মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কে কটুক্তি করে বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র নূপুর শর্মার বিতর্কি ত মন্তব্য মুসলিম বিশ্বকে বিক্ষুদ্ধ করে তুলেছে। ইতোমধ্যেই কাতারে বিশ্বকাপ ফুটবল দেখতে ইচ্ছুক ভারতীয়দের ভিসা বাতিল করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে কাতার সরকার। দেশটির পক্ষ থেকে বলা হয়, কোনও ভারতীয় দর্শককে কাতারে ঢুকতে দেয়া হবে না।
এদিকে, দীর্ঘ ১১ ঘণ্টা পর হাওড়ার অঙ্কুরহাটিতে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করা নূপুর শর্মার গ্রেপ্তারের দাবিতে করা পথ অবরোধ উঠলো। এর ফলে গভীর রাত পর্যন্ত যান চলাচল ব্যাহত হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবরোধ তোলার দাবি করে ডোমজুরের বিধায়ক কল্যাণ ঘোষকে দফায় দফায় অনুরোধ জানান।
সেই আলোচনার পর রাত সাড়ে নটা নাগাদ অবরোধ ওঠে। এরই মাঝে নূপুর শর্মাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে সংবাদ মাধ্যমকে আক্রমণ ও অবরোধের নিন্দা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বাংলায় হিন্দু – মুসলিমের মধ্যে কোনও সংঘাত নেই। এখানে কেন এই আন্দোলন?
এদিকে কাতার সরকার জানিয়ে দিয়েছে, নূপুর শর্মার হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কে আক্রমণ করার প্রেক্ষিতে কাতারে বিশ্বকাপ ফুটবল দেখতে ইচ্ছুক ভারতীয়দের ভিসা বাতিল করা হচ্ছে। কোনও ভারতীয় দর্শককে কাতারে ঢুকতে দেয়া হবে না। দিল্লি পুলিশ নূপুর শর্মা, নবীন জিন্দালে এর পাশাপাশি এফআইআর দায়ের করেছে এআইএমআইএমের প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসির নামেও। হেডস্পিচ ছড়ানোর দায়েই এই এফআই আর বলে জানা গেছে।
দল থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার হওয়ার আগে পর্যন্ত ৩৭ বছর বয়সী এই আইনজীবী ছিলেন “বিজেপির সরকারি মুখপাত্র”, যিনি ছিলেন দলের উঠতি এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় একজন মুখপাত্র, যিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারের প্রতিনিধিত্ব করতে এবং সরকারের পক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দেবার জন্য রাতের পর রাত টেলিভিশনের বিতর্ক অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছেন।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন পড়ার সময় মিজ শর্মা তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করেন ২০০৮ সালে। তখন তিনি হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ আন্দোলনের ছাত্র শাখা অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)-এর ছাত্র ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হবার মাধ্যমে রাজনীতিতে ঢোকেন।
লন্ডনের স্কুল অফ ইকনমিকস থেকে আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক আইন বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি পাশ করে ২০১১ সালে ভারতে ফেরার পর রাজনীতির জগতে তার দ্রুত উত্থান হতে থাকে।
সুবক্তা এবং রূঢ়ভাষী মিজ শর্মা ইংরেজি এবং হিন্দি দুই ভাষাতেই দক্ষতা এবং দৃঢ়তার সাথে তার মতামতের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বিজেপির কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। ২০১৩ সালে দিল্লি বিধানসভার নির্বাচনে বিজেপির মিডিয়া কমিটিতে তাকে গুরুত্বপূর্ণ একটা পদ দেওয়া হয়।
এর দু’বছর পরে যখন নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তখন তিনি ছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বিপক্ষে বিজেপির প্রার্থী।
কেউ আশা করেনি ওই নির্বাচনে তিনি মি. কেজরিওয়ালকে হারিয়ে দেবেন। তবে ওই নির্বাচনের জন্য তার ব্যাপক উদ্দীপনামূলক প্রচারাভিযান তাকে দলে আরও সামনের সারিতে নিয়ে আসে।
তিনি দিল্লিতে দলের সরকারি মুখপাত্র নিযুক্ত হন এবং ২০২০ সালে তাকে বিজেপির “জাতীয় মুখপাত্র” করা হয়।
বাংলা৭১নিউজ/এসএম