রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সর্দার ইছা খাঁ ওরফে রাজ্জাকসহ তিন পেশাদার ডাকাতকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছে র্যাব। ডাকাতির প্রস্তুতিকালে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতাররা হলেন- ইছা খাঁ ওরফে রাজ্জাক (৩৪), সৈয়দ জসিম উদ্দিন (৫০) ও নুর ইসলাম (২৮)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত একটি একনলা বন্দুক, ৩ রাউন্ড গুলি, একটি চাকু, দুইটি দেশীয় ধারালো অস্ত্র, পাঁচটি মোবাইল ফোন ও নগদ ২ হাজার ১৮০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১০ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।
তিনি বলেন, বুধবার র্যাব-১০ এর একটি দল যাত্রাবাড়ী থানার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন রায়েরবাগ এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযানে ডাকাতির প্রস্ততিকালে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের মূল হোতা ইছা খাঁ ওরফে রাজ্জাক ও তার দুই সহযোগীকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়।
অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন আরও বলেন, গ্রেফতার ব্যক্তিরা আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য, যাদের মূল নেতৃত্বে রয়েছেন রাজ্জাক। তারা গত এক মাসে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, চাঁদপুর, পাটুয়াখালী ও কুড়িগ্রামে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে স্বর্ণালংকার, টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ ডাকাতি করেছেন।
তারা বড় বড় ব্যবসায়ীদের অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের চাঁদা আদায় করতেন এবং ডাকাতির কাজে কেউ বাধা দিলে বা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদেরকে বিভিন্ন প্রকার হুমকি দিতেন। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা ও গুরুতর জখম করার অভিযোগও রয়েছে। ডাকাতির স্থান আগেই নির্ধারণ করে তারা বেশ কয়েকবার সেখানে রেকি করে তারপর অস্ত্রশস্ত্র ও ডাকাতির প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি নিয়ে ডাকাতি করতেন। এভাবে তারা প্রতি মাসে ২ থেকে ৩টি ডাকাতি করতেন।
র্যাব-১০ এর অধিনায়ক বলেন, ডাকাত সর্দার রাজ্জাক অন্য পেশার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতি চক্রের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। তার নির্দেশে ওই ডাকাত দলের সদস্যরা একটি নির্দিষ্ট স্থানে উপস্থিত হয়ে ডাকাতির প্রস্তুতি নিতেন। তার নেতৃত্বে দেশের বিভিন্ন এলাকার বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বিদেশ থেকে আগত প্রবাসীদের বাড়ি এবং বিভিন্ন মহাসড়কে গাড়ি থামিয়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ডাকাতি করে আসছিলেন।
গ্রেফতার জসিমও অন্য পেশার আড়ালে ডাকাত চক্রটির তথ্য সংগ্রহকারী ও দিকনির্দেশক হিসেবে কাজ করতেন। ২০১৩ সালের মগবাজারের চাঞ্চল্যকর বিদেশির বাড়িতে ডাকাতির সময় কেয়ারটেকার হত্যা মামলার আসামি। আর নুর ইসলাম অন্য পেশার আড়ালে রাজ্জাকের সঙ্গে ডাকাতি চক্রের অন্যতম সদস্য হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। নুর ইসলামের আশ্রয়স্থলে ডাকাতির সব পরিকল্পনা করা হতো এবং ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অস্ত্র ও সরঞ্জামাদি তার দায়িত্বে তাদের গোপন আস্তানায় রাখা হতো।
গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, রাজ্জাকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যা, ডাকাতি ও অস্ত্র মামলাসহ মোট ৪টি এবং জসিমের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা রয়েছে।
গ্রেফতার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় ডাকাতি প্রস্তুতির মামলা রুজুর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান এই র্যাব কর্মকর্তা।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ