বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: পহেলা রমজান থেকে ২৬ রমজান পর্যন্ত রাজধানীতে মাংসের দাম নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে গতকাল (সোমবার)। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রতিনিধি এবং মাংস ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রাজধানীতে দেশি গরুর মাংস প্রতি কেজি ৫২৫ টাকা, বিদেশি বা বোল্ডার গরুর মাংস প্রতি কেজি ৫০০ টাকা এবং মহিষের মাংস কেজি প্রতি ৪৮০ টাকায় বিক্রি করতে হবে। সেই সঙ্গে খাসির মাংস প্রতি কেজি ৭৫০ টাকা এবং ভেড়া ও ছাগীর মাংস প্রতি কেজি ৬৫০ টাকায় বিক্রির জন্য দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু রমজানের প্রথম দিনেই গরুর মাংসের ক্ষেত্রে নির্ধারিত দাম কেউ মানছে বলে অভিযোগ তুলেছে ক্রেতারা।
সোমবার (৬ মে) বৈঠকে মেয়র সাঈদ খোকন বলেছিলেন, যদি কোনো ব্যবসায়ী নির্ধারিত দামে মাংস বিক্রয় না করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গতকাল বিকেলে এক মতবিনিময় সভায় ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, রমজান মাসে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতায় ৪৩টি বাজারে ৮টি টিম অভিযান চালাবে। খাদ্য ভেজালমুক্ত রাখাসহ বাজারের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে মনিটরিং করবে এই টিম। যারা পণ্যে ভেজাল দেবে বা পণ্যের দাম বেশি নেবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রমজানের প্রথম দিনে মালিবাগ, মুগদা, শাহজাহানপুর ও বাড্ডা এলাকার বেশ কিছু মাংসের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, সব দোকানেই গরুর মাংস ৫৫০ থেকে ৫৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ সিটি কর্পোরেশন দেশি গরুর মাংস প্রতি কেজি ৫২৫ টাকা এবং বিদেশি বা বোল্ডার গরুর মাংস প্রতি কেজি ৫০০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু কোনো মাংসের দোকানে এই দাম মানা হচ্ছে না, সেই সঙ্গে মাংসের মূল্য তালিকাও নেই কোনো দোকানে। তবে খাসির দাম নির্ধারিত ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মধ্যবাড্ডায় এক দোকানে মাংস কিনছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবি নাইমুল ইসলাম। তিনি বলেন, গতকাল গণমাধ্যমের খবরে জানতে পারলাম সিটি কর্পোরেশন মাংসের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু আজ মাংস কিনতে এসে জানতে পারলাম নির্ধারিত মাংসের দামের সঙ্গে বাজারের দামের মিল নেই। কেউই নির্ধারিত দামে মাংস বিক্রি করছে না। বাধ্য হয়েই ৫৫০ টাকা দিয়ে এক কেজি গরুর মাংস কিনলাম। পাশের দোকানে আবার প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ টাকায়।
এ বিষয়ে ওই মাংসের দোকানি রাসেল আহমেদ বলেন, আমাদের গরু কিনতে হয়েছে বেশি দামে। এছাড়া গরুর খাজনা বেশি, সেই সঙ্গে আছে লাইন ফি। সব মিলিয়ে গরু কেনার দাম বেশি পড়ে যায়। তাই ইচ্ছে করলেও আমরা কম দামে মাংস বিক্রি করতে পারি না। ওই সব খরচ কমে গেলে আমরা ৫০০ বা তার চেয়েও কম দামে বিক্রি করতে পারব।
এদিকে সোমবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে এক বৈঠকে মাংস ব্যবসায়ীরা মেয়রের কাছে অভিযোগ জানিয়ে বলেছিলেন, গরুর মাংসের দাম বাড়ার পেছনে অন্যতম কারণ, গাবতলীর হাটের কতিপয় চাঁদাবাজদের উৎপাত। তাদের কারণে গরু প্রতি ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত খাজনা দিতে হয়। তাদেরকে যদি নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তাহলে মাংসের দাম অনেক কমে আসবে।
বাংলা৭১নিউজ/এলএ.বি