টিসিবির পণ্য, ১ অক্টোবর থেকে বিতরণ তারুণ্যের সামনে স্বৈরাচারের দানবীয় শক্তি খড়কুটোর মত ভেসে যায়: জিএম কাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন উপদেষ্টা আসিফ পলিথিন বর্জনের কার্যক্রম ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে আমরা আগস্ট বিপ্লবের প্রতিফলন দেখতে চাই: মেজর হাফিজ

হারিয়ে গেছে কৃষ্ণচূড়ার রঙ

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় বৃহস্পতিবার, ৩ মে, ২০১৮
  • ২৯৯ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, মোঃ মনজুর-ই-মওলা সাব্বির, নাটোর প্রতিনিধি: কৃষ্ণচূড়ার রঙ হারিয়ে নাটোর শহর যেন হয়ে পড়েছে বর্ণহীন। অথচ বিগত এক দশক ধওে রাস্তার দু’ধাওে শতশত কৃষ্ণচূড়ার গাছে ফুলের সমারোহ রঙ ছড়িয়ে শহরকে করে তুলতো বর্ণময়। গ্রীষ্মের প্রচন্ড খরতাপে বিশুদ্ধ অক্সিজেনের পাশাপাশি এসব গাছ দিয়ে আসছিল ক্লান্ত দেহে ছায়া আর মনে প্রশান্তির পরশ।

চলন বিলের শস্যরাজি, রাণীভবানীর রাজত্ব, বনলতা সেনের কবিতার শব্দ, কাঁচাগোল্লার স্বাদেই শুধু নাটোরের পরিচিতি নয়। এক সময় নাটোরের পরিচিতি ছিলো দু®প্রাপ্য ফুলের শহর হিসেবেও। নাটোরের সৌখিন রাজন্যবর্গ তাদেও রাজবাড়ী চত্বরকে সাজাতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে নিয়ে আসেন অসংখ্য ফুলগাছ। গড়ে তোলেন পুষ্প রাজত্ব। নাটোরের রাণীভবানী রাজবাড়ী আর উত্তরা গণভবনে এখনো শোভা বর্ধন করছে নাগালিঙ্গম, ম্যাগনোলিয়া, হৈমন্তি, সুরভিকা, এগপ্লান্ট, কর্পূর, পারিজাতের মত বিলুপ্ত প্রায় ফুলের গাছ। রাজাদের দেখাদেখি প্রজারাও ফুলচাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন। দু’দশক আগেও নাটোর শহরের অসংখ্য বাড়ীকে শোভা বর্ধন করতো ফুলের বাগান। জীবনের জটিলতায় শহরে ফুলের বাগান কমে গেছে।

অতীত ঐতিহ্যকে বহমান রাখতে ২০০২ সালে স্বজন সমাবেশ নামে একটি সামাজিক সংগঠন ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ গ্রহন করে। নাটোর পৌরসভার তৎকালীন চেয়ারম্যান এডভোকেট কামরুল ইসলামের সহযোগিতায় সারা শহরে রাস্তার দু’ধারে রোপন করা হয় দু’হাজার স্থায়ী ফুলের গাছ। এর বেশীরভাগ ছিলো কৃষ্ণচূড়া, পাশাপাশি কাঞ্চন, সোনালু, কদম ইত্যাদি। নাটোর স্বজন সমাবেশের তৎকালীন সভাপতি ডাঃ আব্দুল হামিদ বলেন, পুষ্পিত নাটোর কর্মসূচী বাস্তবায়নের ফলে মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যে গাছের ফুল রঙ ছড়াতে শুরু করে, যথার্থই নাটোর হয়ে ওঠে পুষ্পিত নাটোর। সংগঠনের ঐ সময়ের সাধারন সম্পাদক ফারাজী আহম্মদ রফিক বাবন বলেন, কর্মসূচীর উদ্দেশ্য ছিলো বসন্তে কাঞ্চন, গ্রীষ্মে কৃষ্ণচূড়া, সোনালু আর বর্ষায় কদম শহরকে সুশোভিত করবে, সুরভিত করবে।

গ্রীষ্মের তাপদাহে গাছের ছায়া রাস্তার দু’ধারে থাকা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে স্বন্তি এনে দিয়েছিল। আর এর ছায়ায় বসতো চায়ের দোকান, পিয়াজু-বেগুনীর দোকান, কাপড়ের দোকান আর সাইকেল গ্যারেজ। গাছগুলোর ছায়া শ্রমজীবীদের জন্যে ছিল পরম স্বস্তির। শহরের মূল সড়ক প্রশস্তকরণ কাজ শুরু হলে সম্প্রতি “পুষ্পিত নাটোর” এর প্রায় সব ফুলের গাছই কাটা পড়ে। গত এক দশক ধরে কৃষ্ণচূড়ার রঙ ছড়ানো শহর হিসেবে পরিচিতি পাওয়া নাটোর এখন বিবর্ণ। নাটোর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি আর গীতি সিনেমা হলের সামনে বেঁচে যাওয়া দুইটি কৃষ্ণচূড়া গাছ এখনো রঙ ছড়িয়ে যাচ্ছে। কিন্তু পাঁচ কিলোমিটার সড়কের অন্য কোথাও কৃষ্ণচূড়ার গাছ নেই, নেই রঙের বর্ণচ্ছটা। শহরময় কৃষ্ণচূড়ার শূণ্যতা যেন ছন্দময় শহরকে গদ্যময় করে দিয়েছে, বললেন কলেজ শিক্ষক ও সঙ্গিত প্রশিক্ষক মাসুমা সুলতানা রুপা। সংগঠক জুলফিকুল হায়দার বাবু বলেন, গাছগুলো ছিল আমাদের সন্তানের মত। আগে গাছ আর ফুলের দিকে তাকালে চোখ জুড়িয়ে যেত। আর এখন হাহাকারে বুক ভরে যায়।

নাটোর সদর উপজেলায় সহকারী কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে বর্তমানে বেড়া উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ফারজানা খানম বলেন, গ্রীষ্মের খর তাপে দু’দন্ড শান্তির পরশ হয়েছিল শহরের কৃষ্ণচূড়া গাছগুলো। এত রঙের বর্ণচ্ছটা অন্য শহরে আছে বলে আমার জানা নেই। গাছগুলো কাটা পড়ার শূণ্যতা পূরণে “পুষ্পিত নাটোর” কর্মসূচীর মত নতুন কর্মসূচী বাস্তবায়নে কোন সামাজিক সংগঠন এগিয়ে আসবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন এই কর্মকর্তা।

নাটোরের জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন বলেন, শহরে নির্মিতব্য রাস্তার মাঝে চারফুট প্রশস্ত মিডিয়ানের মধ্যে ফুলের গাছ লাগিয়ে শহরকে পুষ্পিত করার উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। এছাড়া কিছু ফুলের চারা তৈরী করা হয়েছে যা শহরের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্যে পরিকল্পিতভাবে রোপন করা হবে।

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com