পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে (ইউপি) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও স্বতন্ত্র (বিদ্রোহী) চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ, গুলিবর্ষণ, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত ১২ জনকে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হাসপাতালে ভর্তি আহতরা হলেন- মো. ফারুক, মো. হাসান, মো. শাহাবুদ্দিন, মো. নাহিদ, মো. জামাল, মো. বেলায়েত হোসেন, মো. জামাল, মো. রাকিব, খায়রুল ইসলাম তুহিন, মো. জাবেদ, মো. আজাদ।
দেড় ঘণ্টাব্যাপী চলমান এ সংঘর্ষে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় নির্বাচনী কার্যলয় ও বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ৯টার দিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. জসিম উদ্দিন ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম রাকিবের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় ইউনিয়নের রতনপুর ও শান্তিরহাট বাজারে ব্যাপক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন দুই প্রার্থী।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগকালে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিন ও স্বতন্ত্র (বিদ্রোহী) প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম রাকিবের কয়েকজন সমর্থকদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও মারামারির ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরবর্তীতে দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করা হয় উভয় গ্রুপের অন্তত ৩০ জনকে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত ১২ জনকে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলাকালে নৌকা প্রতীকের ৩টি নির্বাচনী অফিসসহ দুই প্রার্থীর ৪টি নির্বাচনী অফিস ও সমর্থকদের ঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ ও র্যাব গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পর উত্তেজিত সমর্থকরা দু’ভাগে অবস্থান নেয়ায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে তার একটি উঠান বৈঠক চলাকালে খবর পান তার ৩টি নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। এসময় কুপিয়ে ও পিটিয়ে তার ১০-১২ জন কর্মীকে আহত করা হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম বিএনপি জামায়াতের বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে নির্বাচন বানচাল করার জন্য এ হামলা চালিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
অপরদিকে, পাল্টা অভিযোগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম রাকিব বলেন, নির্বাচন অফিস থেকে দেয়া ইভিএম-এ ভোট দেয়ার কিছু ভিডিওচিত্র প্রজেক্টরের মাধ্যমে শান্তিরহাট বাজারের কাছে একটি জায়গায় তার সমর্থকদের দেখানোর সময় নৌকার সমর্থকরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
হামলায় তার ১৪-১৫ জন সমর্থক হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত হয়েছে ৩ জন। পরে আহতদের হাসপাতালে নেয়ার সময় অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামিয়ে মারধর করেছে নৌকার সমর্থকরা। নৌকার নির্বাচনী অফিস ভাঙচুরের কথা অস্বীকার করেন তিনি।
সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী সুজা বলেন, এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। উভয়পক্ষ রাস্তায় অবস্থান করে শ্লোগান দিতে ছিল। আমরা তাদেকে সরিয়ে দিয়েছি। এরপরও বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পঞ্চম ধাপে আগামী ৫ জানুয়ারি এ ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ ইউনিয়নে মোট ৮ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী থাকলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে জসিম উদ্দিন ও সিরাজুল ইসলামের মধ্যে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএম