বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: বিচারকদের আলাদা শৃঙ্খলা বিধিমালার প্রয়োজন নেই, রাষ্ট্রপতির এমন সিদ্ধান্তের এক দিন পর শৃঙ্খলা বিধিমালা প্রণয়ন করতে সরকারকে এক মাস সময় বেঁধে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
আজ সকালে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আট বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালত বলেন, রাষ্ট্রপতিকে ভুল বুঝিয়ে এই নোটিশ জারি করা হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ন্যূনতম জ্ঞান থাকলে তারা এটা করতেন না। বিচারকদের শৃঙ্খলা বিধিমালা প্রণয়ন বিচারকদের স্বাধীনতার সঙ্গে জড়িত। তাই ১৫ জানুয়ারির মধ্যে সরকারকে এটি করতে হবে।
আপিল বিভাগ আরো বলেন, সংসদীয় ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি নিয়োগ ছাড়া রাষ্ট্রপতির কোনো ক্ষমতা নেই। তাকে ভুল বুঝিয়ে এটি করা হয়েছে।
এ সময় আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব আবু সালেহ শেখ মোহাম্মদ জহিরুল হক ও শহীদুল হক এবং রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, রোববার রাতে বিচারকদের আলাদা শৃঙ্খলা বিধিমালা প্রয়োজন নেই বলে মত দেন রাষ্ট্রপতি। বিষয়টি আইন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এক নোটিশের মাধ্যমে জানানো হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়ন না করায় এই আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিবকে তলব করেন আপিল বিভাগ। সে মোতাবেক সোমবার সকাল ৯টার আগেই দুই সচিব আপিল বিভাগে উপস্থিত হন। এরপর নিম্ন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি নিয়ে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আট বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
গত বৃহস্পতিবার আদালত অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেন, ‘আমরা লিখিত আদেশ দিচ্ছি না। আপনাকে মৌখিকভাবে বলছি, সোমবার সকাল ৯টায় দুই সচিবকে নিয়ে হাজির হবেন। এটা একটা মেসেজ।’
বিধিমালা প্রণয়নের জন্য অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আরো সময় আবেদন করলে আদালত নাকচ করে দিয়ে বলেন, ‘চার সপ্তাহ, দুই সপ্তাহ, এক সপ্তাহ করে আমরা বারবার সময় দিয়েছি। আইনমন্ত্রী নিজে সময় নিয়েছেন। কিন্তু এখনো বিধিমালা প্রণয়ন করেননি। এটা আদালতের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।’
আদালত আরো বলেন, ‘বিধিমালা না থাকায় বিচার বিভাগের এমন অবস্থা হয়েছে যে আমরা কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছি না।’
প্রধান বিচারপতি অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা আপনাকে বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে বলেছিলাম। কিন্তু আপনি তা করেননি।’ তখন অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি এবং বলেছি।’
এর আগে গত ৭ নভেম্বর বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালা ২৪ নভেম্বরের মধ্যে গেজেট আকারে প্রণয়ন করতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ।
১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেন মামলায় ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেওয়া হয়। ওই রায়ের আলোকে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল।
বাংলা৭১নিউজ/এম