যাদের হাতে ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর ও ২১ আগস্টের রক্তের দাগ, তারা করবে রাষ্ট্র মেরামত? এমন প্রশ্ন রেখেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
‘রাষ্ট্র মেরামতের রূপরেখা তৈরি করছেন, ঘোষণা দেবেন,’ বিএনপির এক নেতার এমন বক্তব্যের জবাবে বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুব মহিলা লীগের সম্মেলনে বক্তব্য দিতে এ প্রশ্ন করেন কাদের।
তিনি বলেন, বিএনপির এক নেতা বলেছেন, ‘রাষ্ট্র মেরামতের রূপরেখা তৈরি করছেন, ঘোষণা দেবেন।’ এটা বিএনপি তৈরি করবে? যাদের হাতে ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর ও ২১ আগস্টের রক্তের দাগ, তারা করবে রাষ্ট্র মেরামত? বঙ্গবন্ধুর খুনীদের মুক্তি দিতে যারা আমাদের সংবিধান সংশোধন করেছে। ৫ বার যারা দুর্নীতিতে বাংলাদেশকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন করেছে, তারা করবে রাষ্ট্র মেরামত? যারা আমাদের দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে, যারা দণ্ডিত হয়েছে, তারা করবে রাষ্ট্র মেরামত। মুচলেকা দিয়ে লন্ডনে চলে গেছেন, তিনি হবেন আপনাদের নেতা? ১০ ডিসেম্বরের পর নাকি খালেদা জিয়া দেশ চালাবেন, কোথায় গেল সেই অহংকার। বাংলাদেশের জনগণ আপনাদের দম্ভ চুর্ণ-বিচুর্ণ করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। এত ঝুঁকিপূর্ণ জীবন ৭৫-এর পরে আর কোনো রাজনীতিকের জীবনে হয়নি। তিনি আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পান না।
কাদের বলেন, শেখ হাসিনার অপরাধ, নিজের টাকায় পদ্মা সেতু। ১০০ সেতু একদিনে উদ্বোধন। ১০০ রাস্তা একদিনে উদ্বোধন করবেন। মেট্রোরেল উদ্বোধন হবে, চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু টানেল হয়েছে। উন্নয়নের নেত্রী শেখ হাসিনা। এ কারণে বড় জ্বালা, বিএনপির অন্তর্জ্বালা। জ্বালায় জ্বালায় মরেরে। কেন এগুলো হলো, কেন এগুলো করলেন।
আন্দোলনের জন্য যুব মহিলা লীগকে প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রস্তুত হয়ে যান। আবারও সংগ্রাম, আবারও আন্দোলন মোকাবিলা হবে। নির্বাচনে আবারও মোকাবিলা হবে।
এসময় যুব মহিলা লীগের প্রশংসা করে তিনি বলেন, যুব মহিলা লীগ আমাদের দেশের রাজনীতিতে এক বিস্ময়কর আবিষ্কার। শেখ হাসিনা সেটি করেছেন। তরুণদের যুবলীগ আছে। তরুণীদের কী হবে! এই চিন্তা থেকে তিনি যুব মহিলা লীগ করেছেন। রাজপথে নিপীড়ন, গণনির্যাতন, জেল জুলুমের ইতিহাস যুব মহিলা লীগের।
ওবায়দুল কাদের বলেন, পলাশীর ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে ৭৫ এর ১৫ আগস্ট। পলাশীর মীর জাফর ও ইয়ার লতিফের জায়গা ১৫ আগস্টে ছিল খুনি মোস্তাক ও জিয়াউর রহমান। পৃথিবীর ইতিহাসের কোনো হত্যাকাণ্ডে, কোনো অবলা নারী, অবুঝ শিশু টার্গেট হয়নি। কিন্তু ১৫ আগস্টে হয়েছে। পৃথিবীর ইতিহাসের নৃশংস হত্যাকাণ্ড ছিল এটি।
যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তারের সভাপতিত্বে ও অপু উকিলের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন।
২০০২ সালের ৬ জুলাই গঠিত হয় যুব মহিলা লীগ। সেসময় নাজমা আক্তারকে আহ্বায়ক ও অপু উকিলকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ১০১ সদস্যের কমিটি করা হয়। সংগঠনটির প্রথম সম্মেলন হয় ২০০৪ সালে। এতে নাজমা আক্তারকে সভাপতি ও অপু উকিলকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। তিন বছর পর পর সম্মেলনের গঠনতান্ত্রিক বাধ্যবাধকতা থাকলেও ১৩ বছর পর হয় দ্বিতীয় সম্মেলন। ২০১৭ সালের ১৭ মার্চ যুব মহিলা লীগের সর্বশেষ সম্মেলনে ফের নাজমা আক্তার ও অপু উকিলই নেতৃত্বে আসেন।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ