মাদারীপুরের শিবচরের র্যাব পরিচয়ে গণ উন্নয়ন সমবায় সমিতি নামের একটি এনজিওর দুই কর্মীকে তুলে নিয়ে ২০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে সন্ন্যাসীরচর ইউনিয়নের পাচু হাওলাদারকান্দি গ্রামের সুমি নার্সারির কাছে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একটি মামলা করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে শিবচরের পাচ্চর ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংককে ২০ লাখ টাকা তুলতে আসেন গণ উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের মালের হাট শাখার ক্যাশিয়ার ওয়াজেদ আলী ও সুপারভাইজার নাজমুল হুদা। তারা টাকা উত্তোলন করে একটি কালো রঙের ব্যাগে টাকা নিয়ে ব্যাংকের সামনে থেকে নিজেদের মোটরসাইকেলে চড়ে মালের হাট শাখা অফিসে রওনা দেন।
তাদের মোটরসাইকেলটি সন্ন্যাসীরচর ইউনিয়নের পাচু হাওলাদারকান্দি গ্রামের সুমি নার্সারির কাছে পৌঁছালে সেখানে সিলভার রঙের একটি প্রাইভেটকার থেকে র্যাবের কটি গায়ে দেওয়া তিনজন লোক নেমে তাদের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করেন। ওই তিন ব্যক্তি নিজেদের র্যাব পরিচয় দিয়ে ওয়াজেদ আলীর কাছে মাদকদ্রব্য আছে বলে দাবি করেন। পরে ওয়াজেদ আলী ও নাজমুল হুদাকে জোর করে প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে চোখ বেঁধে ফেলে।
চলন্ত গাড়ির মধ্যে তাদের মারধর করে ব্যাগে থাকা ২০ লাখ টাকা কেড়ে নেন ওই তিন ব্যক্তি। দুপুর ১২টার দিকে ফরিদপুরের নগরকান্দা থানার কালিয়ার মোড় এলাকায় মহাসড়কে তাদের নামিয়ে দিয়ে গোপালগঞ্জের দিকে চলে যান ছিনতাইকারীরা। পরে খবর পেয়ে মাদারীপুর সহকারী পুলিশ সুপার (শিবচর সার্কেল) আনিসুর রহমান, শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিরাজ হোসেনসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
পাঁচ্চর ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, মঙ্গলবার সকালে গণ উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের দুই স্টাফ ব্যাংকে ঢোকার প্রায় ১০ মিনিট আগে মাস্ক পরিহিত এক যুবক ব্যাংকে প্রবেশ করেন।
ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার ভান করে পকেট থেকে টাকা বের করলেও জমা না দিয়ে ব্যাংকের সোফায় বসে থাকেন। এরপর গণ উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের দুই স্টাফ টাকা উত্তোলন করে বের হওয়ার ১০ সেকেন্ড আগে ব্যাংক থেকে বের হয়ে গেটের সামনে দাঁড়ায়।
এনজিওর স্টাফরা গেট অতিক্রম করার পর ওই যুবক মোবাইলে কথা বলতে বলতে তাদের পিছু নেন।এনজিও স্টাফ ওয়াজেদ আলী বলেন, ‘গাড়িটি পেছন থেকে দ্রুতগতিতে আমাদের অতিক্রম করে। পরে নার্সারির সামনে থেকে র্যাবের কটি পরা তিনজনকে আমাদের গাড়িতে তুলে নেয়। পরে চোখ বেঁধে বেদম মারধর করে টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে আমাদের সড়কে ফেলে যায়।’
এনজিওর ওই শাখার ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সব সময় বিভিন্ন কৌশলে ব্যাংক থেকে টাকা আনি। যে দুজন এবার এতো টাকা আনতে গেলেন তারা আমাকে জানিয়ে যাননি।’
এনজিওর চেয়ারম্যান মো. হাশেম মিয়া বলেন, টাকা উত্তোলনের আগে ব্যাংক থেকে আমাকে একবার ফোন দিয়েছিল, আমি ধরতে পারিনি। খবর পেয়ে পুলিশকে জানালে তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
এ বিষয়ে পাচ্চর ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ম্যানেজার হেমায়েত উদ্দিন বলেন, ব্যাংকে মাস্ক পরা ওই যুবকের গতিবিধি খুবই সন্দেহজনক।
সহকারী পুলিশ সুপার (শিবচর সার্কেল) আনিসুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় একটি মামলা করা হয়েছে। ছিনতাইকারীদের ধরতে অভিযান চলছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ