বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক: মন ভাল নেই। কথাবার্তাও কম বলছেন লোকজনের সঙ্গে। নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতের লাগামও টেনে ধরেছেন তিনি। সম্প্রতি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের একজন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি এমনটাই বলছিলেন।
আওয়ামী লীগের আসন্ন জাতীয় সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক পদে তিনি প্রার্থী হচ্ছেন, এমনটা আলোচনায় ছিল। কিন্তু শেষে নিজেই জানিয়ে দিলেন তিনি সম্মেলনে কোনো পদেই প্রার্থী নন। ‘আমি বিব্রত বোধ করি যখন দেখি পাশাপাশি কয়েকজনের ছবি প্রকাশ হয়েছে যেখানে আমার ছবি রয়েছে।’ বললেন, ‘দলীয় সম্মেলনে এভাবে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়ে না দিতে সাংবাদিক ভাইদের প্রতি অনুরোধ রইল।’
তার ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানায়, মুখে তার প্রার্থীতার কথা ‘নাকচ’ করে দিলেও মনে মনে শুরুতে তিনি প্রত্যাশী ছিলেন। ঘনিষ্ঠদেরও একাধিকবার বলেছেন সে কথা। কিন্তু দলের হাইকমান্ডের কোনো সবুজ সংকেত মেলেনি। তাই সন্তর্পণে দমন করেছেন নিজের মনের ইচ্ছে।
আর এ কারণেই মন ভাল নেই তার। তার অনুসারী-অনুগামীদের অবস্থাও একই। তারাও আশায় ছিলেন তাদের নেতা দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসছেন। তবে শেষতক তার ভাগ্যে সিঁকে ছিড়ছে না এটা প্রায় চূড়ান্ত।
আগামী ২২ ও ২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন হওয়ার কথা। এ নিয়ে পুরোদমে চলছে প্রস্তুতি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের কেন্দ্রীয় একজন নেতা জানান, এবারও দলের সাধারণ সম্পাদক পদে জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামই থাকছেন, এমনটা প্রায় চূড়ান্ত। দুঃসময়ে দলে তার অবদান ও নেতাকর্মীদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতায় তিনি এগিয়ে আছেন।
অপরদিকে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে দলে আছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। মন্ত্রী হওয়ার পর তিনি মিডিয়ার ক্যামেরার সামনে বেশ ভালভাবেই দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছেন। অথচ ফলাফল ওই অর্থে আশানরূপ নয়।
সরকারের দু-একজন মন্ত্রীও বিভিন্ন সময় তার ‘অতিকথনের’ সমালোচনা করেছেন। দলের নেতাকর্মীদের মধ্যেও এ বিরূপ প্রতিক্রিয়া রয়েছে। যে কারণে সাধারণ সম্পাদক পদে তার প্রার্থী হওয়া অনেকটা কঠিনই হয়েছে বটে।
২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর শেখ হাসিনাসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের বন্দী হওয়ার প্রেক্ষাপটে দলে সাধারণ সম্পাদকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের ভার আসে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহকর্মী জাতীয় চার নেতার অন্যতম সৈয়দ নজরুলের ছেলে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের উপর। ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ওবায়দুল কাদেরের নাম তার আগে আলোচিত হলেও শেষ পর্যন্ত হয়নি। অবশ্য ওবায়দুল কাদের এখন বলছেন, তার কোনো ‘উচ্চাকাঙ্ক্ষা নেই’।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, এর আগে ২০০২ সালে আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের সময় ‘নেত্রীর নির্দেশে’ সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থিতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ‘জলিল ভাই যখন সেক্রেটারি ছিলেন, সম্মেলনের আগের দিন জলিল ভাই তখন হাসপাতালে, নেত্রী আমাকে বললেন হাসপাতালে গিয়ে জলিল ভাইকে বল তুমি ক্যান্ডিডেট নও। এরপর আর কখনো আওয়ামী লীগের কোনো পদের জন্য আমার প্রার্থিতা ছিল না, মন্ত্রী হওয়ার জন্য কোনো লবিং ছিল না; আমি করিনি, কারণ আমার ধাতে নেই।’
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচবি