বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
সবাই একসঙ্গে শান্তিতে থাকতে চাই : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে থেকে পড়ে বিদ্যুতায়িত, দুই শ্রমিকের মৃত্যু ‘আমাদের একমাত্র লক্ষ্য শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা’ বাংলাদেশ সীমান্তে অতিরিক্ত বিএসএফ মোতায়েন সৌদিতে সড়কে প্রাণ গেল ময়মনসিংহের দুই যুবকের, পরিবারে শোকের মাতম বিএনপিকর্মী মকবুল হত্যা: সাবেক মুখ্য সচিব নজিবুর কারাগারে প্রশাসন নিরপেক্ষ করতে ‘স্বৈরাচারের দোসরদের’ অপসারণ করুন সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিউল্লাহ শফিকে পুলিশে দিল ছাত্র-জনতা বইমেলায় স্টলের জন্য আবেদন করা যাবে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদকের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার নতুন সূচি প্রকাশ ভারত থেকে ২৫ হাজার টন চাল আসছে বৃহস্পতিবার আইএসও/আইইসি ২৭০০১:২০২২ সনদ অর্জন করলো পূবালী ব্যাংক কলকাতার কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন পি কে হালদার নিজ দেশে ফিরে যেতে রোহিঙ্গা মুফতি-ওলামাদের সমাবেশ ভিডিও: কাজাখস্তানে উড়োজাহাজ বিধ্বস্তে নিহত অন্তত ৪০ উপকূলীয় মানুষের নিরাপত্তা ও জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে কোস্টগার্ড দেখে নিন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সূচি, বাংলাদেশের ম্যাচ কবে কোথায়? ইসলামী ব্যাংকে নিয়োগ, স্নাতক পাসেও আবেদনের সুযোগ

মানুষ পোড়া গন্ধে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে সুগন্ধার দু’তীরের বাসিন্দারা

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক:
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ৬৩ বার পড়া হয়েছে

এখনও বাতাসে ভাসছে পোড়া গন্ধ। শুধু মানুষ পোড়া গন্ধই না, প্লাস্টিক, টিন, লোহা, ফল, খাদ্যদ্রব্য, কাপড়সহ নানাবিধ গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত অভিযান-১০ লঞ্চটি থেকে। বাতাসে এমন গন্ধে সুগন্ধার দু’পাড়ের মানুষ রয়েছে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে। এই বাতাস শরীরে প্রবেশ করলে ভবিষ্যতে বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হবেন বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

নৌ-অগ্নিকাণ্ড বিষয়ক বেসরকারি গবেষক প্রকৌশলী আসাদুল হক শাহীন সোমবার দুপুরে ঝালকাঠি লঞ্চ টার্মিনাল পরিদর্শন করেন। এসময় তার সঙ্গে ভাই প্রকৌশলী আব্দুল আলিম ছিলেন। তিনিও নৌ-অগ্নিকাণ্ড বিষয়ক বেসরকারি গবেষক। ব্যক্তিগত উদ্যোগেই তারা গবেষণায় আসেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রকৌশলী আলিম বলেন, আমরা প্রকৌশলী হিসেবে পরিদর্শন করেছি। ভেতরে পরিদর্শন করে গবেষণা শুরু করেছি। আমাদের গবেষণায় প্রাথমিকভাবে অনেক কিছু বুঝতে পেরেছি। কয়েকদিনের মধ্যে গবেষণা শেষ করে ফায়ার সার্ভিসে ত্রুটি এবং করণীয় হিসেবে প্রতিবেদন দাখিল করলে সেখান থেকে আপনারা নিয়ে বুঝতে পারবেন। অন্য সবাই যেভাবে দেখেই মন্তব্য করে আমরা তা পারি না, অনেক বিষয় ভেবেই বলতে হয়।

তিনি আরো জানান, ফায়ার সায়েন্স অনুযায়ী কোথায় কিভাবে আগুন লাগছে তা নির্ণয় খুব সহজ বিষয়। তবে ঝুঁকির বিষয় হলো এই দূষিত বাতাস যদি আরো কিছু দিন থাকে তাহলে পার্শ্ববর্তী মানুষ শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগবে। একপর্যায়ে তা শরীরের ভিতরে বসে বিভিন্ন রোগের বাসা বাঁধবে। তা থেকে একসময়ে ক্যান্সার সৃষ্টি হতে পারে। যা বুঝে ওঠা বড়ই মুশকিল হয়ে যাবে। যখন বুঝবে তখন তার শরীরে আর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকবে না। অফিসিয়ালি তদন্ত কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করে লঞ্চটি স্থানান্তর করার পরামর্শও দেন তারা।

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মেডিসিন কনসালটেন্ট ডা. আবুয়াল হাসান জানান, পোড়া গন্ধে শ্বাসকষ্টজনিত রোগ দেখা দিতে পারে। যদি বেশি থাকে তাহলে একসময় শরীরে বিভিন্ন রোগ বাসা বেঁধে ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারে।

 

ঢাকা থেকে বরগুনাগামী যাত্রীবাহী অভিযান-১০ নামের লঞ্চে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে অগ্নিকাণ্ডে এ পর্যন্ত ৪৩ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে অনেক যাত্রী।

স্বজনদের কান্নায় ভারী হচ্ছে সুগন্ধার বাতাস। সেই বাতাসের সঙ্গে লঞ্চ থেকে ভেসে আসছে মানুষসহ ও বিভিন্ন সামগ্রী পোড়ার গন্ধ। তিনতলা বিশিষ্ট বিলাসবহুল ওই লঞ্চে কয়েকটি পরিত্যক্ত স্যান্ডেল, হাজারেরও বেশি চশমার ফ্রেম, ঘড়ি কয়েকশ, বই, ব্যাগ, গলিত প্লাস্টিকসহ বিভিন্ন সামগ্রী পড়েছিল। দমকল বাহিনীর সদস্যরা আগুন নেভানোর পর সেখানকার অনেক আলামতই পানিতে পড়ে যায়।

ওই লঞ্চ থেকেই অঙ্গার হয়ে যাওয়া ৩৬ যাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। শতাধিক দগ্ধ হয়েছে এবং নিখোঁজের সঠিক কোনো তথ্য নেই। দ্বিতীয় তলার পেছনের দিকে গেলে দেখা যায়, হাড়, শরীরের বিভিন্ন পোড়া অংশ কয়লার মতো হয়ে পড়ে আছে।

লঞ্চটিতে সব ধরনের প্রাথমিক সুরক্ষা ব্যবস্থা লঙ্ঘন করা হয়েছে। কোনো নিরাপত্তা দরজা, পানি সঞ্চালনকারী যন্ত্র অথবা জরুরি নির্গমণ ব্যবস্থা নেই। দেখে মনে হচ্ছে কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের নিরাপত্তা পরিকল্পনা অনুসরণ করেনি। প্রতিটি তলায় প্রতিবন্ধকতা রয়েছে।

 

পৌর এলাকার ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হুমায়ুন কবীর সাগর জানান, লঞ্চ অগ্নিকাণ্ডের সময় ৪টি ট্রলার নিয়ে অগ্নিদগ্ধ যাত্রীদের উদ্ধারে চেষ্টা করি। লৌহ বাহনে আগুন লাগায় তা ছিলো চরম উত্তপ্ত, যার কাছেও যাওয়া কষ্টকর ছিলো। তারপরও আমার সঙ্গে ২৪ জন স্বেচ্ছাসেবক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালাই। তখন ছিলো নদীর ওপারে, পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দিয়াকুল গ্রামে। ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় তা সরিয়ে এনে আমার ওয়ার্ডে অবস্থিত টার্মিনালে রাখা হয়েছে। এখনও দক্ষিণ পূর্ব কোণের বাতাসে পোড়া গন্ধে এলাকাবাসীর নাভিশ্বাস উঠছে।

কাউন্সিলর সাগর আরও জানান, ইতোমধ্যে যাদের এজমা ও কাশি ছিলো তা বেড়ে গেছে। একদিকে যেমন শীত, অপরদিকে লঞ্চের পোড়া গন্ধ বাড়তি জ্বালা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

লঞ্চ থেকে যাত্রী উদ্ধারে স্বেচ্ছাসেবকের ভূমিকা পালনকারী রুশাদ ও শাকিউর রহমান শাকিল জানান, লঞ্চটিতে যখন আগুন জ্বলছিল আমরা তখন দ্রুত দৌড়ে এসে যথাসম্ভব সাহায্য সহায়তা করেছি। শীতের রাতে ভেজা অবস্থায় আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছি। তখন পোড়া গন্ধ, অসহ্য এ বিষয়গুলো মাথায়ই আসেনি। কিন্তু এখন কেমন যেন অনুভূত হচ্ছে। তারপর একদিনেরও বেশি সময় লঞ্চটি আমাদের গ্রামেই ছিলো। অগ্নিকাণ্ডের ধোয়া ও মানুষ পোড়া গন্ধ সবই আমরা সহ্য করেছি। কিন্তু এখন আমাদের গ্রামের শিশু ও বৃদ্ধদের শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হচ্ছে।

বাংলা৭১নিউজ/বিএফ

 

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com