করোনার সংক্রমণ দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় বিপর্যয়ে পড়েছে মৌলভীবাজারের পোল্ট্রি শিল্প। বাজারে কমেছে সব ধরনের মুরগি ও ডিমের দাম। এতে বিপাকে রয়েছেন জেলার এক হাজার ২১২ খামারি।
খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে সব ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তাই মুরগির দাম কমেছে। তবে পোল্ট্রি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, মুরগির দাম কমলেও ব্যবসায়িক সিন্ডিকেটের কারণে কয়েক দফা বেড়েছে মুরগির খাবারের দাম। এতে পুঁজির অভাবে ব্যবসা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা।
মৌলভীবাজারের পোল্ট্রি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাসান আহমদ বলেন, করোনার নেতিবাচক প্রভাবে খামারিরা দিশেহারা। লোকসানে পড়ে অনেকেই ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন।
কমলগঞ্জ উপজেলার মা-মণি পোল্ট্রি খামারের স্বত্বাধিকারী আব্দুর রউফ জানান, ব্রয়লার জাতের চার হাজার মোরগের চারটি সেড ছিল। কিন্তু দাম না পাওয়ায় প্রায় চার লাখ টাকা লোকসান হয়েছে।
রাজনগর উপজেলার শামিম পোল্ট্রি খামারের স্বত্বাধিকারী সাহেদ আহমদ জানান, প্রতি হালি ডিমের দাম ৩০-৪০ টাকা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে ডিমের দাম হালিতে ১২ টাকা কমেছে। গত মার্চেও প্রতি হালি ডিম বিক্রি হয় ৩৬ টাকায়। অথচ এখন বিক্রি হচ্ছে ২৪ টাকায়। সোনালী মুরগীর দামও কেজি প্রতি ২১০ টাকা থেকে কমে হয়েছে ১৬০-১৭০ টাকা।
মৌলভীবাজারের পোল্ট্রি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জাহেদুল হক জানান, করোনাসংক্রমণ রোধে দেশে যান চলাচল বন্ধ থাকায় ডিম ও মুরগির বাজার নিম্নমুখী। এতে অনেক খামারিই আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুস ছামাদ বলেন, চলমান করোনা পরিস্থিতিতে সরবারহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় খামারিরা তাদের উৎপাদিত মুরগি ও ডিমের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই খামারিদের জন্য বিশেষ প্রণোদনা অব্যাহত রাখা হয়েছে। এছাড়া, উপজেলা খামারিদের তালিকা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
পশুসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পোল্ট্রি খামারকে টিকিয়ে রাখতে নানা ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। খামারিদের সহজ শর্তে প্রণোদনা ও ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থাসহ নানা ধরনের পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া করোনার সময়েও খামারিদের কাছ থেকে ডিম সংগ্রহ করে ভ্রাম্যমাণ যানবাহন দিয়ে সরবরাহ করা হচ্ছে।
বাংলা৭১নিউজ/সিএফ